ফটো এডিট কীভাবে করে? জেনে নিন কিছু কার্যকরী ফটো এডিটিং টিপস

February 1, 2023 ...

আমাদের জীবনের সুন্দরতম মুহূর্তগুলোকে ফ্রেমবন্দী করে ধরে রাখার জন্য ফটোগ্রাফির চর্চা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জীবনের সুখ-দুঃখের মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখা এসব ছবিকে আরও আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্তভাবে উপস্থাপন করা যায় ফটো এডিটিং এর মাধ্যমে। এই ব্লগটি থেকে আমরা ফটো এডিটিং এর আদ্যোপান্ত যেমন ফটো এডিট কেন করবেন, কিভাবে ফটো এডিট করতে হয়, ছবি এডিট করার সফটওয়্যার, ফটো এডিট করার ভালো এপ্স কোনটি, ছবি এডিট করার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো। তাই দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

ফটো এডিট কেন করবেন? ৭টি কারণ

ফটো এডিটিং – এর মাধ্যমে নিষ্প্রাণ একটি ছবিতেও প্রাণের সঞ্চার ঘটানো  সম্ভব। একবিংশ শতাব্দীর এ সময়ে একটি ছবিকে প্রাণবন্ত করতে ফটো এডিটিং – এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নিচে ফটো এডিট করার বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হলো:

(i) ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ

আপনার সাথে কি এমন কখনো হয়েছে যে সুন্দর একটি ছবি তোলার পর ছবিটির ব্যাকগ্রাউন্ড আপনি যেরকম চাচ্ছিলেন ঠিক সেরকম নয়? এরকম পরিস্থিতিতে আপনাকে সহজ সমাধান দিতে আছে বিভিন্ন ছবি এডিটিং সফটওয়্যারের ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভাল টুল। AI-সম্বলিত এসব টুল ব্যবহার করে আপনি নিখুঁতভাবে যেকোনো ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে বিভিন্ন অবজেক্ট রিমুভ থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ ব্যাকগ্রাউন্ডটিই রিমুভ করতে পারবেন।

(ii) ফটো ক্রপিং ও রিসাইজিং

ফটো এডিট
Source: lifewire.com

অনেক সময় আমাদের ছবিতে মুল বিষয়বস্তু যেটা আমরা দেখাতে চাচ্ছি সেটা ফোকাসে না থেকে আশেপাশের বিভিন্ন বিষয়বস্তু আপনার দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে নিতে পারে। তাই ফ্রেমে আমরা কতটুকু দেখাবো আর কতটুকু দেখাবো না এই বিষয়টি নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আকারের ছবি ভালো পারফর্ম করে। তাই ছবিকে সঠিক শেইপে আনার জন্যেও ক্রপিং ও রিসাইজিং গুরুত্বপূর্ণ। এখানেই আপনাকে সাহায্য করতে পারে ফটো এডিটিং সফটওয়্যারের ক্রপিং ও রিসাইজিং টুল।

(iii) ফটো রিটাচিং

এডিট
Source: dorjibari.com.bd

আপনি ভালোভাবে খেয়াল করলে লক্ষ্য করবেন যে বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইটে আমরা যেসব ছবি দেখি সেগুলো খুবই চকচকে হয়। এটা ফটো রিটাচিং – এর মাধ্যমেই করা হয়। ফটো রিটাচিং এর মাধ্যমে বিভিন রকম দাগ, অপ্রত্যাশিত ছায়া ইত্যাদি মুছে ফেলে সাধারণ একটি ছবিকে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করা যায়। ফটো রিটাচিং এর মাধ্যমে আকর্ষণীয় একটি ছবি তৈরি করে সহজেই গ্রাহকদের মনোযোগ আকর্ষণ করা সম্ভব। তাই যারা নতুন ফটোগ্রাফি শিখছেন তাদের জন্য এই পয়েন্টটিতে গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরী।

(iv) কালার ঠিক করা

চমৎকার একটি ছবি তোলার ক্ষেত্রে সঠিক কালার বা রঙ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি ছবি ফ্রেমবন্দী করার পর এমন হতেই পারে যে ছবিটিতে আলোকসজ্জা ঠিক নেই বা সহজ কথায় ছবিটি বেশি সাদা কিংবা বেশি অন্ধকার দেখাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ফটো এডিটিং সফটওয়্যারের কালার ঠিক করার টুল ব্যবহার করে আপনি ছবিটিতে একটি চমৎকার আলোকসজ্জা ফুটিয়ে তুলতে পারেন।

(v) অপ্রত্যাশিত অবজেক্ট মুছে ফেলা

ছবি এডিটিং সফটওয়্যার
Source: learn.corel.com

উপরের ছবিটি লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন যে প্রথম ছবিটিতে আমাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছাড়াও অপ্রত্যাশিত কিছু অবজেক্ট থাকায় আমাদের মনোযোগ সম্পূর্ণরূপে প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে থাকছে না। কিন্তু অপ্রত্যাশিত অবজেক্টগুলো রিমুভ করার পর আমাদের সম্পূর্ণ মনোযোগ প্রধান লক্ষ্যবস্তুর দিকেই থাকছে। এভাবে আপনার তোলা ছবি থেকেও অপ্রত্যাশিত অবজেক্ট রিমুভ করে আপনি আপনার দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেন।

(vi) বাস্তবসম্মত ছায়া

ফটো এডিটিং সফটওয়্যার
Source: freepik.com

বাস্তবসম্মত ছায়া একটি ছবিকে জীবন্ত করে তোলে। ফটো এডিট করা ছাড়া শুধুমাত্র ক্যামেরার মাধ্যমে বিভিন্ন অবজেক্টের ছায়াসহ ক্যাপচার করা প্রায় অসম্ভব। পেশাদার ছবি তোলার ক্ষেত্রে অবজেক্টের ছায়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আর এই কাজটিও আপনি করতে পারবেন ফটো এডিট করার মাধ্যমে।

Adobe Illustrator Course

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর এর বেসিক থেকে ইন্টারমিডিয়েট লেভেলর খুটিনাটি সবকিছু।
  • অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর ব্যবহার করে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন গ্রাফিক কন্টেন্ট সহজেই তৈরি করার পদ্ধতি।
  • গ্রাফিক ডিজাইনিং এর ব্যবহারিক দক্ষতা আয়ত্ত করার বিভিন্ন কৌশল।
  •  

    (vii) ছবি ম্যানিপুলেশন

    ছবি এডিট করার নিয়ম
    Source: pixabay.com

    একটি সমীক্ষা মতে, ৬৩% গ্রাহক উদ্ভাবনী ছবি পছন্দ করেন। বিভিন্ন ছবি এডিটিং সফটওয়্যারের ফটো এডিটিং টুল ব্যবহার করে আপনি আপনার সৃজনশীলতা ফুটিয়ে তুলতে পারেন এবং চমৎকার একটি ম্যানিপুলেটেড ছবি বানিয়ে ফেলতে পারেন। ম্যানিপুলেটেড ছবি এখন ব্যাপকভাবে সমাদৃত হচ্ছে।

    কিভাবে ফটো এডিট করতে হয় ?

    স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করে ফটো এডিটিং – এর কাজ খুব সহজেই করা যায়। ফটো এডিট করার জন্য বর্তমানে বেশ কিছু জনপ্রিয় মোবাইল অ্যাপ এবং কম্পিউটার ফটো এডিটিং সফটওয়্যার আছে। যদিও ফটো এডিট করার ক্ষেত্রে স্মার্টফোন অ্যাপের থেকে কম্পিউটার সফটওয়্যার বেশি উপযোগী যেহেতু কম্পিউটার সফটওয়্যারের বেশি ফাংশন রয়েছে। নিচে ফটো এডিট করার জন্য জনপ্রিয় কিছু মোবাইল অ্যাপস এবং কম্পিউটার সফটওয়্যারের নাম ও ডাউনলোড লিংক দেওয়া হলো:

    মোবাইল অ্যাপ কম্পিউটার সফটওয়্যার
    অ্যাপ নাম ডাউনলোড লিংক সফটওয়্যার নাম ডাউনলোড লিংক
    Snapseed Click here to download Adobe Photoshop Express Editor Click here to download
    Afterlight Click here to download Canva Click here to download
    Adobe Lightroom Mobile Click here to download Lightroom Click here to download
    VSCO: Photo & Video Editor Click here to download DxO PhotoLab Click here to download
    TouchRetouch Click here to download On1 Raw Click here to download
    Picsart Click here to download ACDSee Ultimate Click here to download
    PixelLab Click here to download PhotoDirector Click here to download
    Prisma Photo Editor Click here to download PaintShop Click here to download
    Instagram Click here to download Luminar Click here to download
    Foodie – Camera for life Click here to download Fotor Click here to download
    Lens Distortions Click here to download Fotophire Editing Toolkit Click here to download
    Superimpose X Click here to download InPixio Click here to download
    Hypocam Click here to download GIMP Click here to download
    Pixlr – Free Photo Editor Click here to download Autodesk Pixlr Click here to download
    Photoshop Camera Click here to download Photopea Click here to download

    মোবাইলে ফটো এডিট করার ভালো এপ্স কোনটি? ৫টি সেরা অ্যাপ

    মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তুলে মোবাইল ফোনেই এডিট করার চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলেছে। আপনার মনে নিশ্চয়ই এই প্রশ্নটি কখনো না কখনো এসেছে যে ফটো এডিট করার ভালো এপ্স কোনটি? চলুন দেখে দেওয়া যাক মোবাইলে ফটো এডিট করার জন্য সেরা ৫টি অ্যাপ:

    (i) Snapseed

    ছবি এডিট
    Source: Google Play Store

    মোবাইল ফোনে ছবি এডিট করার জন্য বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর মধ্যে Snapseed – এর অবস্থান শীর্ষে। Snapseed হলো Google – এর ফ্রী এবং পেশাদার একটি ফটো এডিটর অ্যাপ। অ্যাপটি এতটাই User Friendly যে একজন সাধারণ মানুষও অ্যাপটি ব্যবহার করে যেকোনো ফটোকে এডিট করতে পারবে। আবার Advanced কিছু Tool যেমন Find Healing, Brush, HDR, Portrait Tool ইত্যাদি ব্যবহার করে প্রফেশনাল এডিটিং করার সুযোগ তো থাকছেই। Snapseed এর মাধ্যমে ছবি এডিট করার পর ছবির কোয়ালিটি Drop না করাও এর ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ।

    (ii) Afterlight

    ফটো এডিটিং সফটওয়্যার
    Source: Google Play Store

    অ্যাপটির মজার বিষয় হচ্ছে ফটো কিংবা এডিটিং সম্পর্কে কোনো জ্ঞান না থাকলেও অ্যাপটির Preset Filters ব্যবহার করে একটি ছবির সজ্জা ঠিকঠাক করা যায়। এছাড়া Hue, Saturation, Color ইত্যাদি প্রয়োজনমতো বাড়িয়ে কিংবা কমিয়ে ছবি এডিট করার সুযোগ তো থাকছেই। অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে ফ্রীতে ডাউনলোড করা যায়।

    (iii) Adobe Lightroom Mobile

    ছবি এডিটিং সফটওয়্যার
    Source: Google Play Store

    জনপ্রিয় কোম্পানি Adobe – এর Adobe Lightroom অ্যাপটি মোবাইল ফোনে ছবি এডিট করার জন্য খুবই কার্যকরী। এডোবির বেশিরভাগ প্রোডাক্টই পেইড হলেও, এই অ্যাপটি ফ্রী। যদিও প্রিমিয়াম মাসিক সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে Advanced কিছু Tool এর একসেস পাওয়া যায়। তবে ফ্রী ভার্সন ব্যবহার করেই আপনি ফটো Retouch, Crop, Filter করার মতো কাজগুলো খুব সহজেই করতে পারবেন। প্রিমিয়াম ভার্সনে পাবেন Geometry, Healing, Masking এর মতো এডভান্সড টুলগুলো।

    (iv) VSCO

    ফটো এডিট
    Source: Google Play Store

    এই অ্যাপটি ব্যবহার করে আপনি Exposure, Contrast, Temperature ইত্যাদি টুলের মাধ্যমে আপনার তোলার ছবির প্রয়োজনীয় সম্পাদনা সম্পন্ন করতে পারবেন। VSCO অ্যাপটি ফ্রী কিন্তু মাসিক সাবস্ক্রিপশন কিনলে আপনি Advanced কিছু ফিচারের সাথে অ্যাপটি ব্যবহার করে ভিডিও এডিট করার সুযোগ পাবেন।


    Motion Graphics vs. Animationআরো পড়ুন: Motion Graphics vs. Animation: তফাতগুলো জেনে নেই


    (v) TouchRetouch

    এডিট
    Source: Google Play Store

    আপনার তোলা ছবি থেকে অবজেক্ট মুছে ফেলার জন্য যা কিছু দরকার তার সবকিছু নিয়েই হাজির হয়েছে TouchRetouch মোবাইল অ্যাপটি। দু-একটি ট্যাপের মাধ্যমেই আপনি আপনার তোলা ছবি থেকে অপ্রত্যাশিত অবজেক্ট মুছে ফেলতে পারবেন, এটা এতটাই সহজ। এই অ্যাপটির Auto Tool-গুলো ব্যবহার করে আপনি মুহূর্তেই যেকোনো ছবিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন। অন্যান্য ফটো এডিটিং মোবাইল অ্যাপের তুলনায় এই অ্যাপটিতে আপনি বেশি Feature পাবেন।

    কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য ৫টি সেরা ছবি এডিট করার সফটওয়্যার

    কম্পিউটারের মাধ্যমে মোবাইলের থেকে তুলনামূলক নিখুঁত ও এডভান্সড লেভেলের ফটো এডিটিং করা যায়। কম্পিউটারে ছবি এডিট করার সফটওয়্যার হিসেবে বেশ কিছু সফটওয়্যার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। চলুন দেখা নেওয়া যাক কম্পিউটারে ফটো এডিট করার জন্য জনপ্রিয় ৫টি ফটো এডিটিং সফটওয়্যার-

    (i) Adobe Photoshop

    কিভাবে ফটো এডিট করতে হয়
    Source: unsplash.com

    ছবি এডিট করার জন্য বর্তমানে সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে Adobe Photoshop অ্যাপ্লিকেশনটি। সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে শুধু ছবি এডিট করাই যায় না বরং ছবিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করা যায়। ছবি এডিট করার জনয় সাধারণ ইউজার থেকে শুরু করে ফটোগ্রাফার, গ্রাফিক ডিজাইনার প্রায় সবারই প্রথম পছন্দের সফটওয়্যার হলো এডোবি কোম্পানির এই সফটওয়্যারটি। Adobe Photoshop ব্যবহার করে প্রফেশনাল ফটো এডিটিং করা যায়।

    Graphic Designing with Photoshop

    কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • Adobe Photoshop- এর বিভিন্ন টুল ও ফিচার ব্যবহার করে লোগো ডিজাইন, অ্যাড ডিজাইন, ফটো এডিট সহ বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক ডিজাইন করা
  • গ্রাফিক ডিজাইন করে ফ্রিল্যান্সিং অথবা প্রজেক্ট-বেসড কাজের মাধ্যমে উপার্জন করার কৌশল
  •  

    (ii) Canva

    ছবি এডিট করার সফটওয়্যার
    Source: Canva

    ছবি এডিটিং সফটওয়্যার হিসেবে Canva-র জনপ্রিয়তা দিনদিন বাড়ছে। ফ্রীতে অনেক প্রফেশনাল টেমপ্লেটের এক্সেস এই জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবার অন্যতম কারণ। এসব টেমপ্লেট ব্যবহার করে যেমন সহজেই নিজের চাহিদা মতো ডিজাইন বানিয়ে ফেলা যায়, ঠিক একইভাবে ক্যানভার User Friendly টুলগুলো ব্যবহার করে নিজের তোলা ছবিকে প্রয়োজনমতো সম্পাদনা করা যায়।

    (iii) Lightroom

    উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য Lightroom অত্যন্ত কার্যকরী একটি ছবি এডিটিং সফটওয়্যার। Lightroom ব্যবহার করা একসাথে অনেক ছবি মার্জ করা থেকে শুরু করে ফটো ম্যানিপুলেশন সবই দারুণভাবে করা সম্ভব। সফটওয়্যারটিতে অনেকগুলো লেআউট আছে এবং এগুলো ব্যবহার করে উচ্চ রেজুলেশনসম্পন্ন ছবি এক্সপোর্ট করা সম্ভব।

    (iv) DxO PhotoLab

    এই সফটওয়্যারটি অতুলনীয় পিকচার কোয়ালিটি প্রোভাইড করে এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে। সফটওয়্যারটিতে অনেকগুলো টুলের সমাহার রয়েছে এবং যেকোনো ছবিকে তৎক্ষণাৎ আকর্ষণীয় করে তুলতে এই সফটওয়্যারটির জুড়ি নেই। তবে সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে কমপক্ষে ৮ জিবি র‍্যামসম্পন্ন কম্পিউটার ব্যবহার করতে হবে।

    (v) On1 Raw

    একদম নতুন ইউজার থেকে শুরু করে প্রফেশনাল ইউজার সবার জন্যই উপযোগী একটি ছবি এডিটিং সফটওয়্যার হলো On1 Raw. সফটওয়্যারটির AI-সম্পন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেকোনো ছবির কোয়ালিটি অনেক গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। সফটওয়্যারটি দারুণভাবে দালানকোঠা, গাছ, পাখি, পাহাড়, আকাশ ইত্যাদি চিহ্নিত করতে পারে এবং এগুলোর কোয়ালিটি বৃদ্ধি করতে পারে। এই ফটো এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করতে কমপক্ষে ৮ জিবি র‍্যামসম্পন্ন কম্পিউটার ব্যবহার করতে হবে।

    ৬টি সেরা ফটো এডিটিং টিপস

    কোথায় ফটো এডিট করবেন সেটা সম্পর্কে তো জানা গেল। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কিভাবে ফটো এডিট করতে হয়, ছবি এডিট করার নিয়ম এগুলো সম্পর্কে তো জানি না। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখলে কার্যকরীভাবে ফটো এডিট করা সম্ভব-

    (i) Cropping & Cleaning Up Images

    যেকোনো ছবি থেকে অপ্রাসঙ্গিক অবজেক্টগুলোকে সরিয়ে ফেললে মূল বিষয়বস্তুকে আরও কার্যকরী উপায়ে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। যেহেতু আমাদের ক্যানভাসের সাইজ সীমাবদ্ধ, তাই প্রতি ইঞ্চি জায়গায় সঠিক বিষয়বস্তুকে উপস্থাপন করার মাধ্যমে যেকোনো ছবির গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।

    কিভাবে ফটো এডিট করতে হয়
    Source: Recreational Equipment, Inc
    ছবি এডিট করার সফটওয়্যার
    Source: Recreational Equipment, Inc

    ছবিকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে আরেকটি কার্যকরী উপায় হচ্ছে অপ্রত্যাশিত দাগ মুছে ফেলা। বর্তমানে প্রায় সব ধরনের ফটো এডিটিং সফটওয়্যারে Clone Stamping/Spot Healing নামে দাগ মুছে ফেলার টুল রয়েছে।

    (ii) Adjusting White Balance

    ফটো এডিট করার ভালো এপ্স কোনটি
    Source: Recreational Equipment, Inc

    White Balance বলতে Exposure Level-কে নয়, বরং Color Level-কে বোঝায়। যদি কোনো ছবির কালার আপনার কাছে মনে যে ছবিটির সাথে মানানসই নয় তাহলে আপনি White Balnce কমিয়ে কিংবা বাড়িয়ে এটা ঠিক করতে পারেন। JPG/JPEG ফাইল যেহেতু RAW ফাইলের তুলনায় কম ডিটেইলস ক্যাপচার করে, তাই JPG/JPEG ফাইলের White Balance এডজাস্ট করে তুলনামূলক কম ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

    (iii) Adjusting Exposure & Contrast

    Exposure হচ্ছে ছবির আলোকসজ্জা ঠিক করার প্রক্রিয়া। Exposure বাড়িয়ে ছবিটিকে উজ্জ্বল এবং কমিয়ে ছবিটিকে তুলনামূলক অন্ধকার করা যায়। ছবির বিষয়বস্তুর সাথে মানানসই আলোকসজ্জা রাখার জন্য Exposure ব্যবহার করা হয়।

    ফটো এডিটিং সফটওয়্যার
    Source: Recreational Equipment, Inc

    Contrast হলো কোনো ছবির আলোকসজ্জার একটি রেঞ্জ। Contrast বাড়াতে থাকলে ছবি অন্ধকার হতে থাকে এবং কমাতে থাকলে উজ্জ্বল/সাদা হতে থাকে।

    (iv) Adjusting Saturation

    ছবি এডিট
    Source: Recreational Equipment, Inc

    White Balance ঠিক করার পর, ছবির রঙকে আরও পরিশুদ্ধ (বাস্তবসম্মত ও উজ্জ্বল) করা যায় Saturation ঠিক করার মাধ্যমে। Saturation বাড়ানোর মাধ্যমে রঙের গাঢ়ত্ব বাড়ানো হয়।


    আরও পড়ুন: জেনে নিন মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ১০০+ কিবোর্ড শর্টকাট!


     

    (v) Adjusting Sharpness

    ছবি এডিটিং সফটওয়্যার
    Source: Recreational Equipment, Inc

    শার্প একটি ছবি সাধারণ ছবির তুলনায় অধিক আকর্ষণীয় ও পরিশুদ্ধ দেখায়। শার্প করার মাধ্যমে ছবির ডিটেইলস আরও বৃদ্ধি করা যায়। বেশ কিছু ফটো এডিটিং অ্যাপ্লিকেশনে ছবি শার্প করার এই টুলটি থাকে। শুরুতে শার্পনেস ৫০ সেট করে, প্রয়োজনমতো নাম্বারটি বাড়িয়ে কিংবা কমিয়ে যেকোনো ছবিকে পারফেক্ট একটু লুক দেওয়া যায়।

    (vi) Finishing Touch

    ছবি এডিটিং শেষ করার পর একটু বিরতি নিয়ে আবার দেখুন আপনার কাছে সবকিছু ঠিকঠাক লাগছে কি না। যদি আরও কোনো কিছু এডিট করার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে প্রয়োজনমতো আবার এডিট করে ছবিটিকে এক্সপোর্ট করতে হবে। যেহেতু RAW ফাইলের সাইজ অনেক বড় হয়, তাই এক্সপোর্ট করার ক্ষেত্রে JPG/PNG হিসেবে ছবিকে সেইভ করা বুদ্ধিমানের কাজ, এতে ছবিটি ইমেইল কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে শেয়ার করা সহজতর হবে।

    ফটো এডিটিং শিখবেন কীভাবে?

    আশা করি ব্লগটি থেকে ফটো এডিটিং সম্পর্কে আপনারা পরিষ্কার একটা ধারণা পেয়েছেন। ফটোগ্রাফি আমরা সবাই কমবেশি করে থাকি এবং আমাদের তোলা ছবিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ফটো এডিটিং হতে পারে চমৎকার একটি সমাধান।

     

    Graphic Design করে Freelancing

    এই কোর্সটি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে?

  • গ্রাফিক ডিজাইনের প্রয়োজনীয় টুল, থিউরি, প্রোজেক্ট ফাইল ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন।
  • প্র্যাক্টিসের জন্য একটি ফ্রি ডিজাউন কন্টেন্ট লাইব্রেরি।
  • দেশি-বিদেশি চাকরি কিংবা ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করতে পারবেন।
  • AI ব্যবহার করে আইডিয়া বের করে ডিজাইন করতে পারা।
  •  

    আপনারা ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ফটো এডিটিং অ্যাপ এবং সফটওয়্যার সম্পর্কে জেনেছেন এবং নিশ্চয়ই এটাও বুঝতে পেরেছেন, ফটো এডিট করার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী সফটওয়্যার হলো Adobe Photoshop এবং এই কারণেই প্রতিনিয়ত বহু মানুষ এই সফটওয়্যারটির ব্যবহারবিধি শেখার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

    Adobe Photoshop শেখার জন্য অনলাইনে অনেক রিসোর্সেস আছে। Adobe Photshop-এর টুল সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্লগ থেকে শুরু করে  ইউটিউব ভিডিও সবই পেয়ে যাবেন একদম ফ্রীতে। তবে এই প্রক্রিয়া একটু সময়সাপেক্ষ এবং ভালো কোয়ালিটিসম্পন্ন কন্টেন্টগুলো ইংরেজিতে তৈরি। এই সমস্যার কথা চিন্তা করে 10 Minute School নিয়ে এসেছে ‘Adobe Photoshop’ এর সবকিছু নিয়ে বাংলা ভাষায় তৈরি কোয়ালিটিসম্পন্ন একটি কোর্স। কোর্সটিতে Adobe Photoshop-এর বেসিক থেকে শুর করে এডভান্সড সব ফিচার একদম হাতেকলমে শেখানো হয়েছে। Adobe Photoshop শিখে ছবির মাধ্যমে বিষয়বস্তু উপস্থানের দক্ষতাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করতে এখানে ক্লিক করুন


    আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:


    আপনার কমেন্ট লিখুন