ক্লাস ফোরে পড়ার সময় প্রথম সৃজনশীল ব্যাপারটার নাম শুনি। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে নতুন এক পদ্ধতি প্রয়োগের প্রস্তাব রাখা হয়, যা-ই মূলত এই সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি। সেই শুরুর দিকে সৃজনশীল বলতে বুঝতাম, একটি প্রশ্নের ৪টি অংশ থাকবে, প্রতি নম্বরের জন্য একটি লাইন লিখতে হবে, এক নাম্বারের জন্য এক লাইন কিংবা চার নাম্বারের জন্য চার লাইন। ক্লাস সিক্সে উঠার পর জীবনে প্রথম পূর্ণরূপ সৃজনশীল পদ্ধতির সাথে পরিচিত হই। সত্যি বলতে, খুবই জঘন্য ছিল সেই অভিজ্ঞতা। জীবনে প্রথমবার সেবার সময়ের অভাবে প্রায় ৮ নম্বর খালি রেখে আসতে হয়েছিলো। সেইদিনই মনে হয়েছিলো “এই সৃজনশীল ব্যাপারটাকে মোটেও হালকা করে নেয়া যাবেনা।”
তোমরা যারা স্কুল-কলেজে পড়াশুনা করছো, তোমরাই ভালো জানো সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতির এ-টু-জেড। আজকাল তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় ৭টা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারা-না পারা নিয়ে হাজারো পোষ্ট বের হচ্ছে। এটা সত্য যে, পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা কলম চালিয়ে যাওয়া বেশ কষ্টকর। কিন্তু অন্য আরেকটি সত্য হচ্ছে, একটু কৌশল অবলম্বন করলেই কিন্তু এই কষ্ট অনেকটাই লাঘব হয়ে যাবে। আর তার জন্য জানতে হবে সঠিক নিয়মে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর করার নিয়ম।
সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর, উদ্দীপক পড়ার নিয়ম ও উদ্দীপকের সঠিক ব্যবহার, বিভিন্ন প্যাটার্ন এর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর, এগুলোই মূলত আজকের ব্লগের আলোচ্য বিষয়। চলো, জেনে আসা যাক:
সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর -এর কাঠামো
প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্নের ৪টি স্তর থাকে। স্তরগুলো হচ্ছে:
- জ্ঞানমূলক,
- অনুধাবনমূলক,
- প্রয়োগমূলক,
- উচ্চতর দক্ষতামূলক।
সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতের সৃজনশীল পদ্ধতিতে আবার ৪টির স্থলে ৩টি প্রশ্নস্তর থাকে: অনুধাবনমূলক, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতামূলক। প্রতিটি প্রশ্নের সাথেই একটি অনুচ্ছেদ দেয়া থাকে। বাংলা, ইসলাম শিক্ষা কিংবা বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ের মত বিষয়গুলোতে সাধারণত অনুচ্ছেদের সাথে তুলনাস্বরূপ বিভিন্ন প্রশ্ন দেয়া থাকে। কিন্তু গণিতের ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম অনুযায়ী বেশীরভাগ সময়ই গণিতে অনুচ্ছেদের তথ্য ব্যবহার করে প্রশ্নের উত্তর করতে হয়।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার কিছু নিয়মাবলি রয়েছে। কেবল পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখলেই নম্বর পাওয়া যায়, এমনটা ভেবে থাকলে তা নিঃসন্দেহে ভুল। ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করে লেখা শেষ করার পরও হয়তো দেখা যাবে, পাশের সারির ছেলেটা তোমার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি নম্বর পেয়েছে। তবে এমনটা হওয়ার কারণ কী? কারণটা হচ্ছে, সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর এর সঠিক নিয়মটা আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম -গুলোর মধ্যে রয়েছে খাতার সৌন্দর্য রক্ষা, বাক্যগঠনে তত্ত্বভিত্তিক তথ্য উপাস্থাপন, প্রশ্নোত্তরে স্বচ্ছতা থাকা, সৃজনশীলের ক্ষেত্রে উদ্দীপক ও পাঠ্য বইয়ের সমন্বয় সাধন ইত্যাদি।
সৃজনশীল প্রশ্নের ধরন |
মান |
কয়টি প্যারায় উত্তর দেওয়া উচিত? |
কতক্ষণ সময় দেওয়া উচিত? |
জ্ঞানমূলক |
১ |
১ (১-২ লাইন) |
১ মিনিট |
অনুধাবনমূলক |
২ |
২ |
৩-৪ মিনিট |
জ্ঞানমূলক |
৩ |
৩ |
৬-৭ মিনিট |
প্রয়োগমূলক |
৪ |
৩-৪ |
৮-৯ মিনিট |
মোট |
১০ |
– |
১৮-২১ মিনিট |
প্রশ্নের ৪টি অংশের জন্যও ভিন্ন ভিন্ন সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার নিয়ম রয়েছে। এসব নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে যেন সম্পূর্ণ সৃজনশীল লিখতে ২০-২২ মিনিটের বেশি না লাগে। ২০ মিনিটের মধ্যেই এক একটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখে ফেললেই দেখবে যে পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্পূর্ণ লেখা সম্পন্ন হয়ে যাবে। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার নিয়ম ও সময়বন্টনের বিষয়গুলো জেনে আসি, চলো:
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার নিয়ম: জ্ঞানমূলক প্রশ্ন
এই অংশের প্রশ্নের উত্তর সবচেয়ে ছোট হবে। আরো নির্দিষ্ট করে বললে, এই অংশের প্রশ্নের উত্তর এক লাইনের মধ্যেই শেষ করে দেয়া শ্রেয়। অনেকে জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর এক শব্দে লিখে থাকে। সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম অনুযায়ী এই পদ্ধতি ভুল না হলেও অনেক শিক্ষকই এক শব্দে উত্তর লিখতে বারণ করে থাকেন। জ্ঞানমূলক প্রশ্ন সাধারণত বই থেকেই আসে। এই অংশের প্রশ্নের সাথে উদ্দীপকের অনুচ্ছেদের মিল থাকেনা বলেই ধরে নেয়া যায়।
সময়: ১ মিনিট
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার নিয়ম: অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
এই অংশে কখনও কখনও বই থেকে প্রশ্ন দেয়, আবার কখনও কখনও উদ্দীপক হতেও প্রশ্ন আসতে পারে। সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম অনুযায়ী অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর করতে হবে দুটি অংশে, কেননা এই প্রশ্নের নম্বর বণ্টনও হচ্ছে ২। উত্তরের ২টি অংশ প্যারা আকারে লিখতে হবে। প্যারার প্রথম অংশে প্রশ্নের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিছু জ্ঞানমূলক উত্তর দেয়া যেতে পারে। পরবর্তী অংশে প্রশ্নের মূল উত্তর কিছুটা গুছিয়ে লিখতে হবে।
প্রথম প্যারায় জ্ঞানের অংশ অল্প কথায় শেষ করেই দ্রুত দ্বিতীয় অংশে নজর দিতে হবে। ৬-৭ লাইনের মধ্যে পুরো প্রশ্নের উত্তর অনুধাবনের ধাঁচে লিখে শেষ করতে হবে। অনুধাবন প্রশ্নের উত্তরের সাইজ আধ পৃষ্ঠা হলে ভালো হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বেশি সুন্দর করে লিখতে গিয়ে যেনো অতিরিক্ত সময় খরচ না হয়।
সময়: ৩-৪ মিনিট
৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৫
ফুল সিলেবাস কোর্সে যা যা থাকছে:
সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম: প্রয়োগমূলক প্রশ্ন
প্রয়োগমূলক প্রশ্নোত্তর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই প্রশ্নের উত্তরের সাহায্যেই পুরো সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর -এর একটি ধারণা পাওয়া যায়। পুরো সৃজনশীল প্রশ্নকে যদি একটি মানবদেহের সাথে তুলনা করা হয়, তবে প্রয়োগমূলক প্রশ্নের ভূমিকা অনেকটা মূলদেহের মতো। জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনে সাধারণত বইয়ের জ্ঞানের মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়া হলেও প্রয়োগমূলক প্রশ্নের মাধ্যমেই উদ্দীপকের সাথে পাঠ্যবই ও তার সাথে প্রশ্নের একটা যোগসূত্র ঘটানো হয়।
সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম অনুযায়ী এই অংশে মূলত উদ্দীপকের কোনো অনুচ্ছেদের সাথে পাঠ্যবইয়ের কোনো অংশের পার্থক্য কিংবা সাদৃশ্য তুলে ধরতে বলা হয়। এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য নির্ধারিত নম্বর হচ্ছে ৩। সুতরাং এই প্রশ্ন ৩ প্যারায় দিলে সবচেয়ে ভালো হয়।
- প্রথম প্যারায় থাকবে যথারীতি কিছু জ্ঞানের সমাহার। এক্ষেত্রে প্রথম প্যারায় উদ্দীপকের অনুচ্ছেদের ছোট একটি সারমর্ম দেয়া যেতে পারে এবং একইসাথে অনুচ্ছেদের সাথে পাঠ্যবইয়ের গল্প-কবিতার সম্পর্কটাও খুব ছোট আকারে দেয়া যেতে পারে।
- দ্বিতীয় প্যারায় মূলভাব লিখতে হবে। এই অংশে কখনোই উদ্দীপকের বিষয়বস্তু সরাসরি তুলে আনা উচিত না, কারণ এই জিনিসটা প্রথম প্যারার মধ্যেই সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখিত রয়েছে। দ্বিতীয় প্যারায় একদম স্পষ্টভাবে প্রশ্নে যা চাওয়া হয়েছে সেইদিকে ফোকাস করতে হবে। ৭-৮ লাইনের মধ্যে উদ্দীপকের সাথে বইয়ের পঠিত বিষয়ের অংশের সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য তুলে ধরতে হবে।
- শেষ প্যারা হবে কিছুটা বাংলা রচনার উপসংহারের মত। এই অংশেই মূলত প্রয়োগের ব্যাপারটা চলে আসবে। এখানে উত্তরের পুরো অংশের একটা ছোট “প্রিভিউ” দিতে হবে এবং সাথে সাথে উদ্দীপকের সাথে গদ্যাংশ-পদ্যাংশের পার্থক্যটাও লিখতে হবে। প্রয়োগমূলক প্রশ্নের উত্তর সর্বোচ্চ দেড় পৃষ্ঠার মধ্যে সম্পন্ন করাটাই যুক্তিযুক্ত। এর বেশি অহেতুক কথাবার্তা লিখলে তা প্রচুর সময় নষ্ট করবে।
সময়: ৬-৭ মিনিট
আরো পড়ুন: এইচ এস সি রসায়ন দ্বিতীয় পত্র: শেষ মুহূর্তের টিপস
সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম: উচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্ন
বলে রাখা ভালো, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্নের উত্তরে সম্পূর্ণ নম্বর পাওয়া একটু কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। এই প্রশ্নের উত্তরের আকার সবচেয়ে বড় হয় বলে নিরীক্ষকেরা অনেক সময় নিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর পরখ করে দেখেন। এই ধরণের প্রশ্নের ধরণও একটু ভিন্নধরণের হয়।
সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম অনুযায়ী উচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্নে অনেক সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করতে বলা হয়। আবার অনেক সময় প্রশ্নে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে যৌক্তিকতা বর্ণনা করতে বলা হতে পারে। অনেকসময় দেখা যায়, প্রশ্নের নির্দিষ্ট কোনো উত্তর নেই। তখন মূলত যে সুন্দর করে উপযুক্ত যুক্তি দিয়ে নিজের মতামতটি ব্যাখ্যা করতে পারবে, তার উত্তরই বেশি হৃষ্ট পুষ্ট হবে।
উচ্চতর দক্ষতার জন্য তোমার যে খুব বেশি পরিমাণের উচ্চতর দক্ষতা প্রয়োজন তা কিন্তু নয়, শুধুমাত্র লেখার সময় কয়েকটি ছোট কৌশল অবলম্বন করাই যথেষ্ট। এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য ৪ নম্বর বরাদ্দ থাকবে। সুতরাং প্রশ্নের উত্তরও ৪ প্যারায় লিখতে হবে।
প্রথম তিন প্যারা লেখার ক্ষেত্রে প্রয়োগমূলক স্তরের পন্থা অবলম্বন করতে হবে। অর্থাৎ প্রথম তিন প্যারা লেখার সময় প্রয়োগমূলক স্তরের মত করেই লেখা যেতে পারে। চতুর্থ প্যারা লেখার সময় বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। কেননা এই প্যারার উপকরণগুলোই উচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্নকে প্রয়োগ থেকে আলাদা করে দিবে।
সময়: ৮-৯ মিনিট
গণিতের সৃজনশীল প্রশ্ন: উদ্দীপকে চোখ রাখো
যতক্ষণ অন্যান্য বিষয়গুলোতে সৃজনশীল পদ্ধতির কথা বলা হয়, সবার কাছেই সেটা অনেকটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যাপারটা গণিতে গিয়ে ঠেকে গেলেই শুরু হয় নানা ভয়ভীতিকর চিন্তাভাবনার। এটা সত্যি যে গণিতের সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। খেয়াল রাখতে হবে:
- গণিতে উদ্দীপক খুব জরুরী ও তথ্যবহুল হয়। তাই শুরুতেই উদ্দীপকের খুঁটিনাটি খুঁজে বের করতে হবে।
- গণিতের সৃজনশীলে প্রশ্নের একাংশের সাথে অন্য অংশের উত্তরের যোগসূত্র থাকে। তাই কখনোই প্রশ্নের কোনো অংশ বাদ দিয়ে পরের অংশে যাওয়া উচিত নয়, এক্ষেত্রে তথ্য সংকট ঘটতে পারে।
- উদ্দীপকে অনেক সময় প্রশ্নের আকারে বিভিন্ন সূত্রের অংশ দেয়া থাকতে পারে।
- হুবহু বইয়ের অংক সাধারণত গণিতের সৃজনশীলে দেয়া হয় না। কিন্তু বইয়ের বিভিন্ন কনসেপ্ট থেকেই কিন্তু প্রশ্ন করা হয়। তাই প্রশ্নের বিভিন্ন ধরণ সম্পর্কে “ক্লিয়ার কনসেপ্ট” থাকা বাঞ্ছনীয়।
HSC 23 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স (বিজ্ঞান বিভাগ)
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য গণিতের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
কলেজ লাইফের প্রথম ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অর্ণবের। পরীক্ষার সিলেবাসে আছে সরলরেখা, বৃত্তের মত অনেক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কোনো রকম ভয় না পেয়ে সুন্দর মতো সিলেবাস শেষ করল সে। সবকিছু একবারে ধরে ধরে শেষ করেছে। প্রস্তুতিতে কোন ছাড় দেয়নি, কিন্তু পরীক্ষার হলে যে সে বেশ বিপদে পড়লো। সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপকই বুঝতে পারছে না এবং সেখান থেকে উত্তর বের করতে পারা তার কাছে অনেক বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে! অনেক ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও অর্ণবের পরীক্ষা অনেক খারাপ হলো।
অর্ণবের মতো এমন অনেকেই রয়েছে যারা গণিত অনেক ভাল পারা সত্ত্বেও বা অনেক ভাল পরীক্ষার প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষার হলে সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপক বুঝতে না পারার কারণে ভালো পরীক্ষা দিতে পারে না। আসলে দোষটা কি অর্ণবের মতো ছেলেদের? মোটেই না। সমস্যা শুধু তাদের শেখার পদ্ধতিতে।
সাধারণত বইয়ের অনুশীলনী থেকে আমরা যে ধরনের অংক করি তা অনেকটা এরকম হয়, x2+y2=16 বৃত্তের একটি জ্যা (-2,3) বিন্দুতে সমদ্বিখণ্ডিত হয়। ওই জ্যা এর সমীকরণ নির্ণয় কর। কিন্তু পরীক্ষায় যখন একই অংক সৃজনশীল আকারে দেয়া হয় তখন সেটি দেখায় অনেকটা এরকম:
বইয়ে অনুশীলনীর অংকগুলোতে সরাসরি তথ্য দেয়া থাকে এবং সেখান থেকে সমাধান করে উত্তর বের করতে হয়। কিন্তু সৃজনশীল প্রশ্নে তেমনটা হয়না কখনই। সৃজনশীল প্রশ্নে উদ্দীপকের মাঝে লুকিয়ে থাকে নানা ধরনের ক্লু। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে তথ্য বের করে আনতে হয় এবং পরে সমাধান করতে হয়। গণিতের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই চিত্রের মাধ্যমে উদ্দীপক উপস্থাপন করা হয়। আর এই ছবি দেখে তথ্য বের করতেই ব্যর্থ হয় শিক্ষার্থীরা।
তোমরা কি জানো, এই সমস্যা সমাধানের জন্য যে একটি অ্যাপ রয়েছে যা সম্পূর্ণ ফ্রি এবং তাতে আছে অফলাইনে কাজ করার সুবিধা? অ্যাপটির নাম হলো Desmos, এটি একটি Graphing Calculator- এই অ্যাপটি দিয়ে তুমি ঘরেই অনুশীলনীর অংকগুলো থেকে বের করে ফেলতে পারো তাদের চিত্র, সমাধানসহ আরো অনেক কিছু। চলো এই অ্যাপটি দিয়ে কীভাবে তোমার বইয়ের অধ্যায়গুলোর সৃজনশীলের প্রস্তুতি ভালোভাবে নেয়া যায় তা দেখে আসি।
অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে পারো: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.desmos.calculator
১) সরলরেখা ও বৃত্ত প্রশ্ন উত্তর:
উচ্চতর গণিত প্রথম পত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুইটি অধ্যায় সরলরেখা ও বৃত্ত। পরীক্ষায় এই অধ্যায়গুলো থেকে কোন প্রশ্ন না আসলে পরীক্ষাই় হয় না এমনটাও বলা চলে! এক থেকে দেড়টি কখনো দু’টি সৃজনশীল এখান থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই সরলরেখা বৃত্তের দুইটি মিলিয়ে প্রশ্ন করা হয় এবং সেক্ষেত্রে প্রশ্নটা বেশ জটিল হয়ে যায়। তাই সেখান থেকে সমাধান বের করার জন্য পূর্বপ্রস্তুতি অনেক ভালো হওয়া আবশ্যক।
তাই অনুশীলনীতে যে অংকগুলো রয়েছে সেগুলো Desmos নামের অ্যাপটির মাধ্যমে চিত্র দেখে দেখে প্র্যাকটিস করা উচিত।
একটি সরলরেখা সমান্তরাল সরলরেখার সমীকরণ নির্ণয়, একটি সরল রেখার লম্বরেখার সমীকরণ নির্ণয়, দুইটি সরলরেখার ছেদবিন্দুগামী সরলরেখার সমীকরণ নির্ণয়, একটি বিন্দু থেকে একটি রেখার দূরত্ব নির্ণয়, দুইটি রেখার অন্তর্ভুক্ত কোণের সম দ্বিখণ্ডক নির্ণয়, স্থুল কোণের সমদ্বিখণ্ডক, সূক্ষ্ম কোণের সমদ্বিখণ্ডক, মুল বিন্দু্ধারী কোণের সমদ্বিখণ্ডক ইত্যাদি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলোর অংকের চিত্র অ্যাপটির মাধ্যমে দেখলে তোমার সৃজনশীল মোকাবেলা করার ভয় অনেক অংশে কমে যাবে।
বৃত্তের ক্ষেত্রে, বৃত্ত দ্বারা অক্ষের খণ্ডিত অংশ, বৃত্তের সাপেক্ষে কোন বিন্দুর অবস্থান, বৃত্তের স্পর্শক ও অভিলম্বের সমীকরণ, স্পর্শক- জ্যা এর সমীকরণ, দুইটি বৃত্তের সাধারণ জ্যা এর সমীকরণ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ টপিকের অংকের চিত্রগুলো অ্যাপটির মাধ্যমে দেখে রাখলে সৃজনশীল প্রশ্ন সমাধান উদ্দীপক বুঝতে কোনো সমস্যাই হবে না।
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
HSC 23 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স [বাংলা, ইংরেজি, ICT]
২) ত্রিকোণমিতিক অনুপাত প্রশ্ন উত্তর:
ত্রিকোণমিতিক অনুপাত অধ্যায়ে বিভিন্ন ত্রিকোণমিতিক ফাংশনের গ্রাফ আঁকার প্রয়োজন পড়ে। স্কুল কিংবা বোর্ড পরীক্ষায় এই গ্রাফ অংকন এর প্রশ্ন প্রায়ই এসে পড়ে। বিভিন্ন রেঞ্জ উল্লেখ করে y=sinx, y=sin2x, y=cosx, y=cos3x, y=cos2x, y=tanx ইত্যাদি অনেক ধরনের ফাংশনের লেখচিত্র আঁকা প্রয়োজন হয়।
তারপর আসে লেখচিত্রের মাধ্যমে সমীকরণ সমাধানের অংক। এই অংকগুলোর সমাধান desmos অ্যাপের মাধ্যমে তুমি সরাসরি নির্ণয় করতে পারবে। একটি অংক উদাহরণ হিসেবে দেখো।
sin2x-sinx=0 এর 0≤x≤2π ব্যবধিতে সমাধান নির্ণয় করা হয়েছে এবং সমাধান এসেছে উপরে দেখানো পাঁচটি বিন্দুর ভুজের মান অর্থাৎ নির্ণয় সমাধান x=0, π/3, π, 5π/3 এবং 2π
এভাবেই খুব সহজে ত্রিকোণমিতিক অনুপাত অধ্যায়ের গ্রাফ ও তাদের সমাধান দেখে নেয়া যায়।
৩) যোগাশ্রয়ী প্রোগ্রাম প্রশ্ন উত্তর:
এই অ্যাপ দিয়ে যে অংকগুলো করতে আমার সব থেকে বেশি ভালো লাগে তাহলো যোগাশ্রয়ী প্রোগ্রাম। কারণ এই অ্যাপ দিয়ে খুব ভালোভাবে লেখচিত্রগুলো দেখা যায়। বইয়ের অনুশীলনী থেকে অসমতাগুলো নির্ণয় করার পর শুধু অ্যাপে দিয়েই নিখুঁতভাবে লেখচিত্রগুলো থেকে সাধারণ অঞ্চল নির্ণয় করা যায়।
এভাবেই চাইলে তুমি এক বা একাধিক অসমতার চিত্র দেখে সাধারণের অঞ্চল নির্ণয় করে চরম বিন্দু দেখে নিতে পারো খুব সহজেই।
৪) কনিক প্রশ্ন উত্তর:
উচ্চতর গণিত দ্বিতীয় পত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হলো কনিক। এইচএসসি পরীক্ষাতে এ অধ্যায় থেকে একটি সম্পূর্ণ সৃজনশীল আসার সম্ভাবনা সবসময়ই থাকে। আর এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে সহজে বোঝা যায় অ্যাপটির মাধ্যমে।
পরাবৃত্ত, অধিবৃত্ত এবং উপবৃত্ত এই তিনটি অংশেরই অংকগুলো হাতে কলমে শিখে নিতে পারবে এই অ্যাপটি থেকে। তাছাড়া অনেক হিজিবিজি সব গ্রাফ অনুশীলনের অংকগুলো থেকে চেক করে নাও এখনই!
BONUS
এই অ্যাপটি দিয়ে তুমি যে শুধুমাত্র বইয়ের সৃজনশীল এর প্রস্তুতি নিতে পারবে এমনটা কিন্তু না। এর সাহায্যে তোমার যে প্র্যাকটিকালগুলো রয়েছে সেগুলোরও ঘরে বসে গ্রাফ দেখে নিতে পারবে। অনেক সময় দেখা যায় সময় স্বল্পতার কারণে অথবা কলেজে ভালো ব্যবস্থা না থাকার কারণে ভালোমতো ব্যবহারিকগুলো করে দেয়া হয় না। সেক্ষেত্রে নিজেই ঘরে বসে সিলেবাস দেখে প্রাকটিকালগুলো দেখে নিতে পারো খুব সহজে।
বিভিন্ন ধরনের ফাংশন যেমন, ত্রিকোণমিতিক ফাংশন, লগারিদমিক ফাংশন, এবং এছাড়া অন্তরীকরণ ও যোগজীকরণ সম্পর্কিত ব্যবহারিকের সমস্যা, সংযুক্ত কোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাত সম্পর্কিত ব্যবহারিক সমস্যা, বৃত্ত এবং সরলরেখা সম্পর্কিত ব্যবহারিক সমস্যা ইত্যাদি নানান ধরনের ব্যবহারিক যেগুলো প্রথম পত্র এবং দ্বিতীয় পত্র উভয় জায়গাতে রয়েছে সেগুলো খুব সহজে শিখে নেয়া যায়।
গণিত সৃজনশীলকে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। লেখচিত্র এঁকে বেশি বেশি প্র্যাকটিস করো। দেখবে উদ্দীপকে আসা হিজিবিজি চিত্রগুলো কেউ সহজ মনে হচ্ছে। চিত্রগুলোকে পড়তে শেখো এবং সামনে এগিয়ে যাও! তোমাদের জন্য শুভকামনা।
এই অ্যাপটিকে আরো ভালোভাবে শেখার জন্য ঘুরে আসতে পারো এই লিংকে।
আরো পড়ুন: বাংলা ২য় পত্রের টুকিটাকি: ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম
বাংলা সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন কিংবা হিসাববিজ্ঞান, অর্থনীতি অথবা সামাজিক বিজ্ঞান, পৌরনীতি পরীক্ষা দিয়ে কিছুটা হলেও শান্তিতে থাকা যায়। এসব বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে ভালো পরীক্ষা দিলে আশানুরূপ নম্বর পাওয়া কঠিন কিছু না। অন্যদিকে কিছুতেই শান্তিতে থাকা যায় না বাংলা পরীক্ষা দিয়ে । পরীক্ষার আগের দিন রাত পর্যন্ত জেগে পড়ে, পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে সাহিত্য ঝড় তুলেও পরীক্ষার খাতা হাতে নিয়ে হতভম্ব হয়ে যেতে হয়।
নৈর্ব্যক্তিক তো তা-ও সয়ে যায়। কিন্তু বাংলা সৃজনশীলে কেন দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়? এর একমাত্র কারণ হলো আমরা অহেতুক সময় নষ্ট করি গৌরচন্দ্রিকার পিছনে। অথচ ছোট কিছু নিয়ম অবলম্বন করে কিন্তু অনায়াসে ভালো নম্বর পাওয়া যায়।
নবম ও দশম শ্রেণির ‘মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য’ বইয়ের একটি সৃজনশীল প্রশ্নর নমুনা দিয়ে সৃজনশীল পদ্ধতিতে বাংলা প্রশ্ন উত্তর দেয়ার হাতেখড়ি শুরু করা যায়।
উদ্দীপক:
যখন হানাদারবধ সংগীতে ঘৃণার প্রবল মন্ত্রে জাগ্রত স্বদেশের তরুণ হাতে নিত্য বেজেছে অবিরাম মেশিনগান , মর্টার গ্রেনেড। ক. মধ্যরাতে কারা এসেছিল? (জ্ঞানমূলক প্রশ্ন, মান-১) খ. বর্ণমালা পথে পথে তেপান্তর ঘুরছিল কেন? (অনুধাবনমূলক প্রশ্ন, মান-২) গ. উদ্দীপকের অনুভব ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার অনুভবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ- ব্যাখ্যা কর। (প্রয়োগমূলক প্রশ্ন, মান-৩) ঘ. উদ্দীপকের ভাবনা ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার সামগ্রিক পরিচয় নয়- মূল্যায়ন কর। (উচ্চতর দক্ষতা, মান-৪) |
কৌশল করে, নিয়ম মেনে একটা সৃজনশীলের উত্তর দিলে দশে অন্তত নয় পাওয়া ঠেকায় কে?
জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর:
জ্ঞানমূলক স্তরের প্রশ্নের উত্তর হবে মৌলিক। এই স্তরের উত্তর দিতে উদ্দীপকের কোনোরকম সাহায্যের প্রয়োজন নেই। এ স্তরের উত্তর একবাক্যে অথবা অল্পবাক্য দিয়ে দেয়াই শ্রেয়। অবশ্যই অবশ্যই এবং অবশ্যই এ স্তরের উত্তর দিতে বেশি সময় নেয়া যাবে না।
অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর:
এই স্তরের উত্তর দিতেও উদ্দীপকের কোন দরকার নেই। এই স্তরে অনুধাবিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। দুই নম্বরের জন্য দুই প্যারায় উত্তর লিখতে হবে। উত্তরের প্রথম অংশে থাকবে প্রশ্নের মূল চাহিদা, অর্থাৎ জ্ঞান। এ পর্যায়ে এক বাক্যে কিংবা অল্পবাক্যে প্রশ্নের মূল উত্তর লিখতে হবে। উপরের প্রশ্নটির ক্ষেত্রে উত্তর হবে কিছুটা এরকম-
***পাক হানাদার বাহিনী আমাদের অস্তিত্ব হানির জন্য প্রথমে হাত রেখেছিল আমাদের ভাষায়। বাংলা ভাষার বর্ণমালাগুলোর হারিয়ে যাওয়ার সংশয়ই কবি এখানে ব্যক্ত করেছেন।***
দ্বিতীয় প্যারায় থাকবে অনুধাবন। ছয় থেকে সাত লাইনে জ্ঞানের অংশটিকে ব্যাখ্যা করে লিখতে হবে। ব্যাখ্যা লিখতে গিয়ে উপন্যাস লিখে ফেলি আমরা অনেকেই। এ স্তরে উপন্যাস লিখতে বাকি প্রশ্নগুলো লেখা হয়ে উঠে না। তাই দ্রুত অনুধাবনের উত্তর শেষ করে পরবর্তী প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। জ্ঞানমূলক এবং অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর এক পৃষ্ঠায় দেয়া ভালো। এতে লেখার পরিমাণ সম্পর্কে ধারণা থাকবে এবং পরবর্তী প্রশ্ন লেখার জন্য সময় বাঁচবে।
প্রয়োগমূলক প্রশ্নের উত্তর:
এই স্তরে মূলত উদ্দীপকের সাথে পাঠ্য গদ্য কিংবা পদ্যের পার্থক্য চাওয়া হয়। তিন প্যারায় উত্তর দিতে হবে এই স্তরে। প্রথম প্যারায় থাকবে প্রশ্ন সম্পর্কে উত্তরদাতার জ্ঞান। নমুনা প্রশ্নে প্রয়োগমূলক প্রশ্নের জ্ঞান স্তরের উত্তর যেভাবে দিলে ভালো হবে-
***প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বলা যায়, উদ্দীপকের অনুভব ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার অনুভবের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।***
পরবর্তী প্যারায় থাকবে অনুধাবন। এই স্তরে অবশ্যই, অবশ্যই এবং অবশ্যই উদ্দীপকের কথাবার্তা লেখা যাবে না। ছয় থেকে সাত লাইনের মধ্যে উদ্দীপকের সাথে বইয়ের পঠিত গদ্য কিংবা পদ্যের যে অংশের মিল, সেই অংশের কথা লিখতে হবে। এবং আবারও বলব, এ অংশে উদ্দীপকের কথা লেখা যাবে না।
তৃতীয় বা শেষোক্ত প্যারায় থাকবে প্রয়োগ। প্রয়োগ স্তরে উদ্দীপক এবং গদ্যাংশ বা পদ্যাংশের পার্থক্য দেখাতে হবে। নমুনা প্রশ্নটির উত্তরে যা লেখা উচিত-
***উদ্দীপকে যেমনি হানাদার বাহিনীকে ধিক্কার জানানো হয়েছে, ঠিক তেমনি ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতায়ও পাক হানাদার বাহিনীর ঘৃণ্য একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।***
এই স্তরের প্রশ্নের উত্তর দেড় পৃষ্ঠায় শেষ করাই শ্রেয়।
উচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্নের উত্তর:
উচ্চতর দক্ষতার চার নম্বর তোলা অনেকের কাছেই আকাশ-কুসুম ব্যাপার স্যাপার। তবে একটু কৌশল করে যৌক্তিক কথা লিখলে নম্বর পাওয়া কোনো ব্যাপার না। এই প্রশ্নের উত্তরে মূলত উদ্দীপক ও পাঠ্যের কোনো একটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে মতামত দেয়া হয়। এই মতামতের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
চারটি প্যারায় প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রথম তিনটি প্যারা হুবহু প্রয়োগমূলক প্রশ্নের মতো করে লিখতে হবে। কিন্তু শেষোক্ত প্যারা বা উচ্চতর দক্ষতা স্তরে মূল মতবাদ লিখতে হবে। যেমন নমুনা প্রশ্নটির উচ্চতর দক্ষতা হবে এরকম:
***সামগ্রিক আলোচনা এবং প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বলা যায়, “উদ্দীপকের ভাবনা ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতার সামগ্রিক পরিচয় নয়”- ধারণাটি যথাযথ/যুক্তিযুক্ত/যৌক্তিক।
২, ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে প্রতিটি প্যারা বা স্তর লেখার জন্য এক নম্বর দেয়া হবে। কাজেই কেউ যদি দেখো যে এ তিনটি স্তরের কোনো একটিতে তুমি কম পেয়েছো, তাহলে বুঝতে হবে,
১. তুমি একটা প্যারা বা স্তর কম লিখেছো।
২. যেকোনো একটা প্যারা বা স্তরের উত্তর সন্তোষজনক ছিল না।
নিয়ম-কানুন নিয়ে সচেতন থাকতে গিয়ে আবার সময়ের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে যাওয়াটা ঘোর বোকামি। প্রশ্নভেদে নিজের মতো করে প্রতি প্রশ্নের জন্য সময় ভাগ করে নিতে হবে, যেটা পুরোপুরিই উত্তরদাতার উপর নির্ভর করে। কৌশল করে, নিয়ম মেনে একটা সৃজনশীলের উত্তর দিলে দশে অন্তত নয় পাওয়া ঠেকায় কে?
সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি নিয়ে যে মিথ প্রচলিত আছে যে “সৃজনশীলে বেশি নম্বর উঠানো অনেক কঠিন,” তাদের জন্য বলতে চাই- নম্বর পাওয়া যদি একমাত্র উদ্দেশ্য হয়, তবে সত্যিই সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি অনেক কঠিন মনে হবে। তবে নিজের ভেতরের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে সময়ের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে যদি প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা উপস্থিত থাকে, তবেই সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি হয়ে উঠবে তোমার জন্য ছেলেখেলা।
শুভকামনা রইলো।
এইচএসসি ও এডমিশন পরীক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ ২.০ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- HSC 25 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- HSC 26 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি)
- মেডিকেল এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- ঢাকা ভার্সিটি B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- বুয়েট কোশ্চেন সলভ কোর্স
- গুচ্ছ A Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
- গুচ্ছ B Unit এডমিশন কোর্স – ২০২৪
বছরজুড়ে অভিজ্ঞ টিচারদের সাথে ক্লাস 6-10 এর পড়াশোনা ও পরীক্ষার জন্য সেরা প্রস্তুতি নিতে আজই ভিজিট করো আমাদের অনলাইন ব্যাচ ২০২৫ -এ:
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন