প্রশ্ন: লিফট দিয়ে নিচে নামার সময় নিজেকে হালকা লাগে কেন?
উত্তর: যখন লিফট ব্যবহার করে নিচে নামা হয় তখন স্থির অবস্থান থেকে একটি ত্বরণের সৃষ্টি হয় এবং লিফটের সাপেক্ষে সেই ত্বরণ অভিকর্ষজ ত্বরণের চেয়ে কম হয়। এ কম ত্বরণ নিয়ে আমরা লিফটের উপর আমাদের ওজনের চেয়ে কম বল প্রয়োগ করি। ফলে আমরা হালকা বোধ করি। অর্থাৎ আমাদের ওজন কম মনে হয়।
এজন্য লিফট দিয়ে নিচে নামার সময় নিজেকে হালকা লাগে।
প্রশ্ন: ভর ও ওজন কি একই জিনিস?
উত্তর: না, ভর ও ওজন একই জিনিস নয়। কোনো বস্তুতে মোট পদার্থের পরিমাণই হচ্ছে ভর। আর কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা আকর্ষণ করছে বা নিজের দিকে টানছে তা হচ্ছে বস্তুটির ওজন।
প্রশ্ন: দিনের বেলা আমরা চাঁদ দেখতে পাই না কেন?
উত্তর: কে বলেছে দিনের বেলা চাঁদ দেখা যায় না? দিনের বেলা চাঁদ দেখা যায়। আমি নিজেও দেখেছি। কিন্তু সূর্যের আলোর তীব্রতার জন্য অস্পষ্ট দেখা যায়।
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
ভার্সিটি A Unit + গুচ্ছ এডমিশন কোর্স
প্রশ্ন: আকাশে বিদ্যুৎ চমকায় কেন?
উত্তর: আমরা যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি আর বিদ্যুৎ চমকালে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় তা একই। সাধারণত আকাশে যখন মেঘ থাকে তখন জলীয়বাষ্প এতো ঠান্ডা হয়ে যায় যে বরফের আকার ধারণ করে এবং এগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এই সংঘর্ষের ফলে ইলেকট্রিক চার্জ উৎপন্ন হয়।
মেঘের উপরে থাকে পজিটিভ চার্জ আর নিচে থাকে নেগেটিভ চার্জ। যেহেতু বিপরীতধর্মী চার্জ পরস্পরকে আকর্ষণ করে তাই এই পজিটিভ চার্জ ও নেগেটিভ চার্জ পরস্পরের সংস্পর্শে আসলে এদের বিভব পার্থক্যের কারণে উপর থেকে নিচের দিকে চার্জের নির্গমন ঘটে।
এর ফলে শক্তির নি:সরণ ঘটে, শব্দ হয় ও আলোর ঝলকানি সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন: আকাশের রং নীল কেন?
উত্তর: সূর্যের আলোর ৭টি রং থাকে। এগুলো হল- বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। পৃথিবীতে আলো আসার সময় বায়ুমণ্ডলের সূক্ষ্ম ধূলিকণা এবং বিভিন্ন গ্যাস অণুতে আপতিত হয়।
আপতিত হওয়ার পর বিচ্ছুরণের সময় যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত বেশি সে আলো তত বেশি বিচ্ছুরিত হয়। সে অনুযায়ী বেগুনি আলো সবচেয়ে বেশি বিচ্ছুরিত হওয়ার কথা।
কিন্তু বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্ফিয়ার অঞ্চল সূর্যের বেগুনি আলোর অধিকাংশ শোষণ করে নেয়। বেগুনি আলো বাদ দিলে সবচেয়ে বামের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো হল নীল। ফলে বায়ুমন্ডলে নীল আলোই সবচেয়ে বেশি বিচ্ছুরিত হয়। তাই দিনের বেলা আমরা নীল আকাশ দেখি।
আরো পড়ুন: গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞান: জেনে নাও ভালো করার কৌশল!
প্রশ্ন: অভিকর্ষ বল না থাকলে আগুন গোলাকৃতির হয় কেন?
উত্তর: অভিকর্ষ বল অর্থাৎ পৃথিবীর টান না থাকলে আগুনের শিখার আকৃতি হত গোল! অভিকর্ষ বল থাকলে শিখার কাছের বাতাস গরম হয়ে হালকা বাতাস উপরে উঠে যেত। কিন্তু অভিকর্ষ বল না থাকায় শিখার চারপাশের বাতাস হালকা হোক আর ভারি হোক সরে যেত না।
ফলে চারপাশের বাতাসের কারণে শিখাটি গোল হয়ে জ্বলত। এবং চারপাশের অক্সিজেন সব পুড়ে গেলে নিজে নিজেই নিভে যেত।
প্রশ্ন: আঙুল ফুটালে শব্দ হয় কেন?
উত্তর: আঙুলের সংযোগস্থলের মাঝে সাইনোভিয়াল ফ্লুইড নামে এক প্রকার ঘন পিচ্ছিল তরল জাতীয় পদার্থ থাকে। এর কাজ হল সংযোগস্থলের অস্থিগুলির মাঝে যেন কোন ধরণের সংঘর্ষ না হয়। এই তরলের মাঝে বিভিন্ন গ্যাসও সম্পৃক্ত হয়ে মিশে থাকে।
আমরা যখন আঙুল ফোটাই তখন মূলত আঙুলের হাড়গুলোকে টেনে আলাদা করার চেষ্টা করি। এই টানের ফলে সংযোগস্থলের মাঝের স্থানটি বেড়ে যায় এবং আভ্যন্তরীণ চাপ কমে যায়।
কিন্তু যখন পুনরায় আগের স্থানে ফিরে আসে তখন সংযোগস্থলের গ্যাসগুলো বুদবুদ সৃষ্টি করে যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ক্যাভিটেশন বলে এবং এই বুদবুদগুলো চাপের কারণে ফেটে গিয়ে শব্দ করে।
অনেকের ধারণা এটি করলে ক্ষতি হয়। কিন্তু ১৯৯৮ সালে ডোনাল্ড উঙ্গার প্রমাণ করেন যে সেই ধারণাটি ভুল। এই গবেষণার জন্য তিনি ২০০৯ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত হন।
প্রশ্ন: পরমাণু ঠিক কতোটা ছোট?
উত্তর: পরমাণু হচ্ছে মৌলের ক্ষুদ্রতম অংশ যারা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারে। একটি সুন্দর উদাহরণ দিলে পরমানুর আকারের ধারণাটি তোমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এক চামচ পানিতে যে সংখ্যক পরমাণু থাকে, আটলান্টিক মহাসাগরেও তত চামচ পানি থাকে না। ধারণা করা হয়, এর চেয়েও প্রায় আটগুণ বেশি পরমাণু থাকে!!!
প্রশ্ন: একটি ডিশের লাইনে এতগুলো চ্যানেল কীভাবে আসে, একটার সাথে আরেকটার মিশ্রণ হয় না কেন?
উত্তর: টিভি চ্যানেলের ব্রডকাস্ট সেন্টারগুলো স্যাটেলাইটে তাদের অনুষ্ঠানের সম্প্রচারগুলো পাঠায় এবং পরবর্তীতে সেই স্যাটেলাইট থেকে আসা সংকেতের মাধ্যমে আমরা আমাদের বাসায় বসে টিভিতে সেই চ্যানেলে অনুষ্ঠানগুলো দেখি।
প্রত্যেকটি ব্রডকাস্ট সেন্টারের জন্য আলাদা আলাদা ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড রয়েছে এবং তারা সেই অনুযায়ী তাদের সম্প্রচার প্রেরণ করে। এসব ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড আলাদা হওয়ার কারণেই মূলত একটি চ্যানেলের সাথে আরেকটি চ্যানেলের সংমিশ্রণ হয় না।
আরো পড়ুন: এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র: শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি!
প্রশ্ন: Big Crunch কী?
উত্তর: বিগ ক্রাঞ্চকে বিগ ব্যাং- এর প্রতিবিম্ব বলা যেতে পারে। বিগ ব্যাং নামক মহাবিস্ফোরণের পর, মহাবিশ্বের সবকিছু চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এবং তখনই শুরু হয় মহাবিশ্বের প্রসারন। আর সেই সাথে সূত্রপাত হয় মহাকর্ষ শক্তির।
মহাকর্ষের কারণে সবকিছুকেই আকর্ষণ করে। এতে সবকিছুর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ার প্রচণ্ড গতি এক সময় ধীরে ধীরে কমে আসবে। কিন্তু মহাকর্ষ যেহেতু রয়েই যাবে, গতি কমতে কমতে এক সময় শূন্য হয়ে তারপর গতি উল্টোদিকে কাজ করবে।
অর্থাৎ তখন সবকিছু ছড়িয়ে পড়ার পরিবর্তে নিজেদের মধ্যকার আকর্ষণে আবার কাছাকাছি আসা শুরু করবে। শুরু হবে সংকোচন। যত কাছাকাছি আসবে, মহাকর্ষও তত বেশি কাজ করবে। তাতে কাছাকাছি আসার গতি আরও বাড়বে।
এভাবে কাছাকাছি আসতে আসতে একসময় সবকিছূ আবার একবিন্দুতে মিলিত হবে। এই এক বিন্দুতে মিলিত হওয়ার ঘটনাটাকেই বলা হয় “বিগ ক্রাঞ্চ”।
আর সেই বিন্দুটিকে বলে “সিংগুলারিটি”।
উৎস: পদার্থবিজ্ঞানের মজার প্রশ্ন ও উত্তর
এমন মজার মজার সব প্রশ্ন নিয়ে একটা বইও লিখে ফেলেছি। বইটার অনলাইন অর্ডার করার লিঙ্কঃ https://goo.gl/ymBC3Q
১০ মিনিট স্কুলের অনলাইন ব্যাচগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করো:
- ৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণির পড়াশোনার সবকিছু নিয়ে টেন মিনিট স্কুল অনলাইন ব্যাচ!
- ৯ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩ [বিজ্ঞান বিভাগ]
- ১০ম শ্রেণি [SSC 2024] অনলাইন ব্যাচ [বিজ্ঞান বিভাগ]
- SSC 2023 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স [বিজ্ঞান বিভাগ]
- HSC 2023 শর্ট সিলেবাস ক্র্যাশ কোর্স [বিজ্ঞান বিভাগ]
- HSC 2024 ক্র্যাশ কোর্স – প্রথম পত্র [বিজ্ঞান বিভাগ]
- HSC 24 ক্র্যাশ কোর্স – দ্বিতীয় পত্র [বিজ্ঞান বিভাগ]
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারেন এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন