কষ্ট থেকে উত্তরণের পাঁচ ধাপ

December 3, 2018 ...

কোন কিছু নিয়ে কষ্ট পাওয়ার বা কাউকে হারিয়ে ফেলার কষ্টটা মেনে নেবার পাঁচটা ধাপ আছে। এলিজাবেথ রস আর ডেভিস কেসলারের একটা আস্ত বইও আছে এই ব্যাপারে, নাম “ফাইভ স্টেজেস অফ গ্রিফ”। এই বইটিতে কষ্ট পাবার এবং তা থেকে উঠে আসার পাঁচটা ধাপ খুব সুন্দর করে আলোচনা করা হয়েছে। যেকোন কষ্ট, হোক তা কোন মানুষকে হারিয়ে ফেলার, কিংবা ব্যর্থতার অথবা হেরে যাওয়ার, সব কষ্ট থেকেই উঠে আসতে আমাদের সময়ের প্রয়োজন হয়। আর সেই পুরো সময়টা জুড়ে আমরা যে পাঁচ ধাপ অতিক্রম করি, সেই পাঁচটি ধাপ নিয়েই কথা বলবো আজ।

Denial (অস্বীকার):

পাঁচটা স্টেজের প্রথম স্টেজটা হলো ডিনায়াল বা অস্বীকার। একদম প্রথমে মানুষ এই বিষয়টা অস্বীকার করে যে ঐ মানুষটা তার জীবন থেকে সরে গেছে বা যাচ্ছে। ব্যর্থতার ক্ষেত্রে মানুষ ঐ পুরো ব্যর্থতার ঘটনাটিকেই বেমালুম অস্বীকার করে বসে। অর্থাৎ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ এই ব্যাপারটা মেনেই নিতে পারে না যে সে ব্যর্থ হয়েছে।

এই অস্বীকার শুধু মুখেই না, সে মনে মনেও এটাই বিশ্বাস করতে চায়। যদিও বা বোঝে যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে, তবুও সে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে চায়, এই দূরত্ব সাময়িক, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। যদিও বা বোঝে সে ব্যর্থ হচ্ছে, তবুও সে জোর করে ভাবতে চায়, এই ব্যর্থতা সাময়িক, খুব শীঘ্রই সব ঠিক হয়ে যাবে।

Personal Fitness

কোর্সটি করে যা শিখবেন:

  • বাসায় ব্যায়ামের নিয়ম এবং ব্যায়ামের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবহার
  • ফুল বডি ট্রেইনিংয়ের পাশাপাশি শরীরের আলাদা আলাদা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করা
  •  

    Anger (রাগ):

    অস্বীকার করতে করতে একসময় মানুষ বুঝতে পারে, আর অস্বীকার করে লাভ নেই। ঘটনাটা আসলেই ঘটছে। সে আসলেই এই নির্দিষ্ট ব্যাপারটিতে ব্যর্থ হয়েছে। সে মানুষটাকে হারিয়ে ফেলেছে। এই মুহূর্তে তার প্রচণ্ড রাগ হয়, যে ধাপটাকে নাম দেয়া হয়েছে Anger বা রাগ।

    এইসময়ে মানুষ তাকে ছেড়ে যাওয়া মানুষটার প্রতি রাগ অনুভব করে, আক্রোশ অনুভব করে৷ এই রাগ থেকে আসে রুঢ় ব্যবহার, তর্ক, আঘাত করার প্রবণতা। অপর পক্ষ হয় রুঢ়তর আঘাত করে অথবা সম্পূর্ণ  ইগনোর করে যায়। কখনো কোন কাজের ব্যর্থতা থেকে কষ্ট পেলে বেশিরভাগ মানুষ এই রাগের ধাপে এসে কাজটার প্রতিই রাগান্বিত হয়। অনেকে রাগান্বিত হয় সেইসব মানুষদের প্রতি যাদের সাথে মিলে তার কাজটা করার কথা। টিমমেটদেরকে দোষারোপ করা, পারিপার্শ্বিক অবস্থার ঘাড়ে দোষ চাপানোর কাজটাও এই ধাপেই ঘটে।

    যেহেতু কাজটা শেষ হয়েই গেছে এবং ফলাফল ভালো আসেনি, তাই রাগারাগি করে বিশেষ লাভও হয় না। আর কাজটা শেষ হয়ে গেলে দোষারোপ করলেই কি আর আগের সুযোগ ফিরে আসে? তাই এই রাগের ধাপও একদিন শেষ হয়।

    গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশান ইত্যাদি স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য 10 Minute School Skill Development Lab নামে ১০ মিনিট স্কুলের রয়েছে একটি ফেইসবুক গ্রুপ।

    Burgain (দর কষাকষি):

    একদিন যখন মানুষ দেখে তার এই রাগ দিয়ে কাজ হচ্ছে না, তার রাগের আড়ালের ইনসিকিওরিটিটা কেউ দেখতে পাচ্ছে না, তখন তার মধ্যে আসে দর কষাকষির প্রবণতা৷ এটাকে বলে বারগেইন স্টেজ। এই স্টেজে মানুষ অপর পক্ষের সাথে সমঝোতা করতে চায়, নিজে কিছু ছাড় দিয়ে হলেও চায় অপর পক্ষ ফিরে আসুক। এতে সাময়িক সমাধান যদি হয়ও, কিছুদিনের মধ্যেই সে নিজের দেয়া ছাড়গুলো নিয়ে বিরক্ত হয়ে পড়ে, তার কাছে মনে হতে থাকে সে ঠকেছে।

    ঠকে যাওয়ার এই অনুভূতি হেরে যাওয়া মানুষের মনে স্বাভাবিকভাবেই বেশ গভীর রেখাপাত করে।


    52008476 549047492258254 8576507686714081280 n

    আরো পড়ুন: বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার বা ম্যানিক ডিপ্রেশন: কেন হয়? বাঁচব কীভাবে?


    Depression (বিষণ্ণতা):

    এক পর্যায়ে মানুষটা হাল ছেড়ে দেয়। এই পর্যায়ে আসে ডিপ্রেশন। ডিপ্রেশন কী তা ডিপ্রেসড মানুষ মাত্রই বুঝবেন। এই সময়টাতে শুধু যে সম্পর্কের কথা বলা হচ্ছে সেই সম্পর্কেই না, আরো অনেক কিছুতে উদাসীন হয় মানুষ। সে তার এফোর্টের, তার কাজের, তার জীবনের কোন অর্থ খুঁজে পায়না।

    ধাপগুলোর সময় একেক জনের জীবনে একেক রকম। কারো কম, কারো বেশি। তবে বেশিরভাগ মানুষের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী হয় এই চতুর্থ ধাপ বা ডিপ্রেশন। এটা থেকে বেরিয়ে পঞ্চম ধাপে পড়তে পারলে মোটামুটি গ্রিফের এই ফ্লোচার্টটা থেকে বেরিয়ে আসা যায়। যারা পারে না, তাদেরকেই আমরা প্রেমে বা কোন কাজে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করতে দেখি।

    ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা নামের এই ধাপটা দীর্ঘস্থায়ী হলেও নিজের চেষ্টায় এবং আপনজনদের সহায়তায় এই অবস্থা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব৷ তবে অনেকে এরকম পরিস্থিতিতে ক্রনিক ডিপ্রেশনে চলে যান। সময়মত বিশেষজ্ঞের সহায়তা না নিলে যেকোন সময় তীব্র মনোকষ্টের শিকার হতে হয় ব্যক্তিকে।

    Acceptance (মেনে নেয়া): 

    পঞ্চম অর্থাৎ সর্বশেষ ধাপে ডিপ্রেশনটা কাটিয়ে উঠলে মানুষ এক পর্যায়ে মেনে নেয়। সে মেনে নেয়, মানুষ জীবন থেকে চলে যাবেই এবং এটা যে যত তাড়াতাড়ি মেনে নিতে পারবে ততই মঙ্গল। সে মেনে নেয়, ব্যর্থতা আসবেই, এবং এই ব্যর্থতাকে যে যত তাড়াতাড়ি মেনে নেবে এবং এখান থেকে যে যত ভাল শিখতে পারবে সেই তত সফল হতে পারবে। এই ধাপটাকে বলা হয় অ্যাকসেপ্টেন্স। এই অ্যাকসেপ্টেন্স ধাপে এসে তার আর আগের মত তীব্র কষ্ট থাকে না এই ঘটনা নিয়ে, তবে মনে পড়লে বা মনে করিয়ে দিলে কিছুটা মনে তো পড়েই!

    সে যাই হোক, যেকোন গ্রিফ, লস, কষ্টকে উৎরে যেতে এই পাঁচটা ধাপ পেরিয়েই আসতে হয় মানুষকে। এটা একটা হেলদি প্রসেস, আপনার মধ্যকার নেগেটিভিটিগুলো ঝেঁড়েপুঁছে তকতকে হয়। কোন একটা ধাপ বাদ গেলে ব্যালেন্স হারাবার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তাই কষ্ট নিয়ে আসলে কষ্ট পাওয়ার কারণ নেই কোন, এক ধাপ শেষে আরেক ধাপ আসবে। সবগুলো ধাপ পেরিয়ে এসে তবেই না দেখা মিলবে কষ্ট শেষের সোনালী সময়ের।

    Communication Masterclass by Tahsan Khan

    বাস্তব জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রিটেন, ভার্বাল ও নন ভার্বাল কমিউনিকেশন আরো ইফেক্টিভ করার দারুণ সব কৌশল শিখুন তাহসান খানের Communication Masterclass কোর্সে, এগিয়ে থাকুন ব্যক্তিগত ও প্রফেশনাল লাইফে!

     

    Hold on till then. Tomorrow the sun will rise, and who knows what the tides could bring!


    আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন: 



    ১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট করুন: www.10minuteschool.com


    ১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com

    ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি অনলাইন ব্যাচ ২০২৩

    দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই দেশসেরা শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হও ইন্টারেক্টিভ লাইভ ক্লাসে, নাও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সম্পূর্ণ সিলেবাসের 💯তে💯 প্রস্তুতি!

    আপনার কমেন্ট লিখুন