১.
আচ্ছা, টিপ পরতে ভালবাসো? কিংবা টিপ পরা কাউকে দেখতে ভালো লাগে? আমার টিপ ভীষণ প্রিয়। আমি তো প্রায়ই ক্যাম্পাসে টিপ পরে যাই। আর শাড়ির সাথে টিপ আমার পরতেই হবে! আমার এক কাজিন এসেছে বিদেশ থেকে। বিদেশে নাকি এরকম বাঙ্গালি সাজসজ্জা অনেক মিস করে। তাই আবদার করল, “আপু শাড়ি পরতেই হবে তোমাকে।“ সেও নাকি পরবে। তো আমরা দুই বোন শাড়ি পরে কপালে টিপ দিয়ে ঘুরতে গেলাম দৃক গ্যালারিতে।
বিদেশে থেকে বাংলাদেশের হাওয়া বাতাস যাতে ভুলতে না বসে তাই আসলে নিয়ে এসেছি। এক ভাস্কর্য প্রদর্শনীতে। আশেপাশে পরিত্যক্ত গাছ, কাঠ, গুঁড়ি এসব দিয়েও যে বিশ্বমানের ভাস্কর্য আমাদের দেশের মাটির মানুষরা বানান তারই ঝলক দেখাতেই কাজিনকে নিয়ে আসা। মুগ্ধ চোখে দেখতে দেখতে হুট করে সে থমকে দাঁড়াল বিশাল বড় এক ছবির সামনে। ছবিতে আছেন একজন ষাটোর্ধ নারী।
মমতাময়ী এক চেহারা তাঁর। চোখে গাঢ় করে কাজল টানা। তবে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো তাঁর কপালের সেই অনেক বড় টিপটি। কপাল যেন এক বিশাল লাল বৃত্তে ঢাকা পড়ছে। গলায় বাহারি মালা। আমার প্রবাসী কাজিন এমন রূপ কখনো দেখেনি। হাঁ হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে যখন সম্বিৎ ফিরে এলো তখন আমার কাছে জানতে চাইলো, “আপু, উনি কে?”
“ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী” আমি বললাম।
“বাহ! কি সুন্দর নাম।“ মুগ্ধতা তার এখনো কাটছেই না।
আমি একটু অবাক হয়েই বললাম, “তুই চিনিস না বুঝি?”
আমতা আমতা করে বলল, “ইয়ে মানে…আপু মনে পড়ছেনা ঠিক।“
“বিদেশে থেকে দেশকে তো দেখি ভুলতে বসেছিস!” হালকা ধমকের সুরে বললাম।
আমি বললাম, “উনি হচ্ছেন এক বীরাঙ্গনা। একজন গর্বিত বীরাঙ্গনা।“
“আপু, বীরাঙ্গনা মানেটা কি জানি?” লজ্জিত কণ্ঠে প্রশ্ন করল প্রবাসী বোনটা।
আমি বললাম,” ঠিক জানতাম! কিচ্ছু জানিস না তুই। দাঁড়া বলছি।“
২.
বীরাঙ্গনা মানে রণাঙ্গনের বীর নারী। মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের লক্ষ লক্ষ নিরীহ নারী যারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্ষিত, লাঞ্ছিত, নির্যাতিত হয় তারাই হচ্ছেন বীরাঙ্গনা। ১৯৭২ সালের ২২ আগস্ট বঙ্গবন্ধু তাঁদের বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি দেন।
কিন্তু স্বাধীনতার পর, স্বীকৃতি দেওয়া হলেও লোকচক্ষুর ভয়ে অনেক নারীই কিন্তু নিজেকে বীরাঙ্গনা ঘোষণা করেন নি। তাঁরা তাঁদের ’৭১ এর সেই দুঃসহ স্মৃতি নিজেরাই একা বহন করে নিয়েছিলেন বছরের পর বছর।
ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণীই প্রথম বীরাঙ্গনা যিনি সবার সামনে আসেন। সমাজের গোঁড়ামিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তিনি নিজেই স্বীকার করেন তিনি একজন বীরাঙ্গনা। পুরো দেশের সামনে তুলে ধরেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের সেই পাকিস্তানী বর্বরতার কথা।
হ্যাঁ, স্বীকৃতি পাওয়ার পরপরই তিনি তাঁর কথা জানাননি। সময় নিয়েছিলেন অনেক অনেক বছর। ১৯৯৯ সালে তিনি দেশকে অবগত করেন তাঁর বীরত্বের কথা। জানিয়ে দেন তিনি এক গর্বিত বীরাঙ্গনা। অবশ্য এর আগে তাঁকেও সহ্য করতে হয়েছিল অনেক অনেক মানসিক যন্ত্রণা, কষ্ট, অপমান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বীকৃতি দেওয়া হলেও সমাজের মানুষজনই যেন তাঁকে মেনে নিতে পারছিল না। কোনো শুভ কাজে তাঁকে রাখা হতো না, পেতেন না কোনো দাওয়াত।
“২৩ বছর বয়সে নির্যাতিত হওয়া এই বীরাঙ্গনা হুট করে কেন এত বছর পর নিজেকে বীরাঙ্গনা বললেন মাথায় একবারো প্রশ্ন আসে নি বুঝি?” জিজ্ঞেস করলাম বোনকে।
প্রবাসী বোনের চটপটে উত্তর, “ হ্যাঁ, হ্যাঁ আপু। এসেছে। বলো না কেন?”
আমি আবারো বলা শুরু করলাম।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এত বড় ত্যাগ এবং নির্যাতনের পরও যখন সমাজের মানুষজন তাঁর দিকে আঙ্গুল তুলতে কুণ্ঠাবোধ করছে না, তখন তিনি ভাবলেন আসলেই কি তাঁর কোনো দোষ ছিল? একটু যখন পরিণত বয়স হলো, তখন তিনি বুঝতে পারলেন তিনি নিরপরাধ। এবং তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে, তাঁর ত্যাগ সম্পর্কে জানানো উচিত। যদিও তিনি ভেবেছিলেন এতে করে তাঁর সন্তান, পরিবার, স্বামী সবই হয়তো ছাড়তে হতে পারে। তবুও তিনি ভয় পান নি। জানিয়েছিলেন সেই বর্বরতার কাহিনী। আর তিনি কি বলেছিল জানিস?
“নয়মাসের নির্যাতন আমাকে আসলে অনেক বেশি শিক্ষিত করেছে। যেমন করে মানুষ পড়াশোনা করে শিক্ষিত হয়, ডক্টরেট পায়। আমার মনে হয় এই নির্যাতনের পর্বটি নয়মাস আমাকে এত বেশি শিক্ষিত করেছে যে মানুষ কত অত্যাচারিত হতে পারে তারপরো যদি আমার মৃত্যু না ঘটে আমার তাহলে তারপরে হেঁটে যেতে আমার আর কোনো ভয় নেই।“
এরকম নির্ভীকতা নিয়েই তিনি এসেছিলেন জনসমক্ষে।
৩.
আমরা দুইবোন চুপচাপ ভাস্কর্য দেখছি । আমি নিশ্চিত আমার মতো আমার বোনের মাথায় এখন ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী ঘুরছে।
হুট করে নিরবতা ভেঙ্গে বোন বলে উঠলো, “ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী। নামটা খুব সুন্দর না আপু?”
“অনেক! কে রেখেছিস জানিস? রেখেছেন উনার নানা। সংস্কৃতিমনা এক পরিবারে জন্ম তাঁর। একদম উপমহাদেশের ভাগের সময় জন্মেছিলেন। সালটা ১৯৪৭। তারিখটা কি যেন! ওহ। ১৯৪৭ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি খুলনা শহরের নানাবাড়িতে জন্ম তাঁর। ঐ দেখ, ছবির নিচে তাঁর জন্মতারিখ দেওয়া।“
হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম সামনেই উনাকে নিয়ে ছোট্ট একটা বায়োগ্রাফি লেখা। বোনকে তো পড়তে বললামই সাথে সাথে আমিও নিজের মেমরিটাকে আরেকটু ঝালিয়ে নিলাম।
উনার শৈশবের কথা লেখা আছে তাতে।
বাবার নাম সৈয়দ মাহবুবুল হক এবং মায়ের নাম রওশন হাসিনা। ১১ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ছেলেবেলা কেটেছে বেশিরভাগ সময়েই নানাবাড়িতে। তাঁদের বাড়ির নাম ছিল “ফেয়ারি কুইন” বা পরীর রানি। খুলনার পাইওনিয়ার গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং খুলনার গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ডিগ্রি পাশ করেন। পরে ১৯৬৩ সালে খুলনার আগা খান স্কুলে চাকরি নিয়েছিলেন। সেই সালেই মাত্র ১৫ বছর ৬ মাস বয়সেই জেদের বসে ভালবেসে বিয়ে করলেন তিনি। খুব সুখের সংসার ছিল না। অভাব অনটন তো ছিলই। স্কুলের চাকরি ছেড়ে পাটকলে চাকরি নেন। পাশাপাশি স্বামীর অত্যাচারও কম সহ্য করতে হয় নি তাঁকে। তারপরো দমে যাননি তিনি। প্রাণপণে চেষ্টা করেছিলেন ঘর বাঁচানোর। পরে ১৯৭১ সালে তাঁর বিচ্ছেদ ঘটে। তখন তিনি তিন সন্তানের জননী। স্বামীর অত্যাচারে মুক্তি পেয়ে যখনই ভাবলেন নতুন জীবন শুরু করবেন তখনি দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। প্রত্যক্ষ করলেন পাকিস্তানিদের নৃশংসতা। পরবর্তীতে তিনি নিজেও শিকার হন পাকিস্তানিদের নির্যাতনের।
৪.
“আচ্ছা, আপু উনি ভাস্কর হয়ে উঠলেন কিভাবে সেটাই তো বুঝে উঠতে পারছিনা! উনি সংসার চালাতে পাটকলে চাকরি করতেন পরে কখন তিনি এই লাইনে আসলেন?” আমার বোনের চোখেমুখে কৌতূহল।
আমি বলা শুরু করলাম, “তার জন্য আরেকটু পিছনের কাহিনী বলতে হবে। মানে তাঁর ছোটবেলার কাহিনী। বলেছিলাম না তিনি সংস্কৃতিমনা পরিবারে বড় হয়েছেন? তাঁর পরিবারের অনেকেই কম বেশি লেখালেখি, গান এসব করতেন। দেখা যেত এক ঘরে ক্যারাম খেলা হচ্ছে, এক ঘরে লেখালেখি হচ্ছে। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক নাকি তাঁর বাসার কাছেই থাকতেন। তিনি নাকি অনেক আদর করতেন।
ছোটবেলায় স্কুলে থাকতে যখন শিক্ষক নগেন স্যার সবাইকে জীবনের লক্ষ্য লিখতে বললেন তখন তিনি লিখেছিলেন তিনি কণিকা বন্দোপাধ্যায় হতে চান। রবীন্দ্রনাথ পছন্দ করতেন। রবীন্দ্রশিল্পী হতে চেয়েছিলেন। আসলেই ছোটবেলা থেকেই তাঁর মনের মধ্যে শিল্পীমন যাকে বলে সেটা ছিল।
ভাস্কর্যের কাজ শুরু করেছিলেন ১৯৮৪ সালের দিকে। সমাজের নানারকম কুকথা, অভাব অনটন সবকিছু থেকে মন সরিয়ে নিয়ে তাঁর শিল্পীমনকে ঝালাই করা শুরু করলেন।“
আমার কথাকে থামিয়ে দিয়েই হুট করে বলা বোন বলল, “আপু দেখো! ঐখানে একটা ডকুমেন্টারি দেখানো হচ্ছে।“
আমরা ধীরে ধীরে গেলাম। শাড়ি পরে বেচারাটা হাঁটতে তেমন সুবিধা করতে পারছে না। তবুও যথাসম্ভম দ্রুতপায়েই যেতে লাগল।
বড় প্রজেক্টরে একটা ডকুমেন্টারি দেখানো হচ্ছে।
সোর্স : youtube.com
কর্মরত ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী। কপালে সেই পরিচিত বিরাট বড় লাল টিপ। তিনি একটা কাঠ খোদাই করছেন। খোদাই করতে করতেই বলছেন, “যখন দেশ স্বাধীন হলো, তখন আমার মনে হলো এই সমাজে আমি তেমন একটা সমাদৃত না। আমি যেন ঐ পরিত্যক্ত সামগ্রীগুলো (গাছের গুঁড়ির দিয়ে লক্ষ করে) আমারই মতই পরিত্যক্ত মানুষ।“
(সোর্স : thedailystar.net )
এভাবেই ডকুমেন্টারিটা চলছিল। আর আমরা মুগ্ধ চোখে দেখছি, একজন মাটির মানুষকে যিনি পরিত্যক্ত ঐ গাছের গুঁড়ি, কাঠ, হাড়ি, কলসি দিয়েই নিজের মনের কথা না বলা কথাগুলোকে ব্যক্ত করেন। এস এম সুলতান প্রথম তাঁর সৃষ্টিকর্মকে অনেক প্রশংসা করেন এবং তাঁর সৃজনশীলতা দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাই তিনি এস এম সুলতানকে তার কাজের ক্ষেত্রে বড় অনুপ্রেরণা মনে করেন। এবং সেই অনুপ্রেরণাকে মাথায় রেখেই তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন একের পর এক অনন্যসাধারণ সৃষ্টিকর্ম যদিও তিনি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেননি এই বিষয়ে। পরিত্যক্ত সামগ্রী তাঁর হাতের ছোঁয়ায় নতুন জীবন লাভ করে।
ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণীর সৃষ্টিকর্ম (সোর্স : thedailystar.net )
তাঁর এই কাজগুলো দেশে বিদেশে স্বীকৃত। ১৯৯৪ সালে তাঁর ভাস্কর্যের প্রথম প্রদর্শনী হয় বেঙ্গল ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে। পরে অনেকবার প্রদর্শনী হয়েছে।
২০১০ সালে তিনি পান সর্বচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা পুরস্কার। পুরস্কার পেতে নাকি তাঁর অনেক ভালো লাগতো। চাঁদের মঠ পদক, অনন্যশীর্ষ পদক পেয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থা তাঁকে দিয়েছেন হিউম্যান রাইটস এওয়ার্ড, YWCA থেকে পেয়েছেন সিলভার জুবলি এওয়ার্ড। ২০০৪ সালে রিডার্স ডাইজাস্ট ম্যাগাজিন তাঁকে “হিরো” খেতাবে ভূষিত করে। ২০১৬ সালে সরকার তাঁকে মুক্তিযোদ্ধার খেতাবে ভূষিত করেন।
৫.
আমরা ডকুমেন্টারিটা পুরো দেখলাম না। আমার প্রবাসী বর্তমানে বাঙ্গালী চেতনায় অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠা কাজিনের ইচ্ছা করছিল আরো কিছু ভাস্কর্য দেখবে। তাই আমরা সেটাই করছি।
হাঁটছি আর হাঁটছি।
“আচ্ছা আপু, এর পর কি উনি আর বিয়ে করেন নি?” বোনের প্রশ্ন।
“করেছিলেন তো! ১৯৭২ সালে আহসান উল্লাহ আহমদকে তিনি বিয়ে করেন। তিনি যখন জীবন সংগ্রামে ব্যস্ত তখন কর্মক্ষেত্রে তাঁর দেখা হয় আহসান উল্লাহ আহমদের সাথে। ভালো লাগা থেকেই বিয়ে। আর এতবছর তাঁর পাশে ছায়ার মতন তো তিনি ছিলেন। একদম বুড়ো বয়সেও নাকি তিনি নাকি যখন ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী কাজ করতেন তাঁর পাশে এসে বসে থাকতেন, তাঁর পথচলার একনিষ্ঠ সঙ্গী হয়ে।“
“বাহ! দারুণ তো!”
“প্রথমদিকে অভাব অনটন থাকলেও স্বামী সন্তান নিয়ে তাঁর বাকিজীবন ভালোই কেটেছে। তাঁর মোট ছয় সন্তান। তিনজন ছেলে, তিনজন মেয়ে। নামগুলো ও অনেক অনেক সুন্দর। কারু তিতাস, কাজী মহম্মদ নাসের, কাজী মহম্মদ শাকের (তূর্য্য), তিন মেয়ে-রাজেশ্বরী প্রিয়রঞ্জিনী, রত্নেশ্বরী প্রিয়দর্শিনী ও ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী। সুন্দর না নামগুলো?”
“ভীষণ! এই আপু, আমার না উনার সাথে দেখা করতে ইচ্ছা করছে খুব! তুমি একটা ব্যবস্থা করো না।“
“আমি কেন? এখন চাইলে কেউই আর সে ব্যবস্থাটা করতে পারবে না।“
“কেন?”
“মাত্র কয়েকমাস আগে। ৬ মার্চ কার্ডিয়াক এট্যাক হলে তিনি মারা যান। ’৭১ এর সেই বীরাঙ্গনা ৭১ বছর বয়সে ইহলোক ত্যাগ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজার পর তাঁকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।“
খেয়াল করলাম আমার বোনটার মন খারাপ হয়ে গেলো। কাঁধে হাত রেখে বললাম, “ বীরাঙ্গনাদের মৃত্যু হয় না কখনো। তাঁরা আমাদের মাঝে বেঁচে থাকেন। মন খারাপ করিস না।“
মাথা নেড়ে সায় দিল বোন আমার।
এবার যাওয়ার পালা। গেইটের দিকে পা বাড়াচ্ছি আমরা।
পিছন থেকে গান বেজে উঠল।
“তুমি রবে নীরবে…হৃদয়ে মম…”
রবীন্দ্রসংগীত। বড়ই ভালবাসতেন ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী।
আমি পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম, অল্প দূরে তাঁর যে বড় ছবিটা রাখা, সেখানে মোমবাতির আলোয় তাঁর কপালের বড় লাল টিপটা আরো জ্বলজ্বল করছে।
মনের মধ্যে কেমন যেন একটা শিহরণ জাগলো।
আমি আমার কপালের ছোট্ট টিপটা আছে কিনা একবার চেক করে দেখলাম। আর মনে মনে বললাম, “ওপারে ভালো থাকুন বীরাঙ্গনা।“
তথ্যসূত্র :
১।https://www.bbc.com/bengali/multimedia/2013/02/130216_an_ferdousy_priobhashini
২। https://www.youtube.com/watch?v=XMUwNuhqnnk
৩। https://www.youtube.com/watch?v=VCV6knmQ4_A
৪। http://ferdousypriyabhashiny.weebly.com/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন