পুরোটা পড়ার সময় নেই ? ব্লগটি একবার শুনে নাও !
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বিযনেস স্কুল এফবিএস ১৯ তম ব্যাচের ফিন্যান্স মেজরদের ফাইন্যাল রেজাল্ট বের হলো আজ (প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি বিযনেস স্কুল– একটি আইবিএ এবং অপরটি এফবিএস)। তাদের অনেকেই অলরেডি জব পেয়ে জয়েন করে ফেলেছে আর অনেকে ভাবছে জব পাওয়া নিয়ে কী করা যায়। অনেকে আবার এমবিএ করবে কি না এখানেই সেটা নিয়ে দ্বিধান্বিত। একজন এমপ্লয়ার হিসেবে, একজন সাবেক কর্পোরেট ম্যানেজার হিসেবে এবং সর্বোপরি বিযনেস স্কুলের একজন এলুমনাই হিসেবে তাই দুকথা বলাটা দায়িত্ব মনে করছি।
১। নিজের লক্ষ্যকে চিনে নাও
কোন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করব সেটা ঠিক করে ফেলাটা জরুরি। জব কোন করার জন্য করার জিনিস না। যেই জবে নিজের প্যাশন নাই, সেই জবকে জব–ই মনে হবে সারাজীবন, ভালোবাসার কাজ মনে হবে না। সুতরাং ইন্ডাস্ট্রি এবং জব ডেসক্রিপশন সম্পর্কে ভালোভাবে রিসার্চ করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য তৈরি করতে পারলে তবেই জবে লং-টার্ম এ একটি স্যাটিসফায়িং ক্যারিয়ার তৈরি করা সম্ভব হবে।
২। অন্যদের অনুসরণ না করে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাও
অমুক ভাই/আপু বিসিএস ক্যাডার হয়েছে/ব্যাংকের এমটিও হয়েছে তাই আমাকেও হতে হবে– এই মানসিকতাটা খুব ক্ষতিকারক। অন্যের কথা শুনে বা অন্যকে দেখে নিজের অপছন্দের বিষয়ে পড়তে এসে যারা হতাশ হয়েছো চার বছর, তাদের মতই অবস্থা হবে জবের বেলায় যদি এরকম করো।
৩। পছন্দের ক্ষেত্র সম্পর্কে ভালোমতো জেনে নেয়া
পছন্দের ইন্ডাস্ট্রি ফাইন্যাল হলে ওই ইন্ডাস্ট্রির টপ এমপ্লয়ার কারা এবং বিযনেস গ্রাজুয়েটদের জন্য সেখানে কী ধরণের জবের সুযোগ আছে সেটা নিয়ে একদফা খোঁজ দ্য সার্চ করে ফেলা। ডিপার্টমেন্টের/ফ্যাকাল্টির সিনিয়রেরা এ ব্যাপারে অত্যন্ত হেল্পফুল হবেন যদি তাঁদেরকে সঠিকভাবে এপ্রোচ করা যায়। মাথায় রাখতে হবে তাঁরা সকলেই অত্যন্ত ব্যস্ত মানুষ তাই এমন কোন কাজ করা যাবে না কিংবা এমন কোন কথা বলা যাবে না যাতে তাঁরা মনঃক্ষুণ্ণ হন।
৪। নিজের সিভি ঠিকঠাক রাখা
টপ এমপ্লয়ার কোথায় কোথায় এপ্লাই করা যাবে সেই তালিকা তৈরি করে সিনিয়রদের থ্রু নিজেদের সিভি গুলো এইচ আরে ফরোয়ার্ড করানোর ব্যবস্থা করা। সিনিয়রদের পাঠানোর আগে নিজের সিভি ভালোভাবে চেক করা কোন বানান বা গ্রামাটিকাল মিসটেইক আছে কিনা খেয়াল করার জন্য।
৫। ইন্ডাস্ট্রি বিষয়ক জ্ঞান অর্জন করা
তারপর তো ইন্টারভিউ তে ডাক আসলে এমপ্লয়ারের ওয়েবসাইট, বিযনেস ডিটেইলস, গত তিন বছরের পার্ফরমেন্স, এবং এমপ্লয়ার যে ইন্ডাস্ট্রিতে অপারেট করে সেই ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে ভালো আইডিয়া নেয়া প্রয়োজন। সাথে বাংলাদেশের ম্যাক্রোইকনমি নিয়ে আইডিয়া থাকলে তো সোনায় সোহাগা।
জব সার্চিং প্রসেসটা একটু সময়সাপেক্ষ
৬। ইন্টারভিউতে ড্রেস কোড মেনে যাওয়া
ইন্টার্ভিউতে কল পেলে এ সম্পর্কিত আদবকেতা, চেহারাসুরত, পোশাক-আশাক, চুল–দাড়ি এগুলো নিয়ে সচেতনভাবে প্রিপারেশান নিয়ে যাওয়া। তারপর ঠান্ডা মাথায় হাসিমুখে পুরো ইন্টার্ভিউটা হ্যান্ডল করা।
৭। এমবিএ নাকি কর্পোরেট জব?
পরিশেষে এমবিএ নাকি জব? আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো টিচিং বা রিসার্চে ক্যারিয়ার করতে না চাইলে আন্ডারগ্রাজুয়েটের পর-পরই এমবিএ না করাই ভালো। জবে জয়েন করে প্র্যাক্টিক্যাল এক্সপেরিয়েন্স ছাড়া এমবিএ করা আর অন্ধের হাতি দেখা একই কথা। তিন বছর পর জবের পাশাপাশি ভালো কোথাও (এফবিএস, আইবিএ কিংবা এনএসইউ ইত্যাদি) এক্সিকিউটিভ এমবিএ করে নিলে (লার্নিং পারস্পেকটিভে) অনেক ভ্যালু অ্যাড হবে বলেই আমার বিশ্বাস। তারপরও দিনশেষে এই সিদ্ধান্তটি একান্তই ব্যক্তিগত।

মাথায় রাখা ভালো যে জব সার্চিং প্রসেসটা একটু সময়সাপেক্ষ। সুতরাং হতাশ না হয়ে লেগে থাকলে আমার অভিজ্ঞতা বলে যে ইন্ডাস্ট্রিভেদে মাস চারেক/ছয়েকের ভেতরে অভীষ্ঠ লক্ষে পৌঁছানো কোন ব্যাপারই না।
সবাই অত্যন্ত ভালো কর্পোরেট ম্যানেজার, উদ্যোক্তা বা ক্যারিয়ার একাডেমিশিয়ান/রিসার্চার হও, এই কামনায় আজকের মত শেষ করছি।
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন