পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবারে শুনে নাও!
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি” অমর একুশে নিয়ে বাঙালির এমনই আবেগময় অনুভূতি। ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ ও ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ একই সুতোয় গাঁথা। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলা একাডেমীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত “অমর একুশে বইমেলা” বাংলাদেশের জাতীয় বইমেলা। সর্বপ্রথমে চিত্তরঞ্জন সাহার উদ্যোগে অনানুষ্ঠানিক বইমেলার আয়োজন করা হয়। এরপর থেকে বর্তমানে প্রচলিত থাকা ২১শে বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা।
বইমেলা নিয়ে বছরব্যাপী অনেক বই পড়ুয়ারই বেশ জল্পনা-কল্পনা থাকলেও, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে অনেকেই আত্মতৃপ্ত হতে পারে না। আবার এমন অনেকে আছেন, যারা ঢাকার বাহিরে থেকে বাংলা একাডেমীতে শুধুমাত্র বইমেলা থেকে বই কেনার জন্যই আসেন। এদিকে ফেব্রুয়ারি মাস ফুরালেই মেলা শেষ হয়ে যায়। তাই স্বল্প সময়ে কিভাবে সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে আপনি বইমেলা ঘুরে এবং বই কিনে আত্নতৃপ্তি পাবেন সে সম্পর্কিত কিছু তথ্য নিয়েই থাকছে আজকের লেখা। বইমেলায় যাওয়ার আগে জেনে নিন, মেলায় যাওয়ার পূর্বে আপনার কি কি বিষয় জানা থাকা উচিত।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
ঘরে বসে Spoken English
বই নির্বাচন:
বইমেলা শুরু হবার বেশ কিছুদিন আগেই পত্রিকায় কোন লেখকের কি বই বের হচ্ছে তা খবরের পাতার বাম কিংবা ডান দিকে, কখনো নিচের দিকে কিংবা পুরো পৃষ্ঠা জুড়েই বইয়ের নাম দেয়া হয়ে থাকে। বইমেলা শুরুর দুই তিন দিন আগে থেকেই পত্রিকায় চোখ রাখলে নতুন বছরে আপনার পছন্দের লেখকের কোন বই মেলায় আসছে সে সম্পর্কে আপনি স্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন। কোন লেখকের বই পড়বেন তা পাঠককে চিনিয়ে দেবার কোনো ব্যবস্থা নেই।
প্রকাশিত বইয়ের শুধুমাত্র চরিত্রগুলোর নাম পরিবর্তন করে, কিংবা স্থান, কাল পরিবর্তন করে আরো একটা নতুন বই বলে প্রকাশিত হচ্ছে অহরহ!
প্রকাশিত বইয়ের শুধুমাত্র চরিত্রগুলোর নাম পরিবর্তন করে, কিংবা স্থান, কাল পরিবর্তন করে আরো একটা নতুন বই বলে প্রকাশিত হচ্ছে অহরহ!
একটা বইয়ের প্রথম কয়েক পৃষ্ঠা নতুনভাবে লিখে পুরাতন বইয়ের হুবহু কাহিনীর সাথে যোগ করে, নতুন করে কভার ছেপে নতুন বই বলে চালিয়ে দেয়া হয়। প্রতিটা মানুষেরই পছন্দের লেখক থাকে। আপনার পছন্দের লেখকদের বই, মেলায় যাওয়ার আগেই পত্রিকা দেখে নির্বাচন করে রাখুন এবং কোথাও লিখে রাখুন। এতে মেলায় যেদিন যাবেন, সেদিন লেখকদের বই সম্পর্কে আপনার পূর্ব ধারণা থাকায় অনেক অনেক লেখকের বই দেখে কনফিউজড হবেন না।
আরো পড়ুন: হুমায়ূন আহমেদের যে বইগুলো না পড়লেই নয়
উপযুক্ত সময়:
যেহেতু পুরো ফেব্রুয়ারী জুড়েই বইমেলা চলে, তাই বইমেলায় যাওয়ার ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়টা বেছে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ! কারণ মেলা শুরুর প্রথম দিকে সব লেখকদের বই প্রকাশিত হয় না। যেহেতু বইমেলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে হয়, তাই যারা ঢাকায় থাকে তাদের জন্য বেশ কয়েকবার বইমেলায় যাওয়ার সুযোগ থাকে। তবে যারা ঢাকার বাহিরে থাকে তাদের জন্য বারবার মেলায় যাওয়াটা কষ্টসাধ্য। তাই সময় বুঝে মেলায় যাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
বইয়ের মূল্য:
একুশে বইমেলা থেকে বই কেনার একটি বড় সুবিধা হচ্ছে বইয়ের মূল্য স্বল্পতা। কারণ বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের লেখক ও প্রকাশকের মূল উদ্দেশ্য থাকে সর্বোচ্চ সংখ্যক বই বিক্রি। এক্ষেত্রে ক্রেতার বই কেনার সামর্থ্যে বিষয়টিও তাদের মাথায় রাখতে হয়। এছাড়া নির্ধারিত কয়েকটি বইয়ের দোকান ছাড়া বেশিরভাগ দোকানেই বইয়ের মূল্য দর-কষাকষির মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়। বইমেলায় বই কেনার ক্ষেত্রে যে বিষয়টা আপনার মাথায় রাখতে হবে, তা হল একটা বই ই বেশ কয়েকটা দোকান ঘুরে তারপর কিনুন। কারণ বইমেলায় প্রায় সব দোকানেই ডিসকাউন্ট দেয়া হয়। যেমন, কোনো দোকানে ৫% ডিসকাউন্ট দেয়া হয়, আবার কোনো দোকানে ১৫% ডিসকাউন্ট দেয়া হয়। তাই বেশ কিছু দোকান ঘুরে বই কিনলে আপনার বই কেনার অর্থ সাশ্রয় হবে।
‘বিরল’ বইয়ের সন্ধান:
বইমেলায় এমন অনেক বই পাওয়া যায়, যা সারা বছর অন্য কোথাও যেমন- বুকস্টল কিংবা ভ্রাম্যমান কোনো লাইব্রেরীতে পাওয়া যায় না। এমনই একটা বই হল জীবনানন্দ দাশের না ছাপা হওয়া কবিতার খাতা থেকে সংগৃহিত কবিতার বই “অপ্রকাশিত”। অশোকচন্দ্র গুপ্তের সহায়তায় ‘গৌতম মিত্র’ বইটি প্রকাশ করেন ২০০৪ সালে। ২০০৪ সালের বইমেলায় প্রকাশের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক বই ছাপা হয়েছিল সে বছর। এছাড়া বইমেলায় এমন আরও অনেক বই পাওয়া যায়, যা সাধারণত অনেক আগের পুরাতন কোনো বই কিন্তু নতুন প্রজন্মের সহৃদয়বান কোনো প্রকাশক বইমেলার জন্য অল্প সংখ্যক কয়েক কপি প্রকাশ করেন। তাই ইচ্ছ থাকলে এই সুবর্ণ সুযোগটি আপনিও লুফে নিতে পারেন!
থাকতে পারে পাইরেসি করা বই:
আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানি না যে, বইমেলাতেও নকল বই থাকে। পাঠকের এই ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরী।
নকল বই চেনার উপায়:
১।নকল বইয়ের ভেতরের পৃষ্ঠাগুলো অনেকটা ফটোকপির মত হয়। সেজন্য বই ভালো করে দেখে কিনতে হয়।
২।বইয়ের ভেতরে কোনো ছবি থাকলে সেই ছবিগুলো সাদাকালো হয়।
৩।আসল বইয়ের ভেতর মূল গল্প কিংবা উপন্যাস শুরুর আগে লেখক পরিচিতি কিংবা বইয়ের ভূমিকার কয়েক পৃষ্ঠা সাধারণত রঙিন হয় যা পাইরেসি করা বইয়ে হয়না।
সর্বোপরি, পাইরেসি করা বই চেনার উপরের দিকগুলো জানা থাকলে আপনি সহজেই আসল আর নকল বইয়ের পার্থক্য ধরতে পারবেন। বই পছন্দ হয়ে গেলে কিছু সময় বইটা উল্টে পাল্টে দেখুন। তাড়াহুড়ো করে কিনবেন না। তাড়াহুড়োর কোনো কাজই কখনো ভালো হয়না।
বইমেলায় বই কিনতে মূলত আমরা শখের বসেই যাই। আর শখটা আমরা লালন করি পুরো একটা বছর জুড়েই। বছর ঘুরে আবার ফেব্রুয়ারী মাস আসলে, আগে থেকে একটু পরিকল্পনা করে বইমেলায় গেলে একই সাথে বই কিনে আত্মতৃপ্তি আর আনন্দ দুটোই পাওয়া যায়। আর বইমেলা হল এক বিশাল পাঠক-লেখক সমাবেশ। হতে পারে, মেলায় গিয়ে ছোটবেলা থেকে বই পড়ে আসা আপনার কোনো পছন্দের লেখকের সাথে দেখাও হয়ে যেতে পারে। এর থেকে সুন্দর মুহূর্ত আর কি হতে পারে! বইমেলা থেকে বই কেনাটাকে কখনোই অর্থের অপচয় ভাববেন না। কোনো এক মনীষী বলেছিলেন, “বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয়্না।“ আর যেই বই ই পড়ুন না কেন আপনার মনের অজান্তেই জ্ঞান অর্জন প্রক্রিয়া কিন্তু অবিরাম চলছেই। আমেরিকার বিখ্যাত ঔপন্যাসিক George R. Martin বলেছিলেন,
A Reader lives a thousand lives, before he dies.
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- English Grammar Crash Course by Sakib Bin Rashid
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারেন এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন