আমরা যারা ঢাকায় থাকি, তাদের জন্য ঢাকা শহর ভালো না লাগার হাজারটা কারণ দেখানো যেতে পারে। তবে আমাদের মধ্যে যারা বইটই পড়তে বেশ পছন্দ করি, তাদের জন্য ঢাকা শহরকে ভালো লাগার ৭টি কারণ দেখাতে যাচ্ছি আমি।
যারা আসলেই বইয়ের মধ্যে ডুবে যেতে পারে তাদের বই পড়ার জন্যে স্থান-কাল বিবেচনায় না আনলেও চলে। তবে কালেভদ্রে এমনও হয় যে বাসার বিছানায় সোফায় টেবিলে অলসের মত পড়ে থাকতে আর ভাল্লাগছে না, মন চাইছে নতুন কোন একটা জায়গায় গিয়ে বই নিয়ে সময় কাটিয়ে আসি।
অন্তত আমার এমন হয়। ইউনিভার্সিটির ক্লাসের মাঝখানে ঘণ্টা দুয়েকের মত অবসর থাকলে আমি মাঝেমধ্যেই চলে যাই এই জায়গাগুলোর কোনো একটায়।
১। বাতিঘর, ঢাকা
এই জায়গাটা একদম নতুন বলা যায়। আমি যেদিন প্রথম গেলাম, তাদের কালেকশন দেখে ভিরমি খাবার জোগাড়। ৫০০০ স্কয়ার ফিটের এই বিস্তৃত জায়গাটায় ঢুকলে মনে হয় একটা প্রাসাদের মধ্যে ঢুকলাম, অনেকটা “বিউটি এন্ড দ্য বিস্ট” গল্পে বিস্টের লাইব্রেরিটা যেমন থাকে।
মার্বেলের গোল ছোট ছোট কিছু বসার টেবিল আর চেয়ার আছে, চাইলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয়া যেতে পারে ইংরেজি আর বাংলা বইয়ের বিশাল সম্ভারের মধ্যে, সংখ্যায় বলতে গেলে ১০,০০০ এরও বেশি লেখকের লেখা ১ লাখেরও বেশি বইয়ের মধ্যে।
ঠিকানা: ৭ম তলা, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবন, বাংলামটর, ঢাকা ১২০৫।
২। বেঙ্গল বই
নামটা শুনে আজকাল অনেকেই নাকমুখ কুঁচকায় কারণ এটা নাকি আজকাল বই পড়ার জায়গার থেকে বেশি ছবি তোলার জায়গা হয়ে গেছে। ঘটনা অনেকাংশে সত্যি। তবে আমার ধারণা এতদিনে ছবি-টবি তোলা শেষে জায়গাটা পুরনো হয়ে গেছে, তাই এখন ফটোগ্রাফার ও মডেলদের উৎপাতের চিন্তা না করে নিশ্চিন্তে বইটই পড়তে যাওয়া যেতে পারে।
ও হ্যাঁ, চা-কফির ব্যবস্থা আছে জায়গাটায়। আর ইয়ে, বাইরের বই নিয়ে ভিতরে ঢোকা নিষেধ।
ঠিকানা: ১/৩ ব্লক- ডি, লালমাটিয়া (ধানমন্ডি ২৭), ঢাকা ১২০৯।
৩। পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র
শাহবাগ মোড়ের জাতীয় জাদুঘর থেকে কিছুটা সামনে গেলেই চোখে পড়বে পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রের প্রবেশপথ। সুন্দর অরিজিনাল প্রিন্টের দেশি-বিদেশি বইয়ের প্রতি ঝোঁক থাকলে একবার ঘুরে আসার মত জায়গা।
আরও পড়ুন:
৫ টি অনন্য বই যা সফলদের জীবনে প্রভাব ফেলেছে!
কিন্ডল: বই পড়ার দারুণ এক বন্ধু!
বসে বসে পড়ার মত সুবিধা এখানে তেমন একটা ছিল না, তবে এখন বেশ ভালোই বই পড়ার মতো ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বইয়ের মত সুন্দর জিনিস হাতে ধরে দেখেও তো শান্তি! পকেটে টাকা থাকলে আরও বেশি শান্তি, যেটা না থাকার কারণে পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে গিয়ে আমি প্রায়ই নিজেকে বিমর্ষ অবস্থায় আবিষ্কার করি।
ঠিকানা: ভবন-৪, ২য় তলা, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর (আজিজ সুপার মার্কেটের উল্টো দিকে), শাহবাগ, ঢাকা – ১০০০।
সুন্দর ও দ্রুত বাংলা হাতের লেখা
এই কোর্সটি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে?
৪। দীপনপুর
ইংরেজিতে একটা শব্দ আছে “কোজি”, যেটার বাংলা করা হয়েছে “আরামদায়ক”, কিন্তু তাতে আমি কেন যেন “কোজি” শব্দটার সম্পূর্ণ নির্যাসটা পাইনা। দীপনপুরে গেলে “কোজি” শব্দটা বোঝা যায়।
বইয়ের জন্য ভালোবাসা থাকলে বার্ন্স এন্ড নোবেল দরকার হয়না আমাদের
ব্লগার ও প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের স্মৃতিরক্ষার্থে নির্মিত প্রায় তিন হাজার স্কয়ার ফিটের এই বুক ক্যাফেটিতে রয়েছে বিভিন্ন জনরার অসংখ্য বাংলা বই। বাচ্চাদের জন্যে একটা আলাদা কর্নারও আছে।
ঠিকানা: ২৩০, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা ১২০৫।
৫। পিবিএস
শান্তিনগরে প্রধান শাখাটি ছাড়াও ধানমন্ডি এবং উত্তরায়ও পিবিএসের আউটলেট রয়েছে। বই, সিডি-ডিভিডি, খাতা, কলম, নোটবই, রংপেন্সিল- যেকোনো কিছু কেনার জন্য বা দেখার জন্য ঘুরে আসা যেতে পারে। ঢাকার একদম শুরুর দিকের বুকশপগুলির একটা এই পিবিএস চেইন।
ঠিকানা: ৪৩, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সড়ক (পুরাতন শান্তিনগর ১৬), ঢাকা ১২১৭।
৬। নার্ডি বিন কফি হাউজ
বই এবং কফি- এই দুই বস্তুর কম্বিনেশন দিয়ে আমাকে দুনিয়া ভুলে যেতে বলা হলে আমি নিতান্ত বাধ্য সেবকের মত দুনিয়া ভুলে যাবো। নার্ডি বিন কফি হাউজটা হচ্ছে, বাই ডেফিনিশন, একটা কফি হাউজ। এখানে বই আছে এবং বই পড়ার পরিবেশ আছে, সেটা হচ্ছে একটা প্লাস পয়েন্ট। এই প্লাস পয়েন্টের সুবিধা যদি আমরা বইপোকারা না নেই, তাহলে আর কে নেবে?
ঠিকানা: আহমেদ এন্ড কাজী টাওয়ার, ভবন ৩৫, রোড নম্বর ২, ধানমন্ডি।
৭। নর্থ এন্ড কফি রোস্টার্স, ধানমন্ডি
নার্ডি বীন কফি হাউজের তিন তলা উপরে অবস্থিত নর্থ এন্ডের এই নতুন শাখাটিতে “বুকওয়ার্ম বাংলাদেশ” নামক একটি বইয়ের দোকানের আউটলেট রয়েছে। খুব শীঘ্রই সেটি খুলে দেয়া হবে।
নর্থ এন্ডের এই শাখাটি খুবই খোলামেলা এবং অনেকখানি জায়গা জুড়ে করা। কফি কিংবা ডেজার্ট নিয়ে আর একটা বই নিয়ে সময় কাটানোর জন্য সকাল ৭.৩০টা থেকে রাত ১০.৩০টার মধ্যে যেকোনো সময়ে চলে যাওয়া যেতে পারে এই কফিশপটিতে।
ঠিকানা: আহমেদ এন্ড কাজী টাওয়ার, ভবন ৩৫, রোড নম্বর ২, ধানমন্ডি।
এই কোর্সটি থেকে যা শিখবেন
সুন্দর ও দ্রুত ইংরেজি হাতের লেখা
এগুলো ছাড়াও বই পড়ার মত অনেক অনেক জায়গা চাইলেই খুঁজে পাওয়া যায় ঢাকার আনাচে কানাচে। পাবলিক লাইব্রেরি থেকে শুরু করে বাড়ির পাশের ছোট্ট বইয়ের দোকানটা, বইয়ের জন্য ভালোবাসা থাকলে বার্ন্স এন্ড নোবেল দরকার হয়না আমাদের।
হয়তো এইরকম বুকশপগুলোর কোন একটাতে বসেই আমরা ভবিষ্যতের ঢাকায় বার্ন্স এন্ড নোবেলের মত কিছু একটা বানানোর পরিকল্পনা করে ফেলবো। এমন কোন আইডিয়া বা ইচ্ছা থাকলে, বা বই সংক্রান্ত যেকোনো আলাপ আলোচনা থাকলে অবশ্যই আমাকে মনে করবার অনুরোধ রইল।
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Study Smart Course by Seeam Shahid Noor
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Course by Abtahi Iptesam
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
আপনার কমেন্ট লিখুন