ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে স্বাধীন জাতিসত্ত্বার বিকাশের লক্ষ্যে বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৯২১ সালে তদানীন্তন বৃটিশ সরকার ভারতে অক্সব্রিজ শিক্ষা ব্যবস্থা অনুসরণে পূর্ববঙ্গে স্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিগত ১০০ বছর ধরে বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে দক্ষ, যোগ্য ও মেধাবী মানবসম্পদ সরবরাহ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ নামটির সাথেই জড়িয়ে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে এ বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ অবদান রেখেছে। এখানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিশ্বের অন্যান্য নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্থক্য। যেখানে রাষ্ট্র ও সরকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি রাষ্ট্র ও সরকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরপরই ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ রাখা হয়। ইংরেজিতে একেই সংক্ষেপে বলা হয় ডাকসু। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার হল এই ডাকসু। বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে, বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ে এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে ডাকসুর অবদান অসীম।
প্রতিষ্ঠা ও নির্বাচন :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ এর সূচনা ১৯২৪ সালে। ১৯২২ সালের ১লা ডিসেম্বর কার্জন হলে অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের একটি সভায় ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ’ নামে একটি ছাত্র সংসদ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে ১৯২৩ সালের ১৯শে জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন নির্বাহী পরিষদ ছাত্র সংসদ গঠনের এ সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দেয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এক টাকা চাঁদা দিয়ে এ ছাত্র সংসদের সদস্য হতে হতো। এভাবেই যাত্রা শুরু হয় দেশের স্বাধিকার, ভাষার সংগ্রাম ও স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার ডাকসুর। ১৯২৪-২৫ সালে প্রথমবারের মত সম্পাদক ছিলেন যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত এবং পরের বছর অবনীভূষণ রুদ্র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
[ten_Ms_ad type=”banner” ad_id=”66769″]
১৯২৫ সালের ৩০ অক্টোবর সংসদের সাধারণ সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদ কর্তৃক অনুমোদনের পর তা কার্যকর করা হয়। পূর্বে ছাত্র সংসদের ভিপি মনোনীত পদ ছিল। ১৯২৪-২৫ সালে প্রথম ডাকসুর ভিপি মনোনীত করা হয়। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্রে বিশাল পরিবর্তন আসে। গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ’ পরিবর্তন করে বর্তমান নাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ রাখা হয়। গঠনতন্ত্রে প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচনের উল্লেখ করা হয়। ১৯৫৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোটে ডাকসুর প্রথম নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়। সরাসরি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোটে ডাকসুর প্রথম ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) হিসেবে নির্বাচিত হন এস এ বারী এটি এবং জিএস (জেনারেল সেক্রেটারি) হিসেবে নির্বাচিত হন জুলমত আলী খান।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ডাকসুর ভিপি ছিলেন আ সম আব্দুর রব। সে সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আবদুল কুদ্দুস মাখন। সেসময়কার ডাকসুর নেতৃবৃন্দের সাহসী ও বলিষ্ঠ উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেসময়কার ডাকসুর ভিপি জনাব আ স ম আবদুর রব স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ডাকসুর ভিপি ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ডাকসুর ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির এ নেতা। এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসেবে নির্বাচিত হন মাহবুবুর জামান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে মোট ৩৬ বার ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৮ বছরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৭ বার। ডাকসুর সবর্শেষ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয় আজ থেকে ২৮ বছর আগে ১৯৯০ সালে। ১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসুর ১৮ টি আবাসিক হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৯০ সালের এ ডাকসু নির্বাচন ছিল ৭ম নির্বাচন। ডাকসুর সর্বশেষ এ নির্বাচনে ডাকসুর ২০ টি পদে ৪৮৯ জন এবং ১৪টি পদে ১০৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৬ শ ৯০ জন। এর মধ্যে ভোট প্রদান করেন ১৮ হাজার ৩৪ জন। সর্বশেষ এ নির্বাচনে ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হন আমান উল্লাহ আমান ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসেবে নির্বাচিত হন খায়রুল কবির খোকন।
এরপর নানা কারণে ও প্রশাসনের অনীহায় ঐতিহ্যবাহী এ ডাকসু নির্বাচন আর অনুষ্ঠিত হয় নি। বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেই নির্বাচন আর হয়নি। এর মাঝে ১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ততকালীন উপাচার্য একে আজাদ চৌধুরী ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়ে তারিখ ঘোষনা করলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০০৫ সালের মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ ঐ বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তৎকালীন ছাত্রসংগঠন গুলো আগ্রহ দেখালেও ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নি। পররবর্তীতে ২০০৯ সালে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পরও ডাকসু নির্বাচনের জোর দাবি ওঠে। এ নিয়ে আদালত পর্যন্ত দাবি গড়ায়। কিন্তু নির্বাচন আর অনুষ্ঠিত হয় নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ভবন; image source: independent BD
ডাকসুর নেতৃবৃন্দ
ক্রমিক | সাল | সহসভাপতি | ছাত্র সংগঠন | সাধারণ সম্পাদক | ছাত্র সংগঠন |
১ | মমতাজ উদ্দিন আহমেদ | যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | |||
২ | ১৯২৮-২৯ | এ এম আজহারুল ইসলাম | এস চক্রবর্তী | ||
৩ | ১৯২৯-৩২ | রমণী কান্ত ভট্টাচার্য | কাজী রহমত আলী ও আতাউর রহমান | ||
৪ | ১৯৪৭-৪৮ | অরবিন্দ বোস | গোলাম আযম | ||
৫ | ১৯৫৩-৫৪ | এস. এ. বারী | জুলমত আলী খান ও ফরিদ আহমেদ | ||
৬ | ১৯৫৪-৫৫ | নিরোদ বিহারী নাগ | আব্দুর রব চৌধুরী | ||
৭ | একরামুল হক | শাহ আলী হোসেন | |||
৮ | বদরুল আলম | মো. ফজলী হোসেন | |||
৯ | আবুল হোসেন | এটিএম মেহেদী | |||
১০ | ১৯৫৭-৫৮ | আমিনুল ইসলাম তুলা | আশরাফ উদ্দিন মকবুল | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | |
১১ | বেগম জাহানারা আখতার | অমূল্য কুমার | |||
১২ | এস এম রফিকুল হক | এনায়েতুর রহমান | |||
১৩ | ১৯৬২-৬৩ | শ্যামা প্রসাদ ঘোষ | কে এম ওবায়েদুর রহমান | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | |
১৪ | ১৯৬৩-৬৪ | রাশেদ খান মেনন | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | মতিয়া চৌধুরী | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন |
১৫ | বোরহান উদ্দিন | আসাফুদ্দৌলা | |||
১৬ | ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | শফি আহমেদ | ||
১৭ | মাহফুজা খানম | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | মোরশেদ আলী | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | |
১৮ | তোফায়েল আহমেদ | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | নাজিম কামরান চৌধুরী | ||
১৯ | আ স ম আব্দুর রব | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | আব্দুল কুদ্দুস মাখন | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | |
১৯ | ১৯৭২-৭৩ | মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | মাহবুবুর জামান | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন |
২০ | ১৯৭৯ | মাহমুদুর রহমান মান্না | জাসদ-ছাত্রলীগ | আখতারুজ্জামান | জাসদ-ছাত্রলীগ |
২১ | ১৯৮০ | মাহমুদুর রহমান মান্না | বাসদ-ছাত্রলীগ | আখতারুজ্জামান | বাসদ-ছাত্রলীগ |
২২ | ১৯৮২ | আখতারুজ্জামান | বাসদ-ছাত্রলীগ | জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু | |
২৩ | ১৯৮৯-৯০ | সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | মুশতাক হোসেন | |
২৪ | ১৯৯০-৯১ | আমান উল্লাহ আমান | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল | খায়রুল কবির খোকন | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল |
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন ২০১৯:
২০০৯ সালে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পর ডাকসু নির্বাচনের জন্য জোর দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বাস দিলেও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ আগ্রহ না থাকায় আদালতের শরণাপন্ন হন কজন শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন ডাকসু নির্বাচন বন্ধ থাকায় ২০১২ সালের ১১ই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ শিক্ষার্থী ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। এর মাঝে ২০১৭ সালের ৪ঠা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডাকসু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। এদিকে ২০১৭ সালে ২৫শে নভেম্বর থেকে ৯ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনশন করেন সমাজকল্যাণ অনুষদের ছাত্র ওয়ালিদ আশরাফ। ২০১২ সালের ১১ই মার্চ দাখিলকৃত সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশের উচ্চ আদালত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ডাকসু নির্বাচনের নির্দেশ দেয়।
উচ্চ আদালতের আদেশের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচন আয়োজনের কোন দৃশ্যমান সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না। এর ফলে উচ্চ আদালতের আদেশের পরও কেন ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে না সে বিষয়ে ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিস পাঠান মনজিল মোরসেদ।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন জবাব না পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর উপাচার্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন তিনি। অবশেষে উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে ২০১৮’র ১৬ই সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে ঘোষণা দেয় যে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে ১১ মার্চ সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষিত সেই ডাকসু নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে হয়। ২৮ বছর পর আসন্ন ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ডাকসুর গৌরব ও অবদান:
ডাকসু নেতা আসম আব্দুর রব কর্তৃক ২ মার্চ সর্বপ্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে ১৯৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। ডাকসু ভবনের নিচতলায় অবস্থিত ডাকসু সংগ্রহশালা বাংলাদেশ রাষ্ট্রে ডাকসুর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ধারণ করে রেখেছে।
ডাকসু সর্বদা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে ডাকসুর প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। ডাকসুকে বাংলাদেশের রাজনীতির সূতিকাগার বলা হয়ে থাকে। ডাকসুর নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র নেতারাই পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে এ দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছে। দীর্ঘদিন ডাকসু নির্বাচন বন্ধ থাকায় জাতীয় রাজনীতিতে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট দেখা দিয়েছে। যোগ্যতাসম্পন্ন ছাত্র বান্ধব নেতার অনুপস্থিতিতে রাজনীতিতে শিক্ষার্থীদের এক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
২৮ বছর পর অবশেষে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। ঐতিহাসিক ও গৌরবোজ্জ্বল সেই ডাকসু আবার ফিরে আসুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং বাংলাদেশের বুকে। আজকের মেধাবী যোগ্য ছাত্র নেতারাই এ ডাকসুর মাধ্যমে একদিন বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনার হাল ধরুক সেই কামনাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন