পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবারে শুনে নাও!
ছোটবেলা থেকেই আমাদের মনে অনেক ইচ্ছা থাকে, বিজ্ঞানের নানা এক্সপেরিমেন্ট করার। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় এসব করার যে উপকরণ, সেগুলো খুঁজে পাওয়াই যায় না। আর আমাদের ভবিষ্যত বিজ্ঞানী হবার আশাটা সেখানে কুঁড়িতেই বিনষ্ট হয়ে যায়, আমাদের আর বিজ্ঞানী হয়ে ওঠা হয় না।
নতুন প্রজন্ম যাতে এই হতাশার মধ্যে দিয়ে না যায়, এইজন্যেই বিজ্ঞান বাক্সের আবির্ভাব। বিজ্ঞান বাক্সকে বলা যায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্যে সাক্ষাৎ জাদুর কাঠি! দারুণ কাজের এই বিজ্ঞান বাক্স নিয়েই এই লেখাটি।
রসায়ন রহস্য
রসায়ন রহস্য বিজ্ঞানবাক্সটি তৈরি হল কেন?
সেদিন সারাহ নামের ক্লাশ সিক্সে পড়া এক মেয়ের লাভা ল্যাম্পের এক্সপেরিমেন্টের ছবি দেখলাম। ক্লাশ সিক্সে রসায়ন তেমনভাবে পড়ানোই হয় না, অথচ সে ঠিকঠিক জানে, কীভাবে এই অদ্ভুত সুন্দর বিক্রিয়াটি করা যায়!
রসায়ন নিয়ে সবার ভেতরেই একটা অন্যরকম কৌতূহল এবং ভীতি কাজ করে। কিন্তু বাচ্চাদের তো রসায়ন ল্যাবের ধারেকাছে যাওয়ার কোনো সুযোগই নেই! অথচ আমাদের চারপাশের খুব সাধারণ বস্তু দিয়েই যে কত অসাধারণ দৃশ্য তৈরি করা যায়, তা রসায়ন ছাড়া আর কে পারবে এত ভালোভাবে বোঝাতে? ফুড কালার, সোয়াবিন তেল আর ক্যালবো সি ট্যাবলেট দিয়ে যখন লাভা ল্যাম্প তৈরি করে তার অসাধারণ সৌন্দর্য দেখবে, ভালো লাগবে না আপনার? কিংবা যখন দুধের মধ্যে রংধনু তৈরি করবে, বা আলু দিয়ে জ্বালাবে বাতি! রসায়নের এই অসাধারণ সৌন্দর্যের সাথে পরিচিত করে দেয়ার জন্যেই রসায়ন রহস্য।
রসায়ন রহস্যের উপকরণ সমূহ
রাবারের বল, ফুড কালার, ডিশ ক্লিনার, গ্লিসারিন, বিকার, ক্যালবো সি ট্যাবলেট, কপার সালফেট, মোমবাতি, প্লাস্টিক ড্রপার, বেকিং পাউডার আরো অনেক কিছু। তবে রসায়নের সব উপকরণ তো আর বক্সে দেয়া সম্ভব না, তাই সংগ্রহ করে নিতে হবে পানি, তেল, কোক, দুধ, কিসমিস, আলু; আরো কিছু জিনিস।
কী কী করা যায় এগুলো দিয়ে?
ফুঁ না দিয়েই বেলুন ফোলানো, কিশমিশকে নাচানো, দুধের মধ্যে রংধনু বানানো, লাভা ল্যাম্প তৈরি করা, , হারানো কয়েন উদ্ধার করা, তড়িৎ দিয়ে লবণ ভাঙা, কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস সনাক্ত করা এমন মোট ২০টি এক্সপেরিমেন্ট আছে রসায়ন রহস্যে।
অনেকের কাছে রসায়ন কঠিন, এবং বোরিং লাগে। কিন্তু রসায়ন যে কতটা মজার আর ম্যাজিকাল এটা বুঝতে লাগবে রসায়ন রহস্য বিজ্ঞানবাক্সটি। ২০টি এক্সপেরিমেন্টের প্রতিটিতেই আছে বিস্ময়ের উপাদান!
তড়িৎ তাণ্ডব
মিতিন যেদিন নিজে নিজে ছোট্ট একটা ফ্যান বানিয়ে তার মাকে বাতাস দিলো, তখন সে যে আনন্দটা পেয়েছিলো, তা হয়তো বা আলেকজান্ডার গ্রাহামবেলের টেলিফোন আবিষ্কারের মুহূর্তটার চেয়ে কম ছিলো না! কারণ মিতিনের বয়স মাত্র ৫!
আমাদের ভবিষ্যত বিজ্ঞানীরা এভাবেই নিজে থেকে কিছু তৈরি করুক, যা সবার কাজেও লাগবে! কচি কচি দুটো হাতে যখন মোটর, ব্যাটারি আর সুইচের কানেকশন দিয়ে ফ্যান তৈরি করে শরীরে হাওয়া দেবে, বাজার দিয়ে শব্দ সংকেত বানিয়ে শোনাবে, কেমন লাগবে বলুন তো? আপনাকে যখন গম্ভীর মুখে সিরিজ আর প্যারালাল কানেকশনের পার্থক্য বোঝাবে আপনার ছোট ভাই, মনটা আনন্দে ভরে উঠবে না? তড়িৎ এর এসব প্রাথমিক ধারণা ছোটবেলা থেকেই জানা থাকলে ভবিষ্যতে পথ চলাটা সহজ হবেই।
তড়িৎ তান্ডবের উপকরণ সমূহ
জেমস ক্লিপ, ক্রোকোডাইল ক্লিপ, পুশ পিন, এল ই ডি (LED), এল ডি আর (LDR), প্লাস্টিক উড, কপার দণ্ড, থার্মিস্টর, জেনার ডায়োড, ক্যাপাসিটর, রিং ম্যাগনেট, কার্ডবোর্ড, বেলুন ইত্যাদি।
কী কী করা যায় এগুলো দিয়ে?
ফল মূল অথবা শাকসবজি দিয়ে লাইট জ্বালানো, চুল দিয়ে বেলুন ঘষে ভেতরে স্থির তড়িৎ তৈরি করে তা দিয়ে পানির ধারাকে বাঁকানো, পরিবর্তনশীল রোধের সূত্র ব্যবহার করে লাইট দিয়ে লাইট জ্বালানো, সরল বর্তনীর সূত্র প্রয়োগের মাধ্যমে শব্দ সংকেত তৈরি, সিরিজ ও প্যারালাল কানেকশন বানাতে শেখা, ইত্যাদি। এমন মোট ২০টি এক্সপেরিমেন্ট রয়েছে।
বিশেষ ছাড়ে বিজ্ঞানবাক্সের সেট কিনতে চলে যাও এই লিংকে!
এই লেখাটির অডিওবুকটি পড়েছে লুবাবা জারিন অহনা।
আপনার কমেন্ট লিখুন