“ইউনিভার্সিটিতে কোন পড়ার চাপই নাই, শুধু আড্ডা, মাস্তি আর ঘুরাঘুরি”- কোন এক বড় ভাইয়ের কাছে এই কথা শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠার পর বিপুল উৎসাহ নিয়ে আমি পড়ালেখা করা এক রকম ছেড়েই দিয়েছিলাম। প্রথম সেমিস্টারে সহজ কোর্সের কারণে মোটামুটি ভালোমত পার পেয়ে গেলেও গোলটা বাঁধে দ্বিতীয় সেমিস্টারে। পুরো সেমিস্টার জুড়ে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ানোর পর সেমিস্টার ফাইনালের মুখোমুখি হয়ে দেখি বিশাল সিলেবাস। রাতজাগা মাস্ট।
কিছু করার নেই। একটা ছোটখাট সিজিপিএ তো লাগবেই। শুরু করলাম কোমর বেঁধে পড়াশোনা। কিন্তু যতই কোমর বেঁধে পড়ি না কেন, বিশাল সিলেবাস শেষ করা তো চাট্টিখানি কথা নয়। প্রায়ই দেখা যেত রাত জেগে পড়তে হচ্ছে। সেই পড়াও ঠিকমত হত না ঘুমের কারণে। তখনই খোঁজা শুরু করলাম ঘুম তাড়ানোর উপায়। পেয়েও গেলাম কিছু।
বেশি রাত জাগা যদিও আমি সমর্থন করি না, তবে মাঝেমাঝেই আমাদের রাত জাগতে হয় কোন না কোন কারণে। আর তাই রাত জাগার কিছু উপায় তোমাদের সাথে শেয়ার করছি। যদি মাঝেমাঝে রাত জাগতে হয় তাহলে এগুলো চেষ্টা করে দেখতে পার।
মেডিকেল এডমিশন কোর্স ২০২২
কোর্সটিতে যা যা থাকছে
১। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম:
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। অর্থাৎ তুমি যদি প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমাও তাহলে বলা যাবে যে, তোমার পর্যাপ্ত ঘুম হয়েছে।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্ক ক্লান্ত থাকে, সেই সাথে অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গও ক্লান্ত থাকে। ফলে রাত হলেই মস্তিষ্ক তোমাকে ঘুমিয়ে পড়তে বলে। এই অবস্থায় যদি তুমি রাত জাগতে চাও তাহলে তা প্রায় অসম্ভব। আর যদি জাগতেও পার, যে কাজটা তুমি করবে তা ঠিকমত হবে না।
কিন্তু যদি তুমি মস্তিষ্ককে চাহিদা অনুযায়ী ঘুম দিতে পার, অর্থাৎ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাও তাহলে প্রয়োজনের সময় মস্তিষ্ক অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে পারবে। অর্থাৎ একদিন বা দুইদিন একটু দেরিতে ঘুমাতে গেলে তেমন কোন সমস্যা হবে না। আর তাই যদি মাঝেমাঝে রাত জাগতে চাও তাহলে প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম হওয়া জরুরি।
২। ব্যস, একটুখানি কফি:
কফি যে আমাদের রাত জাগতে সহায়তা করে, তা আমরা প্রায় সবাই জানি। তাই রাত জাগার প্রয়োজনে একটুখানি কফি খাওয়া যেতেই পারে। আমাদের মস্তিষ্কের যেসকল রাসায়নিক পদার্থ আমাদের ঘুম পাড়াতে চায়, কফি গিয়ে সেগুলোর কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। আর তাই, আমাদের সহজে ঘুম পায় না।
কফি খুব দ্রুত কাজ করে এবং আমাদের বেশ কিছুক্ষণ জাগিয়ে রাখে। তবে যে জিনিসটা তোমাদের খেয়াল রাখতে হবে, তা হল, খুব বেশি কফি পান করা যাবে না। অতিরিক্ত পরিমাণে কফি পান করা আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
৩। পড়ার সময় হেঁটে বা দাঁড়িয়ে পড়া:
যদি পড়ার জন্য রাত জাগো, তাহলে এই উপায়টা চেষ্টা করে দেখতে পার। চেয়ার-টেবিল বা বিছানায় বসে পড়তে গেলে ঘুমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
কিন্তু বই হাতে নিয়ে হেঁটে হেঁটে বা দাঁড়িয়ে পড়লে ঘুমানোর কোন উপায় থাকে না। যদিও ব্যাপারটা কারো কারো কাছে একটু বিরক্তিকর লাগে, তবু এই পদ্ধতিটা কিন্তু অনেক কাজে দেয়।
তাই যদি রাত জাগো পড়ার জন্য, তাহলে বইটা হাতে নিয়ে রুমে হেঁটে হেঁটে পড়তে পার। এতে রাত জাগাও হবে, আবার পড়ার ধরণে নতুনত্ব আসবে।
৪। চিউয়িং গাম চিবানো:
শুনতে একটু কেমন যেন লাগলেও, চিউয়িং গাম আমাদের ঘুমকে দূরে রাখতে কাজ করে। এটি হচ্ছে মস্তিষ্ককে ধোঁকা দেয়ার একটি পদ্ধতি।
যখন তুমি চিউয়িং গাম খাবে তখন তোমার মুখ অনবরত নড়তে থাকবে। এতে করে তোমার মস্তিষ্ক মনে করবে, তুমি এখনো যথেষ্ট কর্মক্ষম আছ। তাই এটি অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে ঘুমিয়ে পড়তে বাধা দেবে।
রাতজাগার আরেকটা সহজ উপায় হচ্ছে পানি পান করা
এছাড়াও চিউয়িং গাম খাওয়া আমাদের রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। ফলে আমাদের দেহ কর্মক্ষম থাকে। চিউয়িং গাম-এর আরেকটি কার্যকর সুবিধা হচ্ছে, এটি কোন কাজে ফোকাস ধরে রাখতে সহায়তা করে।
৫। কাজ শুরুর আগে একটা ছোট ঘুম:
কোন কাজের আগে বা কাজের মাঝখানে একটু সময়ের জন্য ঘুমিয়ে নেয়াকে বলা হয় ন্যাপ (NAP)। এর মাধ্যমে মস্তিষ্ক একটু বিশ্রাম পায় এবং ঠিকমত কাজ করতে পারে।
রাত জাগার আগে এই একটু সময়ের জন্য ঘুমিয়ে নিলে তা আমাদের রাত জাগতে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, পড়ার আগে একটু ঘুমিয়ে নিলে পড়া মনে রাখাও সহজ হয়। তাই তুমি যদি পড়ার জন্য রাত জাগতে চাও, তাহলে তার আগে ২০-২৫ মিনিটের জন্য একটু ঘুমিয়েও নিতে পার।
তবে খেয়াল রেখো, এই একটু ঘুম যেন পুরো রাত কাবার করে না দেয়। তাহলে কিন্তু রাত জাগা আর হবে না।
৬। হালকা খাবার খাওয়া:
রাত জাগার আরেকটি উপায় হচ্ছে হালকা কিছু খেয়ে নেয়া। ভারী খাবার আমাদের ঘুম ডেকে আনে, কিন্তু হালকা খাবার খেলে ঘুমের হাত থেকে বেঁচে থাকা যায়। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, সেই হালকা খাবারটি যেন স্বাস্থ্যকর কিছু হয়।
সামান্য কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নিলে তা তোমার শরীরকে সক্রিয় রাখবে। এর ফলে তোমার মস্তিষ্ক মনে করবে, তুমি কর্মক্ষম আছ। আর এটি অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে ঘুমোতে দেবে না। আরো ভালো ফলাফল পেতে চাইলে এমন কিছু খাও যেটি তোমার শক্তি বাড়াবে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াবে।
কোর্সটিতে শিক্ষার্থীরা পাবে:
HSC 23 শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কোর্স (বিজ্ঞান বিভাগ)
এই উপায়গুলো ছাড়াও রাতজাগার আরেকটা সহজ উপায় হচ্ছে পানি পান করা এবং একটু পরপর পানি দিয়ে মুখ ধোয়া, বিশেষ করে ঠান্ডা পানি দিয়ে। এটি আমাদের শরীরকে সতর্ক ও জাগ্রত রাখে।
আমি আবারও বলি যে, অতিরিক্ত রাতজাগা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু যদি আমার মত এমন চাপে পড়ে যাও যে অনেক দিনের পড়া কয়েকদিনে শেষ করতে হয়, তাহলে তো রাত জাগতেই হবে। তখন কাজে লাগাতে পার এই উপায়গুলো।
আর একটি কথা, যেদিন রাত জাগবে, তার পরদিন সেই রাতজাগাটা পুষিয়ে নেয়ার জন্য পরের দিন অথবা রাতে একটু বেশি ঘুমাতে ভুলো না। নাহলে রাতজাগার প্রভাব থেকেই যাবে বেশ কিছুদিন আর পরেরবার রাত জাগতেও কষ্ট হবে।
আমাদের কোর্সগুলোর তালিকা:
- Communication Masterclass by Tahsan Khan
- Facebook Marketing Course by Ayman Sadik and Sadman Sadik
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
- ঘরে বসে Spoken English Course by Munzereen Shahid
- Study Smart Course by Seeam Shahid Noor
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- Microsoft Word Course by Sadman Sadik
- Microsoft Excel Course by Abtahi Iptesam
- Microsoft PowerPoint Course by Sadman Sadik
আপনার কমেন্ট লিখুন