পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবার শুনে নাও।
“নতুন বছর” কথাটা বেশ ভাবনা জাগায়; বছরটা নতুন হলেও তুমি মানুষটা যে পুরোনো হয়ে যাচ্ছো! পেছন ফিরে একবার তাকিয়ে দেখো, গতবছর কেমন কেটেছে তোমার? যে ভুলগুলো করেছিলে সেগুলো শুধরে নিতে পারবে তো এবার?
ক্যালেন্ডারের পাতা কিন্তু উল্টে চলেছে, এত্তো ছোট্ট একরত্তি জীবনে আক্ষেপ, গ্লানি, হতাশা নিয়ে বেঁচে থাকার কোন মানে হয়না। নতুন বছর মানে আরেকটি নতুন সুযোগ, নিজেকে আরো যোগ্য করে গড়ে তোলার, স্বপ্নকে সত্যি করার পথে এগিয়ে যাওয়ার।
আমরা সবাই নতুন বছরে নানারকম প্ল্যান করি। কিন্তু পরিসংখ্যান বলে, পৃথিবীর ৯৫% মানুষ সেই প্ল্যান গুলো নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মাথায়ই ভন্ডুল করে ফেলে! তাই আমরা খুব কঠিন কোন প্ল্যান তৈরি করবো না, একদম সহজ ১০টি প্ল্যান নিয়ে কথা বলবো যেগুলো প্রতিদিন অনুসরণ করলে বছরশেষে তুমি সাফল্যে নিজের কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারবে!
প্রতি মাসে একটি বই
বিল গেটসকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “আপনি একজন সুপারহিরো হলে কোন সুপার পাওয়ারটি চাইতেন?” তিনি বললেন, “আমি আরো দ্রুত বই পড়ে শেষ করার ক্ষমতা চাইতাম!”
বিল গেটস একা নন, পৃথিবীর বেশিরভাগ সফল মানুষদের এই একটি জায়গায় দারুণ মিল, তাঁরা সবাই প্রচুর পরিমাণে বই পড়েন!
আমরা যদি প্রতি মাসে অন্তত একটি করেও বই পড়ি, তাহলেও কিন্তু বছরশেষে ১২টি বই পড়া হয়ে যাবে আমাদের। ১২টি ভাল বই আমাদের জীবনে চলার পথটাকে করে তুলতে পারে অনেক সমৃদ্ধ।
প্রশ্ন আসতে পারে, “ভাল বই” বলতে কী বুঝানো হয়েছে? খুব সহজ করে বললে, তুমি এখন যেমন আছো, বইটি পড়ে শেষ করার পর তুমি একদম অন্যরকম একটি মানুষ হয়ে যাবে বইটি তোমাকে এতটাই প্রভাবিত করবে! জীবনে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে, দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করে, নতুন আঙ্গিকে ভাবতে শেখায় এমন বইগুলোই আমাদের পড়া উচিত। সেটি হতে পারে মহৎ কোন ব্যক্তির জীবনী, জীবনবোধ সমৃদ্ধ সাহিত্য কিংবা শিক্ষামূলক কিছু।
সোশাল মিডিয়াকে ‘না’ বলো
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭ সালে বিশ্বজুড়ে মানুষ প্রতিদিন গড়ে আড়াই ঘণ্টা সময় সোশাল মিডিয়ায় কাটিয়েছে, অর্থাৎ আমরা প্রতি মাসে ৭৫ ঘণ্টা বা পুরো তিনদিন (মাসের দশভাগের একভাগ সময় শুধু মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কাটাই। বিশ্বাস হয়?!) ফেসবুক-ইউটিউব-হোয়াটসঅ্যাপ এগুলো নিয়েই পড়ে থাকি যার সিংহভাগ সময়ই ব্যয় হয় একদম অনর্থক সব কাজে!
তাই আমরা যদি প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটা দিন সোশাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকি (একদম প্রয়োজন থাকলে ভিন্ন কথা, কিন্তু আমাদের বেশিরভাগেরই একদিন ফেসবুকে না ঢুকলে এমন কোন ক্ষতি হয়ে যাবে না!)
এবং সময়টা পরিবারের সাথে কাটাই, রান্নাবান্না-বাজার করা ইত্যাদি কাজে সাহায্য করি তাহলে শরীর-মন থাকবে চনমনে, পারিবারিক বন্ধনও হবে আরো হৃদ্যতাপূর্ণ। সবচেয়ে বড় কথা- ফেসবুক আসক্তির মতো ভয়ংকর অসুখ হওয়ার কোন চান্সই থাকবে না!
ছুটির দিনটি থাকুক স্কিল শেখার জন্য
অনেকেরই নানারকম শখ রয়েছে- কেউ গিটার বাজানো শিখতে চায়, কেউ ইউটিউবার হতে চায়, কেউ প্রোগ্রামিং শিখতে চায় ইত্যাদি। কিন্তু কেন যেন আমাদের অনেকেরই সেই শখের বিষয়গুলো শেখা হয়ে উঠে না।
সবচেয়ে কমন অজুহাত- “সময় পাই না!” অথচ কেবল শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো ধরলেও আমরা বছরে ১০৪ দিন ছুটি পাই! একটু প্ল্যান করে আগালেই কিন্তু এই সময়টুকু চমৎকার কাজে লাগানো যায় বিভিন্ন স্কিল শেখার মাধ্যমে।
সেটি হতে পারে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় স্কিল- গাড়ি চালানো, সাঁতার কাটা, ফার্স্ট এইড ট্রেইনিং থেকে শুরু করে প্রযুক্তিগত স্কিল- মাইক্রোসফট এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি। ১০৪টি ছুটির দিন ঠিকভাবে কাজে লাগালে বছরশেষে তুমি আর দশজনের চেয়ে একদম ১০৪ ধাপ এগিয়ে থাকবে!
রান্না করতে শেখা
সেদিন ক্লাসে ম্যাডাম হঠাৎ জিজ্ঞেস করলেন, “তোমাদের মধ্যে কে কে রান্না করতে জানো?” গোটা ক্লাসের ১২০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৫ জনের বেশি কেউ হাত তুলেনি!
রান্নাবান্না শেখা ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, কিন্তু কেন যেন রান্না শেখার ব্যাপারটি বরাবরই আমাদের কাছে বড়ই অবহেলিত!
আমার মাঝেমধ্যে রাতে ভাত খেতে দেরি হয়ে যায়, এবং অনেকসময় খেতে বসে আবিষ্কার করি ভাতের সাথে তেমন যুতসই কোন আইটেম নেই, এতো রাতে কেউ এসে রেঁধে দিবে সেই আহ্লাদও নেই!
আগে ব্যাপারটি নিয়ে বেশ মেজাজ খারাপ হতো, কিন্তু এখন আমি ঝটপট রান্না করা যায় এমন পছন্দসই কিছু আইটেম তৈরি শিখে ফেলেছি সুতরাং খাবার নিয়ে আমার আর কোন সমস্যা হয় না।
বাইরে আমরা যে খাবারগুলো খাই, এগুলোর সিংহভাগই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অথচ শুধু ইউটিউব দেখেই আমরা ঘরে বসে তৈরি করে ফেলতে পারি চমৎকার সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর সব খাবার। তাই প্রতিমাসে যদি দুটি আইটেম রান্না শেখার লক্ষ্য নেই, তাহলে বছরশেষে ২৪টি নতুন আইটেম আমরা রান্না করতে শিখে যাবো কারো সাহায্য ছাড়াই!
সৃজনশীলতা চর্চা
পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন খ্যাতনামা কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে ২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে কোন ১০টি স্কিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে তার একটি তালিকা করা হয়েছে, এবং সে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানেই আছে “সৃজনশীলতা”।
আইনস্টাইন বলেছিলেন, “জ্ঞানের চেয়েও কল্পনাশক্তির গুরুত্ব বেশি।” কল্পনাশক্তি থেকেই আসে সৃজনশীলতা। কিন্তু শুধু সৃজনশীলতা থাকলেই হবে না, সেটি কাজে লাগাতে জানতে হবে, সবার সামনে তুলে ধরতে হবে।
আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা চমৎকার গান গায়, ছবি আঁকে, লেখালেখি করে কিন্তু তাদের সেই দক্ষতার কথা মানুষের কাছে সেভাবে পৌঁছায়না। আমার খুব প্রিয় একটি উক্তি হচ্ছে,
“Talent is nothing but the art of selling your abilities.”
বর্তমানে সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে আমাদের সৃজনশীল দিকগুলো সবার সামনে তুলে ধরা হয়ে গেছে অনেক সহজ। তাই আমাদের লক্ষ্য থাকা উচিত- প্রতি মাসে অন্তত একটি সৃজনশীল কিছু তৈরি করা (গান, লেখালেখি, ভিডিও যা খুশি) এবং সেটি সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
আমি যেমন টেন মিনিট স্কুলে গতবছর অনেকগুলো ব্লগ লিখেছি। আমি আগামীকাল বেঁচে থাকবো কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই, কিন্তু এই লেখাগুলো থেকে যাবে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষ সেগুলো পড়বে, তাদের সাথে হয়তো কখনো দেখা হবে না, কিন্তু এই লেখাগুলোর মাধ্যমে তাদের জীবন খুব সামান্য হলেও ছুঁয়ে দিতে পারবো ব্যাপারটি ভেবে বড় আনন্দ হয়! এজন্যই একটি জিনিস নিজে থেকে সৃষ্টি করার অনুভূতিটি অতুলনীয়। সময় পেরিয়ে যায়, কিন্তু সৃষ্টি থেকে যায় চিরকাল।
ফেসবুক হচ্ছে আমাদের ডিজিটাল পোর্টফোলিও। বর্তমানে প্রায় সবখানেই চাকরি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর ফেসবুক একাউন্ট যাচাই করে দেখা হয়। তাই নিজের সৃজনশীল দিকগুলো যদি সুন্দর করে তুলে ধরতে পারো সোশাল মিডিয়ায়- সেটি যেকোন চাকরির আবেদন/প্রতিযোগিতায় তোমার জন্য একটি প্লাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে, অন্যদের মাঝে তোমাকে আলাদা করে চেনাবে।
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
Personal Finance Course
ভ্রমণ
ভ্রমণ বলতেই আমাদের মাথায় চলে আসে পাহাড়ে বা সাগরের তীরে একদল মানুষ সানগ্লাস, থ্রি কোয়ার্টার আর হাওয়াই শার্ট পরে ঘুরতে এসেছে এবং প্রতি মিনিটে মুহুর্মুহু সেলফি তুলে চলেছে! ভ্রমণে কিন্তু দেখার চেয়ে অনুভবের ব্যাপকতা অনেক বেশি।
বছরে অন্তত তিনবার নতুন নতুন জায়গায় ভ্রমণ করা আমাদের সবার জন্যই প্রয়োজন।
পৃথিবীতে ১৯৫টি দেশ রয়েছে এবং এই ১৯৫টি দেশে প্রায় ৭০০০টি ভাষা রয়েছে, প্রত্যেকটি ভাষার সাথে রয়েছে অনেক অনেক চমকপ্রদ গল্প – একজীবন শুধু ভ্রমণ করে কাটিয়ে দিলেও সবগুলো গল্প শুনে শেষ করা সম্ভব নয়!
ভ্রমণের সবচেয়ে চমৎকার দিকটি হচ্ছে নতুন নতুন মানুষের সাথে মেশার সুযোগ। তাদের গল্পগুলো জানা, তাদের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, জীবনযাত্রার ধরণ ইত্যাদির সাথে পরিচয়ে যেই অভিজ্ঞতা জমা হয় ঝুলিতে সেটি যে কখনো সত্যিকারের ভ্রমণ করেনি তাকে বলে বুঝানো সম্ভব নয়!
পৃথিবীর বিশালতার কাছে গেলেই একমাত্র উপলব্ধি করা যায় আমরা আসলে কতো ক্ষুদ্র, কতো তুচ্ছ। ভ্রমণ আমাদের মনের সংকীর্ণতা দূর করে দেয়, আত্মাকে করে তোলে প্রশস্ত, জীবনটাকে সত্যিকারের উপভোগ করতে শেখায় প্রতিটি পদক্ষেপে।
তাই বছরে অন্তত তিনবার নতুন নতুন জায়গায় ভ্রমণ করা আমাদের সবার জন্যই প্রয়োজন।
আয় করো, অভিজ্ঞতা জমাও
ছাত্রজীবনে কতো ‘টাকা’ উপার্জন করলাম সেটি বড় কথা নয়, উপার্জন করতে গিয়ে যেই অভিজ্ঞতাগুলো হয়, নতুন নতুন যে বিষয়গুলো শেখা হয় সেগুলো সারাজীবন কাজে আসে এবং আত্মবিশ্বাস অনেকগুণে বাড়িয়ে দেয়।
আজকাল কেউই একদম আনকোরা graduate-কে চাকরি দিতে চায়না, সবাই চায় আগে থেকে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে এমন কাউকে চাকরি দিতে। তাই ছাত্রজীবনে কেবল বইয়ে মুখ গুঁজে থাকলে সেটি পরে নানান ভোগান্তির জন্ম দিতে পারে।
তাই নতুন বছরে আমাদের সবারই উচিত পড়ালেখার পাশাপাশি অভিজ্ঞতা অর্জন হয় এবং শেখার সুযোগ আছে এমন কার্যক্রমে অংশ নেওয়া। মনে রাখবে, টাকার চেয়ে অভিজ্ঞতার মূল্য এখানে অনেক বেশি।
তাই টিউশনি করার চেয়ে কোথাও ইন্টার্নশিপ করা, লেখালেখি-ডিজাইনিং-ভিডিও এডিটিং-ফটোগ্রাফি ইত্যাদি সৃজনশীল কাজে যোগ দিলে ক্যারিয়ারের জন্য সেটির ভূমিকা হবে সুদূরপ্রসারী।
প্রতিদিন একটুখানি ব্যায়াম
অনেকের একটি বিচিত্র ধারণা রয়েছে, “ব্যায়াম করলে ক্লান্ত হয়ে যাবো, ঘুম চলে আসবে, পড়াশোনা করবো কীভাবে?!” আমার নিজেরও এরকম ধারণা ছিল, কিন্তু আসলে ব্যাপারটি একদম উল্টো!
ব্যায়াম করলে আমাদের শরীরে এন্ডোরফিন নামে একটি হরমোন নিঃসৃত হয়, সেটি আমাদের দেহ থেকে অবসাদ, ক্লান্তি, বিষন্নভাব, জড়তা দূর করে দেয় এবং স্মরণশক্তি, আত্মবিশ্বাস, প্রোডাক্টিভিটি অনেক বাড়িয়ে দেয়!
আমার কাছে ব্যায়ামের সবচেয়ে পছন্দের দিকটি হলো বিষণ্ণতা আর উদ্বিগ্নতা দূর করে দেওয়ার জাদুকরী গুণ! তাই পরীক্ষার মৌসুমে ঝটপট ব্যায়ামে মাথা থাকে ঠাণ্ডা, দুশ্চিন্তা-ভয় মাথায় ভর করার সুযোগ পায় না।
আমরা প্রতিদিন মাত্র দশ মিনিট ব্যায়াম করলেই যথেষ্ট, এবং সেজন্য জিমে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই! একদম দৈনন্দিন কাজেকর্মের ফাঁকে ব্যাপারটি সেরে ফেলা যায়।
যেমন যদি লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে উঠি, সকালের বাজারটা নিজ হাতে করি, অবসরে ঘরের কাজে সাহায্য করি, ক্লাস থেকে ফেরার সময় মাঝেমধ্যে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরি- তাহলেই কিন্তু ব্যায়ামের কাজটা হয়ে যায়!
ভোকাবুলারি!
ইংরেজি নিয়ে অনেকের মনে একরকম আতঙ্ক কাজ করে এবং কোন একটি বিচিত্র কারণে তারা সেটি দূর করার তেমন কোন চেষ্টা চালায় না, সারাজীবন ভয়টি আগলে রাখে নির্বিকারে!
কিন্তু আমরা যারা ইংরেজিতে দক্ষ হতে চাই, তারা কিন্তু খুব সহজেই কাজটি করতে পারি এবং সেজন্য প্রতিদিন দশ মিনিটের বেশি সময় দরকার নেই।
এই দশ মিনিটে প্রতিদিন ছয়টি নতুন শব্দ শিখে একটি খাতায় টুকে রাখলে বছরশেষে দুই হাজারেরও বেশি শব্দ শেখা হয়ে যাবে আমাদের! ব্যাপারটি শুনতে বেশ চমৎকার লাগছে, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই শুরু করার দুই সপ্তাহের মাথায় দৈনিক ছয়টি করে শব্দ শেখার কথা বেমালুম ভুলে বসে থাকে অথবা বিরক্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেয়।
এমনটি যেন না হয় সেটি কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে! ২০১৮ সালে অন্তত ২০১৮টি শব্দ আমাদের ভোকাবুলারির ভাণ্ডারে যুক্ত করা উচিত।
ভয়কে জয় করো
আমরা যখন কোন ভয়ের সম্মুখীন হই, তখন শরীরে এড্রেনালিন হরমোন নিঃসৃত হয় এবং আমাদের মাঝে “Fight or Flight” (মোকাবিলা করো অথবা পালিয়ে যাও) instinct (প্রবৃত্তি) কাজ করে।
গতবছরের শুরুতেও আমার সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ ছিলো “পাবলিক স্পিকিং”। ভার্সিটিতে যেদিন কোন প্রেজেন্টেশন থাকে সেদিন ক্যাম্পাসে বেশ উৎসব উৎসব একটা আমেজ থাকে- সবাই স্যুটেড বুটেড/শাড়ি পরে ‘মাঞ্জা মেরে’ সেলফি তোলে!
অন্যদের জন্য উপলক্ষ্যটা অনেক আনন্দের হলেও আমার জন্য ব্যাপারটা ছিল একটা দুঃস্বপ্নের মতো- প্রেজেন্টেশনে কখন ভজঘট পাকিয়ে ফেলি সে ভয়ে সারাক্ষণ অস্থির হয়ে থাকতাম! কিন্তু এভাবে আর কতো দিন?
ঠিক করলাম এর একটা বিহিত দরকার, ভয়কে পেলেপুষে বাড়তে দেওয়ার কোন মানে হয়না। অহেতুক ভয় মাথা থেকে তাড়িয়ে প্রেজেন্টেশনে ভাল হওয়ার জন্য কাজ শুরু করলাম, এবং কিছুদিন পর সত্যিই ভয়টি দূর হয়ে গেল!
আমার যেমন ভয় ছিল প্রেজেন্টেশন, আমাদের সবারই এমন কোন না কোন একটি ভয় আছে। নতুন বছরে তোমার সেই ভয়টিকে এড়িয়ে না গিয়ে সেটির মুখোমুখি হও, Fight দাও, সেটি দূর করার জন্য কাজ করো। আমি বাজি ধরে বলতে পারি বছরের শেষে সেই বিষয়ে ভয় তো থাকবেই না, বরং সেই বিষয়ে আর দশজনের চেয়েও অনেক দক্ষ হয়ে উঠবে তুমি!
পুনশ্চঃ
কিছু মানুষ আছে তারা এসব পরিকল্পনার কথা শুনলেই বলে, “এইসব New year’s resolution অনেক করে দেখেছি, কোন লাভ হয়না যত্তোসব!” তাদের কথায় প্লিজ কান দিয়ো না।
তুমি যদি একবার পরীক্ষায় খারাপ করো তাহলে কি “ধুর এইসব পরীক্ষা দিয়ে কোন লাভ নেই, রেজাল্ট খারাপ আসবেই জানা কথা!” বলো? অবশ্যই না! তুমি পরেরবার ভাল করার জন্য প্রস্তুতি নাও। ঠিক তেমনি, অতীতে নতুন বছরের লক্ষ্যগুলো পূরণ হয়েছে কি হয়নি সেটা ভুলে যাও, বিশ্বাস রাখো এ বছর হবে, একশবার হবে!
আমার কোন নস্টালজিয়া নেই, আমার অতীতে ফিরে যেতে একটুও ইচ্ছে করে না কারণ আমার আজকের দিনটি সবসময়ই গতকালকের চেয়ে ভাল কাটে! এবং কোন কারণে আজকের দিনটি খারাপ কাটলেও আমি জানি আগামীকালকের দিনটি হবে অনেক বেশি সুন্দর, অনেক বেশি ঝলমলে!
প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে চেষ্টা করো নতুন কিছু শেখার, দেখবে কখনো জীবন নিয়ে কোন অতৃপ্তি থাকবে না।
“The moment you stop learning, you start dying”.
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন