৭ই মার্চের ভাষণ- শোষন বঞ্চনার প্রতিবাদে মুখর বাঙালির আত্মপরিচয়ের অন্যতম নিদর্শন। অন্ধকার যুগের সূচনা করা তুর্কি আক্রমণ থেকে শুরু করে ৪৭ পরবর্তী ‘পূর্বপাকিস্তান’ নাম নিয়ে, বাঙালি কেবল হয়েছে অত্যাচারিত, সম্পদ লুটে নিয়ে গিয়েছে বিদেশী বণিক আর শোষকের দল। কিন্তু কত আর সহ্য হয়! তাই তো স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাক্বালে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের সেই অলিখিত ভাষণে বিশ্বকে জানিয়ে দেন, ‘অনেক হয়েছে, আর নয়’!
আজকের এই লেখায় আমি আলোচনা করবো ঐতিহাসিক ৭ মার্চ নিয়ে। আলোচনা করবো ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব, ৭ মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত, এই বিষয়গুলো। আলোচনায় আরো উঠে আসবে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ সম্পর্কিত উক্তিসমূহ, এই ভাষণের স্বীকৃতিসমূহ। আরো থাকবে একনজরে এই ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো।
৭ই মার্চের ভাষণ
৭ই মার্চ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি শোষক সরকারের বিরুদ্ধে চলমান অসহযোগ আন্দোলনের সময়কালে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে- বর্তমানে যা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নামে পরিচিত- জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ইতিহাসে এই ভাষণটি ৭ই মার্চের ভাষণ হিসেবে পরিচিত। ভাষণের দৈর্ঘ্য ছিলো ১৮ মিনিট, এই ১৮ মিনিটের ভাষণ বাঙালী জাতির মুক্তির মহাকাব্য হিসেবে সর্বজন বিদিত। বর্তমানে এই ভাষণের যে ভিডিও চিত্র আমরা দেখতে পাই, তা ধারণ করেছিলেন সে সময়কার পাকিস্তান সরকারের চলচ্চিত্র বিভাগের একজন পরিচালক ও অভিনেতা আবুল খায়ের। অডিও সংগ্রহ করেছিলেন তথ্য মন্ত্রনালয়ের প্রযুক্তিবিদ এইচ এন খোন্দকার।
৭ই মার্চের ভাষণ: প্রেক্ষাপট
৭ মার্চের ভাষণ যে কেবল ইয়াহিয়ার জাতীয় পরিষদের অধিবেশন মুলতবি করার প্রতিবাদে উৎসারিত, এমনটা নয়। এর পেছনে আছে ৪৭-এর দেশভাগ, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬-এর ছয়দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মতো নানা শোষন ও বঞ্চনার প্রতি তীব্র বিরুদ্ধাচারণ। তাই শেখ মুজিব তার ভাষণের শুরুতেই বলেছিলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাস আসলে ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস। অসামান্য বাক্যশৈলীর ব্যবহারে বঙ্গবন্ধু এই ২৩ বছরের ইতিহাসকে সংক্ষিপ্ত কিন্তু মর্মস্পর্শী করে জনতার কাছে হাজির করেন। নিচে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ-এর প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হলো,
১৯৪৭-১৯৬৯
সাল | উল্ল্যেখযোগ্য ঘটনা |
১৯৪৭ |
|
১৯৪৮ |
|
১৯৪৯ |
|
১৯৫২ |
|
১৯৫৮ |
|
১৯৬৬ |
|
১৯৬৯ |
|
Image Source: thedailystar.net
অসহযোগ আন্দোলন
১৯৭০ সালে প্রাদেশিক সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। কিন্তু তারপরেও পাকিস্তান সরকার বাঙালির হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে নানা অজুহাত ও টালবাহানা শুরু করে। পরবর্তীকালে ইয়াহিয়া সরকার ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্ববান করেন। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই সেই অধিবেশন পহেলা মার্চে মুলতবি করা হয়। বাঙালী ফেটে পড়ে বিক্ষোভে। ১মার্চ থেকে ৬মার্চ- এর উল্ল্যেখযোগ্য ঘটনাগুলো হলো:
তারিখ | উল্ল্যেখযোগ্য ঘটনা |
১ মার্চ |
|
২ মার্চ |
|
৩ মার্চ |
|
৪ মার্চ |
|
৫ মার্চ |
|
৬ মার্চ |
|
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ
পূর্বঘোষিত সময় অনুসারে এই দিন বিকেলে রেসকোর্সে লাখো জনতা উপস্থিত হয়। বঙ্গবন্ধু এলেন, মঞ্চে উঠে শুরুতেই বাঙালীর ২৩ বছরের সংগ্রামের ইতিহাসের কথা বললেন, বললেন কী করে তাঁর এবং গোটা বাঙালীর সাথে শুরু থেকেই বৈষম্য করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে উঠে আসে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার ঘৃণ্য উদ্দেশ্য ও কূটকৌশলের কথা। সরাসরি স্বাধীনতার ডাক না দিলেও বাঙালির স্বাধীকার আদায়ের জন্য সব কিছু বিবেচনা করে তিনি চারটি বিষয়ে তাঁর ভাষণে জোর দেন। এগুলো হলো,
- দেশে চলমান সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে
- সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে
- সারাদেশে যে সব হত্যাকান্ড হয়েছে তার সুষ্ঠ তদন্ত করতে হবে
- জনগণের বিপুল সমর্থনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে
একনজরে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় | সংক্ষিপ্ত তথ্য |
ভাষণের তারিখ | ৭ই মার্চ, ১৯৭১ |
ভিডিও রেকর্ড ধারণ করেন |
আবুল খায়ের |
অডিও রেকর্ড করেন | এ এইচ খোন্দকার |
মাইকের নাম | কল রেডি |
শব্দ সংখ্যা | ১১০৮টি |
অনূদিত হয়েছে | ১৩টি ভাষায় |
UNESCO কর্তৃক স্বীকৃতি | ৩০শে অক্টোবর, ২০১৭ |
বঙ্গবন্ধুর ‘রাজনীতির কবি’ উপাধি লাভ | ৫ এপ্রিল, ১৯৭১ |
উপাধি দেয়া পত্রিকার নাম | Newsweek |
৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব
- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ৭ মার্চের ভাষণ -এ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তাঁর এই ভাষণে চারটি দফার একটি ছিলো জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে
- ঐতিহাসিক ৭ মার্চ -এর ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতীয়তাবাদের চেতনাকে ধারণ করেছেন, তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্ববান জানিয়েছেন। তিনি তার ভাষণে সকলকে একযোগে, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন। এই ‘সকল’-এর মধ্যে আলাদা করে হিন্দু বা মুসলিম ছিলো না, ছিলো কেবল বাঙালিদের কথা।
- অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির কথা ছিলো বঙ্গবন্ধুর ভাষণে। বাংলা অঞ্চলের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিচ্ছিলো পশ্চিম পাকিস্তানিরা, জনগণের ভোটে রাজনৈতিক ক্ষমতা পাওয়ার কথা থাকলেও বাঙালিকে তা দেয়া হয়নি, আর শুরু থেকে বাংলা ভাষাকে বাদ দেয়ার প্রচেষ্টা চালানো কিংবা রবীন্দ্রনাথের গান রেডিওতে বাজানোর নিষেধাজ্ঞা- এমন সকল কিছুর মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন তো চলছিলোই। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে তাই এই সকল ক্ষেত্রে মুক্তির আহ্বান এসেছে বারবার।
- বঙ্গবন্ধু এইদিন সরাসরি স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করেননি, কারণ এর ফলে পাকিস্তানি বাহিনী তাকে ও বাঙালিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যা দিয়ে সরাসরি আক্রমণ করে বসতে পারে। কিন্ত পরোক্ষভাবে তার দাবীগুলো আসলে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রূপরেখাকেই হাজির করে বিশ্ববাসীর সামনে।
৭ মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত
এই অংশে আমরা ৭ মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত সে সম্পর্কে জানবো। ৭ মার্চের ভাষণ -এ বঙ্গবন্ধু ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্তির আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। ভাষণে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন বাঙালি জাতির ত্যাগকে, আন্দোলনে তাদের ভূমিকা যে অপরিসীম সে সম্পর্কে করেছিলেন ওয়াকিবহাল। এই ভাষণে প্রকাশ পেয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শীতা ও কৌশলী রাজনৈতিক প্রজ্ঞার। সর্বপরি অসামান্য বাগ্নীতার গুণে গুণান্বিত এই ভাষণ হয়ে উঠেছিলো কালত্তীর্ণ। এই সকল কারণ ৭ মার্চের ভাষণ -কে করে তুলেছে বিখ্যাত। এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো,
উপনিবেশিকতা থেকে মুক্তির ডাক
১৯৪৭ সালে দেশভাগের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ কলোনি যুগের অবসান ঘটলেও, জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্ব বর্তমান বাংলাদেশ বা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে পুনরায় পশ্চিম পাকিস্তানের কলোনিতে পরিণত করে। পশ্চিম পাকিস্তান নিজেদের ভূমিকে সমৃদ্ধ করতে কেড়ে নিয়েছে এই ভূমির রাজস্ব, বৈদেশিক মুদ্রা; নিজেদের আখেড় গোছাতে সেনাবাহিনীসহ সকল ক্ষেত্রে নিজেদের ভূমিজাত মানুষদের প্রাধান্য দিয়েছে, বাঙালিকে করেছে বঞ্চিত। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে এমন উপনিবেশিক শাসকের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধাচারণ করেন, তুলে ধরেন তাদের কুকর্মকে। ভাষণের শেষে এসে তাই সেই উপনিবেশিক শক্তির চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে ঘোষণা করেন,
মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ্। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
জনগণের ত্যাগকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান
বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে কেবল নিজের বক্তব্য তুলে ধরেননি, সর্বোচ্চ মর্যাদায় তুলে ধরেছেন সমগ্র জাতির ত্যাগকে। তিনি প্রথমে বাঙালির ২৩ বছরের করুণ ইতিহাসকে সামনে আনেন, তুলে আনেন পাকিস্তানি উপনিবেশ তথা এই দেশের মানুষের বুকের রক্ত দেবার কথা। তাই এই সকল হত্যাকান্ডের বিচার ও তদন্তের তাগিদ তার কন্ঠে ফুটে ওঠে, ইয়াহিয়া নতুন করে এসেম্বলি কল করলেও তা প্রত্যাখান করেন বঙ্গবন্ধু, কারণ তখনো রাজপথে বাঙালির রক্তের দাগ শুকায়নি।
ভাইয়েরা আমার, ২৫ তারিখে অ্যাসেম্বলি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখে বলে দিয়েছি যে ওই শহীদের রক্তের উপর পা দিয়ে কিছুতেই মুজিবুর রহমান যোগদান করতে পারে না।
দূরদর্শীতা
বঙ্গবন্ধু জানতেন যুদ্ধ আসন্ন। তিনি এটাও আন্দাজ করতে পেরেছিলেন যে, হয়তো সে সংগ্রামের সময়ে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না, হয়তো তাকে এর আগেই হত্যা করা হবে। তাই দূরদর্শী শেখ মুজিব ভাষণে বললেন,
জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু, আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।
কাব্যিক ভাষার ব্যবহার
বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটিতে যে ভাষা তিনি ব্যবহার করেছিলেন, তা একই সাথে কাব্যিক এবং অসাধারণ রকমের সরল ও বোধগম্য। ভাষণের এই কাব্যিকতার কথা চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। তার ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ শীর্ষক কবিতায়, শেখ মুজিবকে তিনি পরিচিত করিয়েছেন কবি হিসেবে, যার অপেক্ষায় ‘উন্মত্ত, অধীর, ব্যাকুল, বিদ্রোহী শ্রোতারা’ বসে ছিলো,
শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,
হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার
সকল দুয়ার খোলা৷ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷’
৭ই মার্চের ভাষণ: আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ যে কেবল বাঙালিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার প্রেরণা জুগিয়েছে এমনটা নয়, বরং পৃথিবীর নিপিড়ীত ও শোষিত সব জাতির মুক্তির আকাঙ্খাকে বাড়িয়ে তুলেছে, অনুপ্রাণিত করেছে বিশ্ববাসীকে। এর প্রমাণ হিসেবে আছে তার ভাষণের আন্তর্জাতিক সকল স্বীকৃতিসমূহ। ২০১৭ সালের ৩০শে অক্টোবর জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বুকোভা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ-কে ডকুমেন্টারি হেরিটেজ বা বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। এ সম্পর্কে ইউনেস্কো লেখে,
The speech (7 March speech) effectively declared the independence of Bangladesh. The speech constitutes a faithful documentation of how the failure of post-colonial nation-states to develop an inclusive, democratic society alienates their population belonging to different ethnic, cultural, linguistic, or religious groups.
মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটি সংগৃহীত হয়। এছাড়া নিউজউইক বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে লিখতে গিয়ে তাকে রাজনীতির কবি বলে উপাধি দেয়। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো এই ভাষণ জাপানি ভাষায় অনূদিত হয়। এখন অব্দি ১৩টি ভাষায় অনূদিত ভাষণটির মোট ৪৩টি ভাষায় অনুবাদের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স
কোর্সটিতে যা যা পাচ্ছেন:
ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশবিশেষ
সময় | ভাষণের উল্ল্যেখযোগ্য অংশ |
২.০৯ মিনিট – ২.২১ মিনিট |
|
২.২৩ মিনিট – ২.৪৫ মিনিট |
|
৪.২৪ মিনিট – ৪.৩৮ মিনিট |
|
৭.১৬ মিনিট – ৭.৩১ মিনিট |
|
৮.৪০ মিনিট – ৮.৪৫ মিনিট |
|
৮.৪৮ মিনিট – ৯.২২ মিনিট |
|
৯.৩১ মিনিট – ৯.৫০ মিনিট |
|
১০.৩৫ মিনিট – ১০.৫৯ মিনিট |
|
১১.০২ মিনিট – ১১.১০ মিনিট |
|
৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে উক্তি
- “শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ শুধুমাত্র ভাষণ নয়, এটি একটি অনন্য রণকৌশলের দলিল।” – ফিদেল ক্যাস্ট্রো
- “পৃথিবীর ইতিহাসে যতদিন পরাধীনতা থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম থাকবে, ততদিন শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ মুক্তিকামী মানুষের মনে চির জাগরুক থাকবে। এ ভাষণ শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য নয়, সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস।” – এডওয়ার্ড হীথ
- “৭ মার্চের ভাষণ আসলে ছিলো স্বাধীনতার মূল দলিল।”– নেলসন ম্যান্ডেলা
- “শেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণ হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার মৌলিক ঘোষণা। পরবর্তীকালে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে ঐ ভাষণেরই আলোকে।” – দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, ১৯৭১
- “শেখ মুজিব ৭ মার্চের ভাষণ-এর মাধ্যমেই আসলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন।” – টাইম ম্যাগাজিন, ১৯৯৭
শেষ কথা
আমার এই লেখায় আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ৭ই মার্চের ভাষণ, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ কীভাবে বাঙালী জাতীয়তাবাদকে ধারণ করে, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত জগৎ জুড়ে – সে সম্পর্কে।
বঙ্গবন্ধুর অসামান্য সাহসিকতা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আর সঠিক দিক নির্দেশনা সম্বলিত এই ভাষণ পরবর্তীকালে মুক্তি সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়া বাঙালিকে প্রেরণা জুগিয়েছে, দিয়েছে একটি লাল সবুজের পতাকার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার দুঃসাহস। যে দুঃসাহস পরে জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ নামের একটি রাষ্ট্রের। যে দেশকে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ি বলে উপহাস করা হয়েছিলো, সে দেশ এখন সারা পৃথীবির কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। এই সকল কিছুর শুরুটা দেশভাগের পর থেকে শুরু সত্যি, কিন্তু এই পথচলাকে যে নতুন করে গতি দিয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ- এই কথা বলাই বাহুল্য।
তথ্যসূত্র:
- সাতই মার্চের ভাষণ, উইকিপিডিয়া
- সাতই মার্চের ভাষন, বাংলাপিডিয়া
- ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, ড.খ.ম. রেজাউল করিম
- অসহযোগ আন্দোলন, আবু মো. দেলোয়ার হোসেন এবং এ.টি.এম যায়েদ হোসেন
- অসহযোগ আন্দোলন ১৯৭১
- এইচ এস সি ইতিহাস প্রথম পত্র, জে এম বেলাল হোসেন সরকার
- ৭ মার্চের ভাষণ ছিলো মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা, বিভুরঞ্জন সরকার
- সাতই মার্চ ভাষণ শুধু নয়, স্বাধীনতার রণকৌশলও, হাবীব ইমন
- ৭ই মার্চের ভাষণ
- Bangabandhu Sheikh Mujib’s 7thMarch Speech: Epic of Politics, ICT Division, December 2021
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন