বিল গেটসকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “সুপারহিরোদের নানারকম অতিমানবীয় গুণাবলী থাকে। কখনো যদি সুযোগ পেতেন একটি অতিমানবীয় ক্ষমতা অর্জন করার, আপনি কোনটি বেছে নিতেন?”
এ প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগ মানুষ বলে “অদৃশ্য হতে পারা”, “মানুষের মন পড়তে পারা”, “টাইম ট্রাভেল” ইত্যাদি, কিন্তু সবাইকে অবাক করে বিল গেটস উত্তর দিলেন, “আমার একমাত্র চাওয়া আমি যেন আরো দ্রুত বই পড়ে শেষ করতে পারি।”
বিশ্বজুড়ে বেশিরভাগ সফল ব্যক্তিদের একটি কমন অভ্যাস- তাঁরা প্রচুর বই পড়েন। ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস তাঁদের কল্পনাশক্তিকে করে তোলে প্রখর, স্বপ্নের সীমানা ছাড়িয়ে যেতে যা সাহায্য করে কর্মক্ষেত্রে। চলো আজ জেনে নেওয়া যাক সফল ব্যক্তিদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া অনন্য পাঁচটি বইয়ের কথা।
Microsoft Office 3 in 1 Bundle
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
৫ টি বই যা বিশ্বের সফলদের জীবনে প্রভাব ফেলেছেঃ
The Alchemist
ভাগ্যপূরণ কি আসলেই সম্ভব?
তোমাকে যদি কেউ বলে কীভাবে স্বপ্নে পাওয়া গুপ্তধন সত্যি সত্যি খুঁজে পাওয়া যায়, কীভাবে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে শুন্য হাতে রওনা দিয়ে সে পথে জীবনের সব চাওয়া-পাওয়া, আকাঙ্ক্ষা পূর্ণতা লাভ করে তবে কেমন হতো?
এমনই রূপকথার মতো এক অনুপম গল্পের সাথে আধ্যাত্মিক ও বাস্তব জীবনের উপলব্ধি নিয়ে পাওলো কোয়েলহোর অনন্য একটি গ্রন্থ “দি আলকেমিস্ট”। বইটি এ পর্যন্ত ৬৭টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে এবং ১৮টি দেশে সর্বকালের সেরা বিক্রিত বইয়ের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।
বিল ক্লিনটন, জুলিয়া রবার্টস, উইল স্মিথ, ম্যাডোনা সহ বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষের প্রিয় বই এটি, সবাই একবাক্যে বইটি পড়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। বইটির অভাবনীয় সাফল্যের রহস্য কী? বিল গেটস বলেন, ” দি আলকেমিস্ট নিজের ভেতর এক ধরনের অনুধাবন তৈরি করে, যেটি জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়, জীবনকে নতুন আঙ্গিক থেকে দেখতে শেখায়।”
The Art of War
সান জু নামে সেকালে এক প্রখ্যাত সেনাপতি, রণকৌশলবিদ আর দার্শনিক ছিলেন চীন দেশে। আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর আগে বাঁশের চাটাই এর ওপর তিনি লিখে যান এক কালজয়ী গ্রন্থ ‘দ্য আর্ট অব ওয়ার’। মাও সে তুং, ম্যাক আর্থারের মত সেনানায়কেরাও তাঁর এই বই থেকে প্রেরণা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
সান জু’র নীতি এখনও প্রত্যেকটি সামরিক স্কুলের অবশ্য পাঠ্য বই। তবে হাল জমানায় বইটি তুমুল জনপ্রিয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিপণন বা মার্কেটিং এ। বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিনের মতে, “ব্যবসা বাণিজ্যের হর্তাকর্তাদের যদি জিজ্ঞেস করেন কার লেখা একই সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সামরিক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে? একটি নাম শুনবেন- সান জু!”
সমগ্র ENCYCLOPEDIA BRITANNICA
এনসাইক্লোপিডিয়া সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। ইংরেজি ভাষার সবচেয়ে পাণ্ডিত্যপূর্ণ বিশ্বকোষগুলোর একটি মনে করা হয় এটিকে। প্রায় নিয়মিত ১০০ জন সম্পাদক ও প্রায় ৪০০০ অবদানকারীর মাধ্যমে এটি লিখিত ও সংশোধিত হয়।
অনুবাদকারীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১১০ জন নোবেল বিজয়ী এবং ৫ জন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। হাল জমানার উইকিপিডিয়াকে এই এনসাইক্লোপিডিয়ারই আধুনিক সংস্করণ বলা যেতে পারে। শত শত বছর ধরে মানুষের মনে জ্ঞানের পিপাসা জাগিয়ে তুলতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে এই গ্রন্থাবলী।
ইলন মাস্কের (Elon Musk) সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জেনে থাকবে। প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই যুগে পৃথিবীর হাওয়া বদলে দেওয়ায় বিশ্বাসী অসাধারণ প্রতিভাধর এক প্রযুক্তিবিদ তিনি। টেসলা মোটরস, সোলার সিটি এবং স্পেস এক্স এই তিনটি বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানির কর্ণধার। সবসময়ই অভিনব আর দূরদর্শী সব প্রকল্প নিয়ে মেতে থাকা মাস্কের পরবর্তী লক্ষ্য কী জানো? মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপন!
এই অসাধারণ কল্পনাশক্তির অধিকারী মানুষটির সবচেয়ে প্রিয় বই হচ্ছে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। একদম ছোটবেলায়, সেই নয় বছর বয়সে তিনি সমগ্র এনসাইক্লোপিডিয়া পড়ে শেষ করেন! কেউ যদি তার কাছে বই পড়ার ব্যাপারে সাজেশন চায় তিনি এখনো এনসাইক্লোপিডিয়া পড়তে পরামর্শ দেন।
The Adventures of Huckleberry Finn
অজানার প্রতি এক দুর্নিবার আকর্ষণে বাড়ি ছেড়ে পালাল ডানপিটে কিশোর হাকলবেরি ফিন। সঙ্গী তার জিম নামের এক ক্রীতদাস। রোমাঞ্চকর সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়ে এগিয়ে চললো ওরা মুক্ত জীবনের সন্ধানে। উনিশ শতকের আমেরিকার দাসপ্রথা এবং দারিদ্র্য-বঞ্চনার এক অন্ধকার ইতিহাসকে তুলে ধরেন মার্ক টোয়েন এই বইটিতে, হাকলবেরির অভিযানের মাধ্যমে।
মার্ক টোয়েনকে মার্কিন সাহিত্যের জনক বলে আখ্যায়িত করা হয়। তাঁর সম্পর্কে বিখ্যাত লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বলেন, সব আধুনিক মার্কিন সাহিত্য এসেছে মার্ক টোয়াইনের জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম ‘হাকলবেরি ফিন’ থেকে।
অনেকের মতে ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব হাকলবেরি ফিন’ মার্ক টোয়াইনের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম। বিদ্রোহী, স্বপ্নালু, উদারমনা হাকলবেরি ফিন বিশ্বজুড়ে আজও ছুঁয়ে চলেছে লাখো মানুষের হৃদয়।
Cosmos
পৃথিবীর ইতিহাসে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বিজ্ঞানী কার্ল সেগান-কে বিশ্বজুড়ে সবাই মনে রাখবে চিরকাল। বলা হয়ে থাকে, আর কেউই কার্ল সেগানের মত করে মহাশূন্যের মহিমা ব্যাখ্যা করতে পারেনি।
“কসমস” বইটি সেগানকে অমর করে রাখবে পৃথিবীর বুকে
তিনি চলে গেছেন অনেক বছর হলো। কিন্তু যারা ঐ সময় তাঁকে দেখেছেন, তারা তাঁর কণ্ঠ মনে করতে পারবেন অনায়াসে। তারা ঠিক মনে করতে পারবেন সুদর্শন কার্ল তার কালজয়ী শো “কসমস” এ সম্মোহনী কণ্ঠে জীবনের উৎপত্তি , বিবর্তন, সভ্যতার ইতিহাস, ছায়াপথ, গ্রহ, কুসংস্কার, মানব সভ্যতার ভবিষ্যত ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে অনুপম দক্ষতায় সহজ ভাষায় বলে যাচ্ছেন।
“কসমস” বইটি সেগানকে অমর করে রাখবে পৃথিবীর বুকে, বিজ্ঞানমনস্ক মানুষকে জ্ঞানের খোরাক জুগিয়ে চলবে সর্বদা।
Communication Masterclass by Tahsan Khan
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
কার্ল সেগান এবং তাঁর অসাধারণ কাজগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে ঘুরে আসতে পারো এখান থেকে
http://onubadokderadda.com/others/carl_sagan/
১০ মিনিট স্কুলের লাইভ এডমিশন কোচিং ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.10minuteschool.com/admissions/live/
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আমাদের কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে ক্লিক করুন:
- Microsoft Office 3 in 1 Bundle
- English Grammar Crash Course by Sakib Bin Rashid
- ঘরে বসে Freelancing by Joyeta Banerjee
আপনার কমেন্ট লিখুন