পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবারে শুনে নাও!
ছোটবেলা থেকেই আমাদের মনে অনেক ইচ্ছা থাকে, বিজ্ঞানের নানা এক্সপেরিমেন্ট করার। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় এসব করার যে উপকরণ, সেগুলো খুঁজে পাওয়াই যায় না। আর আমাদের বিজ্ঞানী হবার আশাটা সেখানে কুঁড়িতেই বিনষ্ট হয়ে যায়, আমাদের আর বিজ্ঞানী হয়ে ওঠা হয় না।
নতুন প্রজন্ম যাতে এই হতাশার মধ্যে দিয়ে না যায়, এইজন্যেই বিজ্ঞান বাক্সের আবির্ভাব। বিজ্ঞান বাক্সকে বলা যায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্যে সাক্ষাৎ জাদুর কাঠি! দারুণ কাজের এই বিজ্ঞান বাক্স নিয়েই এই লেখাটি।
শব্দ কল্প
কেন শব্দ কল্প বিজ্ঞানবাক্সটি তৈরি হয়েছে?
রূপকথা সেদিন নিজে নিজে কাগজের কাপ দিয়ে টেলিফোন বানিয়ে ফেললো। তারপর তার মাকে একটি কাপ কানে লাগাতে বলে অন্য কাপ সে মুখে নিয়ে কথা বলতে লাগলো। সেদিন কাগজ দিয়ে টেলিফোন আবিষ্কার করে কী পরিমাণ উত্তেজিত হয়েছিলো, তা শুধু রূপকথার মা জানেন। রূপকথা এখন ৫ম শ্রেণিতে পড়ে। এই বয়সেও সে জানে কীভাবে কাগজের কাপ দিয়ে সুতার মাধ্যমে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে শব্দ আসা যাওয়া করে।
আমাদের ভবিষ্যত বিজ্ঞানীরা যাতে ভাবতে পারে, ভাবতে ভাবতে প্র্যাকটিস করতে পারে, তৈরি করতে পারে নতুন কিছু, যা কাজে আসবে মানব সভ্যতার সেজন্যেই এই শব্দ কল্প। শব্দের জন্মকথা, শব্দের ফলে কম্পন কেনো হয় কিংবা শব্দের জোর কত? এসবই খেলার ছলে জানা যাবে শব্দ কল্প থেকে। শব্দকে আনন্দের সাথে জানতেই বিজ্ঞানবাক্সের শব্দ কল্প।
শব্দ কল্পের উপকরণ সমূহ
শব্দ কল্পে অনেক মজার মজার যন্ত্র আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মিউজিক বক্স, বেলুন, অডিও জ্যাক, ক্রোকোডাইল ক্লিপ, এল ডি আর (LDR), হুইসেল, লেজার মডিউল, সাউন্ড মডিউল, মিউজিক্যাল মডিউল, ডটবার মডিউল, সাউন্ড জেনারেটর, রিং ম্যাগনেট, চিয়ারিং স্টিক, ছোট্ট আয়না, রাবার পাইপ,বাঁশি, স্লিংকি, স্টেথোস্কোপ হেডসহ আরো কিছু জিনিষ। এছাড়াও প্রয়োজন হতে পারে সিরিঞ্জ, প্লেট, চামচ, প্লাস্টিক পাইপ, হেডফোন বা ইয়ারফোন, চাল, টিস্যু রোল ইত্যাদি।
কী কী করা যায় এগুলো দিয়ে
বেলুনের ভিতরে ত্রিভুজ- চতুর্ভুজ- পঞ্চভুজ বা এমন ধরণের ছোট বস্তুকে ঢুকিয়ে বেলুনের মজার চিৎকার বের করা, কাগজের কাপ ও ভেজা সুতা দিয়ে মুরগীর ডাক বের করা, মিউজিক বক্স দিয়ে চমৎকার শব্দ তৈরি করা, বক্সে দেয়া কাগজের কাপ দিয়ে টেলিফোন বানানো, সাউন্ড হোস দিয়ে মজার শব্দ তৈরি করা, বাঁশি ও স্লিংকি দিয়ে স্থির তরঙ্গ সম্পর্কে জানা, সাউন্ড জেনারেটর মডিউল দিয়ে কম্পাংক পরিবর্তনের ফলাফল বের করা, কাগজের কাপ, তারের কুণ্ডলী, ব্যাটারি ও মিউজিক্যাল মডিউল দিয়ে স্পিকার বানানো, ডট বার মডিউল দিয়ে শব্দের তীব্রতা মাপা সহ বিজ্ঞানবাক্সে আছে সর্বমোট ১৭ টি এক্সপেরিমেন্ট ও ৫০ টিরও বেশী এক্টিভিটি।
আলোর ঝলক
কেন আলোর ঝলক বিজ্ঞানবাক্সটি তৈরি হয়েছে?
আগে সোহমের গল্প শুনুন! ক্লাশ ওয়ানে পড়া সোহম এখনই আলোর প্রতিফলনের সূত্র ভালোভাবে বুঝে গেছে পেরিস্কোপের এক্সপেরিমেন্ট করে। তার ভাবনার জগৎটা কতখানি সমৃদ্ধ হলো ভেবে দেখেছেন?
শিশুদের ভাবনার জগৎটা রঙিন হওয়া দরকার। আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরণ, বিচ্ছুরণের মত কঠিন কঠিন তত্ত্বগুলো যে আসলে খুব মজার বিষয়, এ কথাটি যখন একটি শিশু জানতে পারবে তার নিশ্চয়ই আনন্দের সীমা থাকবে না! এই যে সোহম শিখে গেছে পেরিস্কোপের আয়নাগুলো ৪৫ ডিগ্রি কোণে মুখোমুখি বসালে যে দৃশ্যসীমার বাইরের বস্তু দেখা যায়, বড় হলে সে তো ফিজিক্স বইয়ের আলোর অধ্যায়টি হাসতে হাসতে শিখে যাবে।
নিউটনের বর্ণ চাকতির এক্সপেরিমেন্ট করে জেনে গেছে মৌলিক রঙ কাকে বলে, কীভাবে এক রঙের সাথে আরেক রঙ মিশিয়ে নতুন রঙ তৈরি করা যায়। বিজ্ঞান শিক্ষা তাঁর কাছে এখন সহজ আর আনন্দময়!
কী কী আছে আলোর ঝলকে?
ছিদ্রযুক্ত কাগজ, মোমবাতি, কার্ডবোর্ড, পিনহোল ক্যামেরা বক্স, বাউন্সিং বল, আয়না, পেরিস্কোপ বক্স, ক্যালাইডোস্কোপ বক্স, ফ্ল্যাশ লাইট, স্ট্রোবোস্কোপ, মোটর, উত্তল লেন্স, ব্যাটারি এবং কেসিং, বর্ণ চাকতি এবং মজার চশমা। এছাড়াও সংগ্রহ করে নিতে হবে রঙিন কাপ, গ্লাস, বাটি, প্লাস্টিক বোতল, পেন্সিল ইত্যাদি।
কী কী করা যায় এগুলো দিয়ে?
আলোর বিভিন্ন তত্ত্ব, যেমন প্রতিফলন, প্রতিসরণ ইত্যাদি সূত্র ব্যবহার করে মোট ২৫টি এক্সপেরিমেন্ট করা যায়। যেমন, আগুন ছাড়াই কাগজ জ্বালানো, অদৃশ্য কয়েন আবিষ্কার করা, আয়না দিয়ে রংধনু তৈরি করা, পেরিস্কোপের সাহায্যে দৃষ্টিসীমার বাইরের দৃশ্য দেখা, ক্যালাইডোস্কোপের বর্ণিল জগতে ঢুকে পড়া, আলোকে বলের মত বাউন্স দেয়া, স্ট্রোবোস্কোপ দিয়ে দুনিয়া দেখা, লেজার লাইট দিয়ে তরল আলো তৈরি করা, জাল টাকা ধরা ইত্যাদি!
ক্যালাইডোস্কোপ, পেরিস্কোপ, স্ট্রোবোস্কোপ এসব অদ্ভুত জিনিস কোথায় পাবে? কোথায় আবার! আলোর ঝলকে! দেখে নাও আলোর ঝলকের উপকরণগুলি।
বিশেষ ছাড়ে বিজ্ঞানবাক্সের সেট কিনতে চলে যাও এই লিংকে!
এই লেখাটির অডিওবুকটি পড়েছে লুবাবা জারিন অহনা।
আপনার কমেন্ট লিখুন