“Is this the real life? Is this just fantasy?”
বাস্তবতা আর কল্পনার এই দোটানায় আমরা সবাই ধরাশায়ী।
আমরা আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখি, কল্পনয়ায় সেই স্বপ্ন আকাশ চিরে আরও বড় হয়।
কিন্তু আমরা শেষমেশ ধরাশায়ী হই রুঢ় বাস্তবের কাছে-
“Caught in a landslide, no escape from reality”
সত্যিই তাই। কল্পনায় আর কতক্ষণই বা আকাশ চেরা যায় ? জীবনের অপ্রিয় বাস্তবতায় আমাদের ফিরে আসতে হবেই। সেই রুঢ় বাস্তবতার সাথে লড়ে স্বপ্ন দেখতে হবে, সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সব পিছুটান উপেক্ষা করে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তবেই না আমাদের স্বপ্ন বাস্তবতায় রং ছড়াবে, আমাদের সীমাবদ্ধতার আকাশ চিরে ফেলবে!
আজকের লেখাটি এমন একজন মানুষকে নিয়ে যিনি বাস্তবতা আর কল্পনার মধ্যকার বিভেদটিকে তাঁর আত্মবিশ্বাস এবং ঐশ্বরিক পারফর্মেন্স দিয়ে উপড়ে ফেলতে পেরেছিলেন।
কীভাবে পারলেন?
তিনি নিজেই তো উত্তরটি বলে দিয়েছেন-
“I always knew I was a star, and now the rest of the world seems to agree with me.”
এমন ভয়ানক রকমের অনবদ্য আত্মবিশ্বাস যার আছে, তাঁকে তো আর কোনো বাধাই আটকে রাখতে পারার কথা না।
হ্যাঁ, সত্যি। রক সঙ্গীতের কালজয়ী প্রতিভা ফ্রেডি মারকারিকে কেউই রুখতে পারেনি। তিনি দেখিয়েছেন আত্মবিশ্বাস আর মন ভোলানো পারফর্মেন্স দিয়ে কিভাবে যুগের পর যুগ সঙ্গীতপ্রিয় মানুষের মনের খোরাক হয়ে থাকতে হয় !
এই দিগ্বিজয়ী গায়কের কল্পনাতীত জীবনের নানা চরাই উৎরাই আপনার আত্মবিশ্বাসকে কয়েকশ গুণে বাড়িয়ে দেবে!
জাঞ্জিবারের ফারুখ বুলসারা:
ছবি: www.history101.com
তানজানিয়ার জাঞ্জিবার দ্বীপমালায় ১৯৪৬ সালে সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখে বমি বুলসারা এবং জার বুলসারা দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় ফারুখ বুলসারা। তাঁরা ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার বোম্বে প্রদেশের অধীনে গুজরাটের পার্সি অধিবাসী। বাবা বমি বুলসারা ছিলেন ক্যাশিয়ার এবং বদলির জন্য তাঁদেরকে জাঞ্জিবারে পাড়ি জমাতে হয়।
এই ফারুখ বুলসারাই কিন্তু আমাদের দুনিয়া কাঁপানো ফ্রেডি মারকারি!
দ্যা হেক্টিকস এবং ফ্রেডি:
ফারুখ বুলসারা তাঁর শৈশবের অধিকাংশ সময় ইন্ডিয়াতেই কাটান। তিনি ছিলেন মূলত ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত পার্সি। সাত বছর বয়সেই ফারুখ বুলসারা পিয়ানো শেখা শুরু করেন এবং ১৯৫৪ সালে আট বছর বয়সে তাঁকে বোম্বের কাছাকাছি সেন্ট পিটার’স স্কুলে পাঠানো হয়। মিউজিকের প্রতি প্রবল আগ্রহ তাঁর ছেলেবেলা থেকেই। সেই আগ্রহ আর উদ্যম থেকেই মাত্র বারো বছর বয়সে বন্ধুরা মিলে তৈরি করে ফেললেন স্কুল ব্য়ান্ড “দ্যা হেক্টিকস”। এই দলটি ওয়েস্টার্ন পপ মিউজিক কভার করত। সাড়া স্কুল জুড়ে ব্যান্ডটির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এবং ফারুখ বুলসারা তাঁর প্রথম নামটিও পেয়ে যান। সবাই তাঁকে “ফ্রেডি” বলে ডাকতে শুরু করে!
প্রতিভাবান ফ্রেডি:
টেলিগ্রাফ পত্রিকায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্রেডির মা জার বুলসারা বলেন,
“Right from the start, Freddie was musical. He had it on his mind all the time.”
ছবি: tumblr
মিউজিক্যাল এই মানুষটি ওয়েস্টার্ন পপ মিউজিকই বেশি শুনতেন এবং রেডিওতে যেই মিউজিক শুনতেন, পিয়ানোতে নিমিষেই সেটি তুলে ফেলতে পারতেন!
জাঞ্জিবার থেকে ইংল্যান্ড:
১৯৬৩ সালে ফ্রেডি জাঞ্জিবারে বাবা মায়ের কাছে ফিরে যান। ঠিক তখনই ঘটে বিপত্তি। ১৯৬৪ সালে জাঞ্জিবারের বিদ্রোহ থেকে বাঁচার জন্য তাঁরা জাঞ্জিবার থেকে পালিয়ে চলে আসেন ইংল্যান্ডের মিডলসেক্সের ছোট্ট একটি ফ্ল্যাটে। ফ্রেডির বয়স তখন সতেরো। এরপর ফ্রেডি ইলিং আর্ট স্কুল থেকে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর উপর ডিপ্লোমা শেষ করেন। আগেই বলে রাখি গায়ক ফ্রেডি মারকারি একজন তুখোড় ছবি আঁকিয়ে ছিলেন!
ছবি: Pinterest
ছবি: Lost At E Minor
ছবি: Pinterest
উপরের ছবিগুলো কিন্তু কিংবদন্তী ফ্রেডির আঁকা!
এবার ব্যবসায়ী ফ্রেডি:
পড়ালেখার অধ্যায় শেষ করার পরে ব্যবসায় নেমেছিলেন ফ্রেডি!
প্রেমিকা মেরি অস্টিনের সাথে কেন্সিংটন মার্কেটে পুরনো কাপড়ের ব্যবসা করতেন তিনি। ব্যবসার পাশাপাশি অনেকগুলো ব্যান্ড টিমের সাথেই কাজ করার চেষ্টা করেছিলেন। লিভারপুলের ব্যান্ড আইবেক্স এ যোগ দিয়েছিলেন তিনি কিন্তু দলটি দুর্ভাগ্যবশত ভেঙে যায়। এরপরে “সোর মিল্ক সি” নামক একটি ব্যান্ডে যোগ দিলে ১৯৭০ সালের আগে সেই ব্যান্ডটিও ভেঙে যায়।
ছবি: Pinterest
ছবি: catawiki
ফ্রেডির চলার পথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় পুরো সময়ই পাশে ছিলেন মেরি অস্টিন।
তাঁর বিখ্যাত “The love of my life” গানটি মেরি অস্টিনের জন্যই লেখা।
কুইন: স্বপ্নের শুরু যেখানে
নিজের উপর অগাধ আত্মবিশ্বাস সব সময়ই ছিল ফ্রেডির এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, একদিন অনেক বড় মিউজিশিয়ান তিনি হয়েই ছাড়বেন! সেটির জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করা লাগলো না তাঁর।
১৯৭০ এর কিছুটা আগে “স্মাইল” নামের একটি ব্যান্ডের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয় এবং ব্যান্ডটির পারফর্মেন্সে মুগ্ধ হয়ে যান ফ্রেডি মারকারি। মনে মনে ভাবলেন “এতদিন তো একেই খুঁজছিলাম!” ১৯৭০ সালে কপাল খুলে যায় ফ্রেডির। স্মাইল ব্যান্ডের লিড ভোকাল ব্যান্ড ছেড়ে দিলে সেই জায়গায় সুযোগ পান ফ্রেডি। “স্মাইল” ব্যান্ডের গিটারিস্ট ব্রায়ান মে এবং ড্রামার রজার টেইলরের সাথে পিয়ানিস্ট এবং ভোকাল ফ্রেডি- তিনজন মিলে তৈরি করে ফেললেন একটি ব্যান্ড যার নতুন নাম দিলেন ফ্রেডি নিজেই।
ছবি: Amazon UK
ফ্রেডি নতুন এই দলটির নাম দিলেন “কুইন” । দলটির একটি লোগোও বানিয়ে ফেললেন গ্রাফিক্স ডিজাইনার ফ্রেডি!
আর এর সাথেই শুরু হোল ফ্রেডি আর রক ব্যান্ড কুইনের কালজয়ী পথচলা। তার সাথে মিউজিক পেলো অন্য এক ডাইমেনশন!
দ্যা কিং অফ কুইন:
ছবি: Mic
“I’m not going to be a pop star. I’m going to be a legend!”
নিজের কথার মর্মটা বেশ ভালোভাবেই বুঝিয়ে গেছেন তিনি !
রক ব্যান্ড কুইনের এই অবসংবাদী কিং ইতোমধ্যে তাঁর স্টেজ পারফর্মেন্সে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। দর্শকসারি তাঁর দরাজ গলার স্বর আর অবিশ্বাস্য রকমের চোখ ধাঁধানো সব কারিশমাটিক পারফর্মেন্সে মন্ত্রমুগ্ধ। ফ্রেডির সবচেয়ে মনভোলানো ব্যাপারটি ছিল তিনি অগণিত দর্শক শ্রোতা সাথে তাঁর গানের মাধ্যমে একেবারে আত্মিকভাবে মিশে যেতে পারতেন যেটি খুব কঠিন একটি ব্যাপার। আর তাঁর নজরকাড়া সব কস্টিউম তাঁর প্রতিটি পারফর্মেন্সকে আরও বেশি প্রাণবন্ত করে তুলত। ফ্রেডির এই অসাধারণ পারফর্মেন্স রক ব্যান্ড কুইনকে নিয়ে যেতে লাগলো অন্য উচ্চতায়।
এবার ফ্রেডি মারকারি:
কুইন ব্যান্ডের এমন উত্থানের পর্যায় এসে নিজের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন ফ্রেডি। তাঁর মতে ফারুখ বুলসারা নামটি রক ব্যান্ডের ভোকালের সাথে ঠিক মানায় না। স্কুলমেটদের দেয়া ফ্রেডি নামটি তাঁর খুব পছন্দের। কিন্তু তাঁর নামের পরের অংশটি কী হতে পারে?
রোমান দেবতা মারকারির নাম অনুসারে নিজের নামের পরের অংশ নিজেই রাখলেন মারকারি।
আর এভাবেই ফারুখ বুলসারা হয়ে গেলেন ফ্রেডি মারকারি!
মারকারি দেবতা ঈশ্বরের বার্তাবাহক ছিলেন। আর ফ্রেডি মারকারিকে যদি স্বর্গীয় সব সুরের বাহক বলা হয় তাহলে ব্যাপারটি একদম ভুল হবে না।
ছবি: todaynews.pro
ছবি: Wikipedia
প্রথম এ্যালবাম ফ্লপ:
কুইন ব্যান্ড এর প্রথম এ্যালবামের নাম “কুইন”। ১৯৭৩ সালে এ্যালবামটি বাজারে আসার পর খুব বেশি একটা সাড়া ফেলতে পারেনি কেননা নতুন এই রক ব্যান্ডকে সবাই কেবলমাত্র চিনতে শুরু করেছে।
ছবি: Wikipedia
দ্বিতীয় এ্যালবাম, এবার হিট:
কুইন ব্যান্ডের দ্বিতীয় এ্যালবাম “কুইন 2” দিয়ে এবার বাজিমাত করলো কুইন।
এই এ্যালবামটি সাড়া পাবার পরেই কুইন ব্যান্ডটি বিভিন্ন টিভি শো তে ডাক পেতে থাকল এবং বিস্ময়কর ফ্রেডি মারকারিকে চিনতে থাকলো গোটা পৃথিবী।
শিয়ার হার্ট অ্যাটাক আর কিলার কুইন:
ছবি: Wikipedia
“Sheer Heart Attack” কুইন ব্যান্ডের থার্ড স্টুডিও এ্যালবাম এবং এই এ্যালবামের ফ্রেডি মারকারির লেখা সুপার হিট গান “Killer Queen” ইউকে টপ চার্টে ২ নম্বর জায়গাটি দখল করে।
কিন্তু এতসব হিট গানের পরেও কুইন ব্যান্ডের সদস্যরা খুব বেশি একটা আয় করতে পারছিলেন না। উল্টো আরও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন। ফ্রেডি এর কারণটা খুঁজে বের করতে পারলেন। তাঁরা যেই ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে কুইন ব্যান্ডের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেই কোম্পানি লাভের অংশ ভাগাভাগি না করে নিজেদের পকেট ভারী করতেই মহা ব্যস্ত ছিল!
এমন অসৎ ব্যান্ড ম্যানেজার ফায়ার করে ফ্রেডি মারকারি হায়ার করলেন নতুন এক ম্যানেজার। কিন্তু এবার আর যেনতেন কোনো ম্যানেজার নয়। তাঁরা হায়ার করলেন আরেক বিখ্যাত মিউজিশিয়ান এল্টন জনের ম্যানেজার জন রেইডকে!
ছবি: CD and LP
বোহেমিয়ান র্যাপসডি:
“অ্যা নাইট অ্যাট দ্যা অপেরা” (A night at the opera) কুইন ব্যান্ডের চতুর্থ স্টুডিও অ্যালবাম। এই অ্যালবামের সফলতার উপর কুইন ব্যান্ডের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছিল।
অ্যালবামটির অন্যতম একটি গান ছিল বোহেমিয়ান র্যাপসডি (Bohemian Rhapsody)। আর এই গানটি নিয়ে রয়েছে মজার এক কাহিনী।
কুইন ব্যান্ড “বোহেমিয়ান র্যাপসডি” গানটির কাজ শেষ করলে ব্যান্ড ম্যানেজার জন রেইড তখনকার বিখ্যাত মিউজিশিয়ান এল্টন জনকে গানটি শোনার অনুরোধ করেন। গানের লিরিক নিয়ে এল্টন জনের কোনো আপত্তি ছিল না কিন্তু তখনকার দিনে কোনো গান ৬ মিনিট দীর্ঘ হওয়া মানে শেষমেশ গানটি কেউই শুনবে না। আর গানটি ৬ মিনিটের তো ছিলই না বরং আরও ৬ মিনিটের কিছু সময় বেশি ছিল। আর এই বিষয়টিতেই ঘোর আপত্তি করে বসলেন এল্টন জন। তিনি কুইনের সদস্যদের বারবার বললেন যে গানের রক বালাডের অংশটুকুকে কেটে গানটি ছোট করতে।
কিন্তু ফ্রেডি মারকারি ছিলেন নাছোড়বান্দা! তিনি গানটি নিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত এবং ব্যান্ডের সিদ্ধান্তেই অটল থাকলেন এবং জানিয়ে দিলেন যে তাঁরা গানটিতে চুল পরিমাণ পরিবর্তন করতেও রাজি নন।পরবর্তী কাহিনী প্রায় সবারই জানা। বালাড, অপেরা, হার্ড রকের মতো অসাধারণ সব মিউজিকের সমন্বয় ঘটিয়ে ফ্রেডি মারকারির তৈরি করা “বোহেমিয়ান র্যাপসডি” মিউজিকের ইতিহাসে অন্যতম সেরা কম্পোজিশনগুলোর একটি এবং অনেক সময় একে মিউজিক কম্পোজিশনের দুনিয়ায় আদর্শ হিসেবেও মানা হয়।
গানটি ইউকে মিউজিক চার্টে নয় সপ্তাহ ধরে এক নম্বর পজিশনে ছিল যেটি তখনকার দিনের বিশ্ব রেকর্ড!
gif: Gfycat
এই অসাধারণ গানটি শুনতে হলে যেতে হবে এই লিঙ্কটিতে:
লিঙ্কঃ https://youtu.be/fJ9rUzIMcZQ
সারা বিশ্বে কুইন:
“অ্যা নাইট অ্যাট দ্যা অপেরা” অ্যালবামটি বাজারে আসার পরেই পুরো বিশ্বে ব্যাপক সাড়া পায় কুইন। এরপরে ব্যান্ডটির আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আশির দশকে প্রায় প্রতিটি ঘরেই পৌঁছে যায় কুইনের নাম। ফ্রেডি আর তাঁর সহকর্মীদের সুনিপুণ পারফর্মেন্সে মুগ্ধ হতে থাকে পুরো পৃথিবী।
একবার সুদূর সাউথ আমেরিকা থেকে কন্সার্টের জন্য নিমন্ত্রণ পেলে তাঁরা ভড়কে যান। কিন্তু ভয়কে জয় করে তাঁরা কন্সার্টের জন্য সাউথ আমেরিকার বুয়েন্স আয়ারসে পাড়ি জমান এবং স্টেডিয়ামের প্রায় এক লাখ দর্শক তাঁদের রুদ্ধশ্বাস পারফর্মেন্সে হতবাক হয়। আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল মাতিয়ে আসার পর কুইন কানাডার মনট্রিলসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের পারফর্মেন্স দিয়ে সবার মন জয় করে নেন।
ছবি: www.history101.com
শেষের শুরু:
ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের লাইভ এইড কন্সার্টে কুইন তাঁদের বেস্ট পারফর্মেন্স উপহার দেয়ার পরপরই অসুস্থ বোধ করতে লাগলেন ফ্রেডি। ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা গেল ফ্রেডি মারকারি একজন এইচ্ আই ভি পজিটিভ। সালটা তখন ১৯৮৭। কুইনের জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে। ফ্রেডির এমন আকস্মিক রোগে তাঁর অন্য সব সহকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়লেন। আগের মতো প্রাণোচ্ছল আর দুর্বার ফ্রেডিকে তেমনভাবে আর খুঁজে পাওয়া গেল না।তাঁর স্বাস্থ্যও ধীরে ধীরে আরও খারাপের দিকে যেতে লাগলো। অবশেষে মাদার লাভ কিংবা এর মতো আরও অনেকগুলো গান শেষ করার আশা ছেড়ে দেন ফ্রেডি।
ছবি: YouTube
বিদায় কিংবদন্তী ফ্রেডি:
১৯৯১ সালের ২৪শে নভেম্বর মাত্র ৪৫ বছর বয়সে প্রিয় ভক্তদের অবাক করে দিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন ফ্রেডি। মৃত্যুর মাত্র একদিন আগে ভক্তদের কাছে এইডস এর ব্যাপারটি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি।
তাঁর জমানো সব কিছুই তিনি মেরি অস্টিন আর তাঁর প্রিয় পোষা বিড়ালগুলোর কাছে রেখে যান। আর তাঁর ভক্তদের কাছে রেখে যান এক অবিনশ্বর গায়কী সত্ত্বা।
ছবি: www.history101.com
জীবনের নানা অধ্যায়ে ফ্রেডি মারকারি দেখিয়েছেন কিভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে মানুষের আত্মার সাথে মিশে গিয়ে তাঁদের ভুলিয়ে রাখতে হয়, সুরের মোহের মায়ায় আবদ্ধ করে রাখতে হয়।
জীবনের প্রতিটি অধ্যায় একেকটা লাইভ পারফর্মেন্স। আর আপনি সেই পারফর্মেন্সের কিং। ফ্রেডির মতো জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে আপনাকে মনে রাখতে হবে-
“The show must go on!”
আর তাহলেই কুইনের সাথে, ফ্রেডির সাথে আপনিও গাইতে পারবেন –
“We are the champions, my friends
And we’ll keep on fighting ’til the end
We are the champions
We are the champions
No time for losers
‘Cause we are the champions of the world”
১০ মিনিট স্কুলের ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: write@10minuteschool.com
আপনার কমেন্ট লিখুন